সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ধর্মীয় অবমাননার ঘটনায় উত্তপ্ত পাঞ্জাব (Punjab)। ইতিমধ্যে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে পিটিয়ে মারা হয়েছে সে রাজ্যে। এবার এই বিষয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করলেন পাঞ্জাব প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি নভজ্যোৎ সিং সিধু (Navjot Singh Sidhu)। একটি জনসভায় সিধু মন্তব্য করেন, যারা ধর্মের অবমাননা করে তাদের প্রকাশ্যে ফাঁসিতে ঝোলানো হোক।
শনিবার অমৃতসরের স্বর্ণমন্দির (Golden Temple) অপবিত্র করার চেষ্টার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। গণপিটুনিতে প্রাণ গিয়েছিল এক ব্যক্তির। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই রবিবার রাজ্যের কাপুরথালায় (Kapurthala) ঘটে একই রকমের ঘটনা। অভিযোগ, নিজামপুর গ্রামের এক গুরুদ্বারে রবিবার কাকভোরে নিশান সাহিবের অবমাননা করতে দেখা যায় জনৈক ব্যক্তিকে। এরপরই স্থানীয় জনতার হাতে গণপিটুনিতে মৃত্যু হয় অভিযুক্তর। সেই ঘটনার ভিডিও-ও ভাইরাল হয়। এর মধ্যেই এই বিষয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে পাঞ্জাবের উত্তাপ বাড়িয়ে দিলেন সিধু।
[আরও পড়ুন: পাঞ্জাবে ফের নিশান সাহিবকে অবমাননার অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য! গণপিটুনিতে মৃত্যু অভিযুক্তর]
রবিবার মালেরকোটলার একটি জনসভায় পাঞ্জাব কংগ্রেসের প্রধান বলেন, ধর্মের অবমাননা করে অসংখ্য মানুষের ভাবাবেগে আঘাত করা হয়েছে। এমন অপরাধীদের প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়া উচিত। সিধুর ভাষায়, “একটি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।” মৌলবাদীরা পাঞ্জাবের শান্তিভঙ্গ করতে চাইছে।
এমনিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা ধর্মীয় অবমাননার তীব্র নিন্দা করেছেন। তবে সকলেই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে সাম্প্রতিক ঘটনায় সাবধানে মন্তব্য করছেন। এই সঙ্গে সকলেই গণপ্রহারের বিষয়টি সযত্নে এড়িয়ে গিয়েছেন। সিধু সেই রাখঢাক রাখলেন না। বরং আগুনে ঘি ঢালার কাজ করলেন কিনা তা নিয়ে সন্দিহান অনেকেই।
[আরও পড়ুন: আন্দোলনের মাটি ছেড়ে রাজনীতির ময়দানে, পাঞ্জাব ভোটের আগে নতুন দল গড়লেন কৃষক নেতা]
এদিকে রবিবার স্বর্ণমন্দিরে যান পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নী (CM Charanjit Singh Channi)। পরিদর্শন করেন ঘটনাস্থল। ধর্মীয় অবমাননার ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন তিনি। পরে টুইটে ওই ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের কথাও জানান। রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই বিষয়টি অন্যতম ইস্যু হয়ে উঠতে চলেছে।
উল্লেখ্য, ঘটনার শুরু শনিবার। সেদিন উত্তেজনা ছড়ায় স্বর্ণমন্দিরে। জানা গিয়েছে, মন্দিরের গর্ভগৃহে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলছিল। সরাসরি সম্প্রচারও করা হচ্ছিল অনুষ্ঠানটি। সেখানে রীতিমাফিক শিখদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ ও ধর্মীয় সামগ্রী রাখা ছিল। আচমকাই দেখা যায়, এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি ব্যারিকেড টপকে সংরক্ষিত এলাকার মধ্যে ঢুকে পড়ে। ধর্মীয় গ্রন্থের উপর পা রেখে দেয় সে। এই কাণ্ড দেখে ক্ষিপ্ত জনতা সঙ্গে সঙ্গে তাকে টেনে বের করে আনে। শুরু হয় বেধড়ক মারধর। গণপিটুনিতে শেষমেশ মৃত্যু হয় তাঁর।