সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘লিগ অফ নেশনস’-এর পথেই কি হাঁটছে রাষ্ট্রসংঘ? নাৎসি জার্মানির মতোই চিন ও রাশিয়ায় স্বৈরশাসকদের উত্থানই কি কফিনে শেষ পেরেক! ভারত সফরে এসে এই জল্পনাই উসকে দিলেন রাষ্ট্রসংঘের প্রধান অ্যান্তনিও গুতেরেস। তাঁর আক্ষেপ, “আমাদের কোনও ক্ষমতাই নেই।”
কেন এহেন আক্ষেপ গুতেরেসের? বুধবার, আইআইটি বোম্বেতে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব। ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে তৈরি হওয়া খাদ্যসংকট নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে আক্ষেপের সুরে তিনি বলেন, “আমি কোনওভাবেই ইউক্রেনে যুদ্ধ থামাতে পারব না। আমার মনে হয়, আমি যেটা করতে পারি তা হল রুশ, ইউক্রেনীয় ও আমেরিকানদের সঙ্গে কথা বলে শস্যের জোগান অব্যাহত রাখতে সমঝোতায় আসার আবেদন জানাতে পারি। এছাড়া, আমাদের কোনও ক্ষমতা নেই।”
[আরও পড়ুন: ভারত সফরে রাষ্ট্রসংঘ প্রধান, ২৬/১১ হামলায় নিহতদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন গুতেরেসের]
বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেন (Ukraine) যুদ্ধ নিয়ে খোদ দ্বিধাবিভক্ত রাষ্ট্রসংঘ। কারণ, ইউক্রেন যুদ্ধে একদিকে দাঁড়িয়েছে রাশিয়া ও চিন। নিরপেক্ষ অবস্থান নিলেও ভারতকে এই জোটেই ধরা যেতে পারে। অন্যদিকে রয়েছে– আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও ইউরোপের অন্যান্য দেশ। অর্থাৎ, রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের দেশগুলি; যাদের কাছে ভেটো পাওয়ার রয়েছে তারাই একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এহেন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রসংঘ কার্যত ‘নিধিরাম সর্দার’। যেভাবে, ‘লিগ অফ নেশনস’ জার্মানির সামরিকীকরণ ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থামাতে পারেনি। একইভাবে, ইউক্রেনে রুশ হামলাও ঠেকাতে পারেনি রাষ্ট্রসংঘ। ফলে সংস্থাটির অস্তিত্বের প্রয়োজনের সপক্ষে যুক্তি ক্রমশ দুর্বল হয়ে আসছে।
এদিকে, রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার নিয়েও এদিন সরব হয়েছে ভারত (India)। এদিন আইআইটি বোম্বের অনুষ্ঠানে গুতেরেসের সঙ্গে উপস্থিতি ছিলেন রাষ্ট্রসংঘে ভারতের প্রতিনিধি রুচির কম্বোজ। পরিষদে সদস্যপদের জোরাল দাবি তুলে তিনি বলেন, “গত দু’বছর ধরে আমরা বারবার বলছি নিরাপত্তা পরিষদে সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। ১৯৪৫ সাল থেকেই পরিষদের কাঠামো একই রয়েছে। এতে কারও কোনও কার্যসিদ্ধি হচ্ছে না।”