সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অতিরিক্ত চাপ গলার কাছে হয়তো দলা পাকিয়ে ছিল, চণ্ডীগড়ের ছিপছিপে চেহারার মেয়েটির বুকের ভিতরে ঝড় উঠেছিল বোধ হয়। কিন্ত যাবতীয় উৎকণ্ঠা, টেনশনের বহিঃপ্রকাশ ঘটানো যাবে না। কারণ, বিশ্ব মঞ্চে দেশের প্রতিনিধি একমাত্র তিনিই। তাই ইজরায়েলে মিস ইউনিভার্সের মঞ্চে হরনাজ সান্ধু তুলে ধরলেন এক আত্মবিশ্বাসের কাহিনি। যে আত্মবিশ্বাসে বলিয়ান হয়ে ২১ বছর পর ফের দেশের পতাকা উড়িয়ে দিয়েছে বিদেশের মাটিতে। বিশ্বমুকুট মাথায় নিয়ে হরনাজ ভোলেননি মাটির সংস্কৃতিকে। তাই তো , মুকুট মাথায় হরনাজ চিৎকার করে উঠলেন, ‘চক দে ফট্টে ইন্ডিয়া!’ চোখের কোণে খুশির জল নিয়ে, মন খোলা হাসিতে গোটা দুনিয়ার মন জয় করে ফেললেন ভারতের সুন্দরী। প্রমাণ দিলেন, ফাইনাল রাউন্ডে চোখা প্রশ্নের মোকাবিলা করতে তিনি কম যান না। তিনিই কি জানতেন, তাঁর এই শেষ প্রশ্নের জবাবই ছিনিয়ে নিয়ে আসবে বিশ্ব সুন্দরীর মুকুট? তাঁর স্বতঃস্ফূর্ত জবাব নিয়ে কাটাছেঁড়া হবে সোশ্যাল মিডিয়ায়! দেশের শ্বাস প্রশ্বাসে এখন শুধুই হরনাজ।
মিস ইউনিভার্স সুন্দরী প্রতিযোগিতার এতদিনের ইতিহাস বলছে, এই ফাইনাল রাউন্ডের প্রশ্নই খেতাব জেতার তুরুপের তাস। অন্য রাউন্ডে অল্প স্বল্প নাম্বার উঠলেও, অন্তিম প্রশ্নের উত্তরে কামাল দেখিয়ে খেতাব জিতে নিয়েছেন অনেকেই। ১৯৯৪ সালে সুস্মিতা সেন, ২০০০ সালে লারা দত্ত। এই দুই সুন্দরীও শেষ রাউন্ডে এসেই বাজিমাত করেছিলেন। আর ২১ বছর পরও হরনাজ শেষ ল্যাপে এসে ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে যান। শেষ প্রশ্নের জবাব তাঁকে বসিয়ে দেয় সুস্মিতা-লারাদের সঙ্গে একই আসনে।
[আরও পড়ুন: ‘প্রেম আমার অক্সিজেন!’, ফের কাউকে মন দিলেন বাংলাদেশের পরীমণি? ]
হরনাজের উত্তর মনে করিয়ে দেয় সুস্মিতা ও লারাকে। ১৯৯৪ সালে সুস্মিতাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, ‘আপনার কাছে নারীত্বের সংজ্ঞা কী? সুস্মিতা জানিয়ে ছিলেন, ‘নারী হয়ে জন্মানোটা ভগবানের বিশেষ উপহার। নারী নতুন জীবনের জন্ম দেয়। সেই জীবনকে ধীরে ধীরে বড় করে তোলে। পুরুষকে শেখায় ভালবাসা, যত্নের অর্থ। এই সব নিয়েই তো নারী হয়ে ওঠা।’ ২০০০ সালে সুন্দরী প্রতিযোগিতার প্রতিবাদে ঝড় উঠেছিল গোটা দুনিয়ায়। অভিযোগ উঠেছিল, এই ধরনের প্রতিযোগিতা নারীদের পণ্য়ের চোখে দেখে। এই নিয়ে লারাকে প্রশ্ন করা হলে, লারা জানিয়ে ছিলেন,’আমার মনে হয় মিস ইউনিভার্সের মতো প্রতিযোগিতা মেয়েদের এমন একটা প্ল্যাটফর্ম দেয় যেখানে সে নিজেকে মেলে ধরতে পারে। নিজের কথা বলতে পারে। এই প্ল্যাটফর্ম তাঁকে শিখিয়ে দেয় স্বাধীনচেতা হতে, আত্মবিশ্বাসী হতে।’ এই তিন সুন্দরীর খেতাব জেতার নেপথ্য়ে রয়েছে আত্মবিশ্বাস, আত্মবিশ্বাস এবং আত্মবিশ্বাস।
হরনাজ হয়তো নিজেকে তৈরি করার সময় সুস্মিতা ও লারার কথা মন দিয়ে শুনেছিলেন। হয়তো তাঁদের থেকে আত্মবিশ্বাস ধার করেই ২১ বছর পর দেশে ফিরিয়ে এনেছেন মিস ইউনিভার্সের খেতাব। আর এবার হয়তো হরনাজকে দেখেই নিজেদের অনুশীলনকে আরও দৃঢ় করবেন আগামীর সুন্দরীরা।