রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: ভিন্ন দল থেকে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের স্বাগত জানিয়ে বিজেপির কর্মপদ্ধতি শিখে নেওয়ার নির্দেশ দিলেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। মঙ্গলবার কলকাতায় আইসিসিআর অডিটোরিয়ামে বিজেপির সাংগঠনিক নির্বাচনের প্রশিক্ষণ ছিল। সেখানে শীর্ষ নেতৃত্বের সামনেই দিলীপবাবু জানান, “যাঁরা ভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে এসেছেন, বিজেপির কর্মপদ্ধতি তাঁদের শিখে নিতে হবে। তাঁদের অভিজ্ঞতাও আমাদের কাজে লাগাতে হবে।” সম্প্রতি তৃণমূল থেকে বিজেপিতে এসেছেন প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। তাঁর আগে একাধিক নেতা তৃণমূল থেকে দলবদল করেছেন। রাজনৈতিক মহলের মতে, তাঁদের প্রত্যেকের উদ্দেশে এদিন এই বার্তা দিলেন দিলীপবাবু৷ তিনি বলেন, “যে দল থেকেই আসুন না কেন, শিখতে হবে বিজেপির রীতিনীতি। দলের সাংগঠনিক কাজের পদ্ধতি।”
[ আরও পড়ুন: নারদ কাণ্ডে তৎপর সিবিআই, প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কেডি সিংকে তলব ]
অন্যদিকে দলের দুই লড়াকু মহিলা নেত্রীকে সহ-সভাপতি নির্বাচিত করল রাজ্য বিজেপি৷ অন্যতম সাধারণ সম্পাদক করা হল রথিন বোসকে। জানা গিয়েছে, নয়া সহ-সভাপতি করা হচ্ছে প্রাক্তন আইপিএস ভারতী ঘোষ এবং লোকসভা নির্বাচনে জঙ্গিপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তথা প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক মাফুজা খাতুনকে৷ সদস্যতা অভিযান নিয়েও মঙ্গলবার দলীয় কর্মীদের সতর্ক করে দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। বলেছেন, এখনও পর্যন্ত ৮০ লক্ষ ৩৫ হাজার সদস্য হয়েছে বিজেপির। কিন্তু সদস্য সংখ্যা ১ কোটিতে নিয়ে যেতে হবে। বিজেপি ২ কোটি ৩৫ লক্ষ ভোট পেয়েছে। সেই ভোটের সমান সদস্য তাদের নেই। তার ভিত্তিতেই পূরণ করতে হবে বিজেপির সদস্যতা অভিযান।
[ আরও পড়ুন: আয় তলানিতে, খরচে রাশ টানতে ফোন-গাড়ি বন্ধ সিপিএমের ]
আগামী ১১ সেপ্টেম্বর একেবারে বুথস্তর থেকে দলের সাংগঠনিক নির্বাচনপর্ব শুরু হচ্ছে। তার আগে আজ থেকে টানা পাঁচদিন সাংগঠনিক নির্বাচনের পাঠ দিতে দফায় দফায় বৈঠক করবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দিলীপবাবু বুঝিয়ে দেন, ভোটের মধ্যে দিয়ে নয়, সহমতের ভিত্তিতে নির্বাচন হবে। তবে সেই পর্বে দলের ভাবমূর্তি যাতে নষ্ট না হয়, তার জন্য শৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্য সভাপতি। স্পষ্টভাবে বিশৃঙ্খলা নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন তিনি। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, শিবপ্রকাশ, অরবিন্দ মেননের মতো রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা। ছিলেন মুকুল রায়, রাহুল সিনহা, সুব্রত চট্টোপাধ্যায়ের মতো রাজ্য নেতৃত্বও। দলের সাংসদ, বিধায়ক ও জেলা সভাপতিরাও উপস্থিত ছিলেন।
[ আরও পড়ুন: সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ, পা বাদ যেতে চলেছে যুবকের ]
অন্যদিকে বিজেপির নাম ভাঙিয়ে অনৈতিকভাবে গড়ে ওঠা ট্রেড ইউনিয়নগুলির বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে চলেছে গেরুয়া শিবির। রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ এসেছে যে, বিজেপির সমর্থন রয়েছে বলে দাবি করে কয়েকটি ট্রেড ইউনিয়ন অর্থ সংগ্রহ থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজকর্ম করছে। এই অভিযোগ আসার পর মোট সাতটি ট্রেড ইউনিয়নের সঙ্গে সোমবার বৈঠকে বসে বিজেপি নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, বৈঠকে ওই ইউনিয়নের নেতৃত্বকে জানিয়ে দেওয়া হবে বিজেপি এই ধরনের গজিয়ে ওঠা ইউনিয়নকে সমর্থন করে না। বিজেপি সমর্থিত কোনও ট্রেড ইউনিয়ন নেই। কয়েকটি ট্রেড ইউনিয়নকে বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশও দিতে পারে শীর্ষ নেতৃত্ব।
[ আরও পড়ুন: স্বামীকে নিয়ে আগেও মাকে খুনের চেষ্টা করে মেয়ে, পর্ণশ্রী হত্যায় নয়া তথ্য পুলিশের হাতে ]
সূত্রের খবর, একটি ট্রেড ইউনিয়ন করে সেটাকে আরএসএসের শ্রমিক সংগঠন বেঙ্গল মজদুর সংঘের সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হতে পারে। বাংলায় দলের প্রভাব যত বাড়ছে বিজেপিতে যোগদানের হিড়িকও বাড়ছে। সম্প্রতি আবার কয়েকটি ক্ষেত্রে বিজেপি সমর্থিত বলে দাবি করে একাধিক ট্রেড ইউনিয়ন গজিয়ে উঠেছে। সরকারিভাবে বিজেপি সমর্থিত বা প্রভাবিত কোনও ট্রেড ইউনিয়ন নেই। কাজেই হঠাৎ করে গজিয়ে ওঠা ওই সমস্ত সংগঠনগুলির ক্ষেত্রে কড়া মনোভাব নিতে চলেছেন দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, সাধারন সম্পাদক (সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায়।
The post ‘তৃণমূল থেকে এসে বিজেপির কর্মপদ্ধতি শিখতে হবে’, নির্দেশ দিলীপ ঘোষের appeared first on Sangbad Pratidin.