সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দুষ্কৃতীদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হতে হয়েছে। দলের কাজে বেরিয়ে হালিশহরের বিজেপি (BJP) বুথ সভাপতি সৈকত ভাওয়ালের এমন মর্মান্তিক পরিণতিতে দু’দণ্ড স্থির হতে পারছেন না পরিবারের সদস্য, প্রতিবেশীরা কেউই। শোকস্তব্ধ পাড়াতেও যেন ক্ষোভের আঁচ। খুনিদের কঠোরতম শাস্তি চাই। যতক্ষণ না তা হয়, ততক্ষণ ক্ষোভের আঁচ নিভবে না। এই দাবিতে সোমবার সৈকতের পাড়ায় কারও বাড়িতে হাঁড়ি চড়ল না। একজোট হয়ে প্রতিবেশীরা আজ অরন্ধন পালন করলেন। এদিন পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের হাতে ৫ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব।
আসলে বিজেপি বুথ সভাপতি হওয়ার আগে সৈকত তো আসলে পাড়ার ছেলে। পরোপকারী হিসেবেই নামডাক ছিল বছর পঁয়ত্রিশের এই যুবকের। যে কোনও বিপদ দেখলে নিজের নিরাপত্তার তোয়াক্কা না করে ঝাঁপিয়ে পড়তেন। তাঁকেই কি না এভাবে প্রাণ খোয়াতে হল! এটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না প্রতিবেশীরা। শনিবার সন্ধেবেলা বিজেপির কর্মসূচি ‘গৃহ সম্পর্ক অভিযানে’ বেরিয়ে দুষ্কৃতীদের বাঁশ, রড, হকিস্টিকের উপর্যুপরি আঘাতে খুন হন সৈকত। অভিযোগ ওঠে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই তাঁকে খুন করেছে।
[আরও পড়ুন: ‘অ-রাজনৈতিক’ অনুষ্ঠান মঞ্চে শুভেন্দুর পাশে মুখ্যমন্ত্রীর ‘প্রিয়’ ত্রিদিব, জল্পনা তুঙ্গে]
এ নিয়ে হালিশহরে (Halisahar) রাজনৈতিক চাপানউতোর তুঙ্গে ওঠে। অর্জুন সিং, মুকুল রায়রা বাংলায় তৃণমূলের শাসনকালে গণতন্ত্র নেই বলে অভিযোগে সোচ্চার হন। পালটা শাসকদলের তরফে ফিরহাদ হাকিম অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, এতে তৃণমূল কোনওভাবেই জড়িত নয়। রবিবার খুনের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বারাকপুর আদালত তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। এতেও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং।
[আরও পড়ুন: বেপরোয়া বাইকের রেষারেষির জের, পুরুলিয়ায় গতির বলি ৪]
এসবের পর সোমবার সৈকতের বাড়িতে যান বীজপুরের বিধায়ক তথা মুকুলপুত্র শুভ্রাংশু রায়, ভাটপাড়া বিধায়ক তথা অর্জুনপুত্র পবন সিং এবং নোয়াপাড়ার বিধায়ক সুনীল সিং। তাঁরা পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। আর্থিক সাহায্য হিসেবে ৫ লক্ষ টাকা চেকও তুলে দেন। কিন্তু এতে ক্ষোভের আঁচ এতটুকুও নেভেনি। কান্নাভেজা গলাতেই প্রতিবেশীরা বলছেন, তাঁদের পাড়ার এমন পরোপকারী ছেলেটাকে যারা এমন নৃশংসভাবে খুন করেছে, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হোক। তাহলেই শোক খানিকটা সামলানো সম্ভব। সৈকতের জন্য মনখারাপ সকলের। এদিন পাড়ার কোনও বাড়িতে তাই হাঁড়ি চড়েনি। অভুক্ত থেকেই দিন কাটাচ্ছেন সকলে। বলছেন, এখন নাওয়াখাওয়ার ইচ্ছেটাই আর নেই তাঁদের।