স্টাফ রিপোর্টার: জবরদস্তি ফুটপাত দখল করে কলকাতায় হকারি করা যাবে না। পথচারীদের সুবিধার্থে ফুটপাথের দুই-তৃতীয়াংশ ছেড়ে টাউন ভেন্ডিং কমিটির অনুমতি সাপেক্ষে হকিং-লাইসেন্স নিয়ে তবেই ব্যবসা করতে হবে। শুক্রবার কলকাতা আন্তর্জাতিক হকার দিবসের সভায় রাজ্য সরকার তথা পুরসভার ‘হকার-নীতি’ স্পষ্ট করে একথা জানিয়েছেন পুরমন্ত্রী তথা মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
কলকাতা নিউ মার্কেটে দোকানদার ও হকারদের বিবাদের কথা উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ‘‘দোকানদারদের ক্ষতি করে, দোকানে ঢোকার রাস্তা বন্ধ করে, অন্যের ব্যবসার ক্ষতি করে হকারি করাকে আমরা সমর্থন করি না। শুধু আমি বাঁচব না, অন্যকেও সমানভাবে বাঁচতে সহযোগিতা করতে হবে।’’ মেয়রের পরেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে টাউন ভেন্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান মেয়র পারিষদ ও বিধায়ক দেবাশিস কুমারও বলেন, ‘‘পথচারীদের সুবিধা দিতেই দুই-তৃতীয়াংশ ফুটপাথ না ছাড়লে, নিয়ম না মানলে মহানগরে হকারি করা যাবে না। নিয়ম মানলে তবেই তালিকাভুক্তদের সচিত্র পরিচয়পত্র ও লাইসেন্স দেবে টাউন ভেন্ডিং কমিটি। আর কমিটির অনুমতি ছাড়া শহরে নতুন করে কোথাও কেউ হকার বসাতে পারবেন না।’’
[আরও পড়ুন: ‘দশ বছর পর নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে তবে ফিরব’, মাকে চিঠি লিখে উধাও ৩ স্কুলপড়ুয়া]
টিনের শেড দিয়ে গড়া নয়া স্টল ও স্বচ্ছ প্লাস্টিকে মোড়া পণ্য নিয়ে বসা মডেলের প্রশংসা করলেও শহরের বিভিন্ন মার্কেটের সামনে হকারদের দাপট বৃদ্ধিতে যে পুরকর্তারা খুবই অসন্তুষ্ট তা বুঝিয়ে দিয়েছেন মেয়র ও পারিষদরা। নিউ মার্কেটের চারপাশ জুড়ে ‘হকারদের তাণ্ডব’ চলায় তিনি যে যথেষ্ট অসন্তুষ্ট তা বুঝিয়ে দিয়ে ফিরহাদ বলেন, ‘‘নিউ মার্কেটের ভিতরের দোকানে পাজামা বিক্রি হয়, বাইরে হকাররা তার দড়ি নিয়ে বসেন। কিন্তু দোকান আড়াল করে পাজামার ক্রেতাদের আসা বন্ধ করে দিলে দড়ি বিক্রি হবে না, ক্ষতি তো হবে দু’দলেরই।’’ মেয়রের পাশে দাঁড়ানো হকার সংগ্রাম কমিটির নেতা শক্তিমান ঘোষ বলেন, ‘‘নীতি মেনেই হাসপাতাল-সরকারি অফিসের মতো নিউ মার্কেটের মেন গেট থেকে পাঁচ ফুট ছেড়েই হকারদের বসা উচিত।’’
আসলে যাঁরা লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে দোকান কিনে বা ভাড়া নিয়ে প্রচুর টাকা ধারদেনা করে ট্রেড ও ফায়ার লাইসেন্স নিয়েই দোকান সাজিয়ে বসেছেন তাঁরা অনেকেই হকারদের দাপটে বিপন্ন। শহর জুড়ে অধিকাংশ মার্কেটের বাইরে একশ্রেণির হকাররা এতটাই জবরদখল করে আছে যে ক্রেতারা বাজারেই ঢুকতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে বেশি দাম দিয়েও ফুটপাত থেকেই মাছ-মাংস-সবজি-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে বাধ্য হচ্ছেন বলে পুরসভায় অভিযোগ এসেছে। বস্তুত সেই কারণে এদিন নিউ মার্কেটের উদাহরণ তুলে মহানগরের হকার নীতি বলতে গিয়ে ফুটপাথের পথচারীদের পাশাপাশি দোকানদার ও ব্যবসায়ীদের পক্ষে সওয়াল করেন মেয়র। গড়িয়াহাটে কালো প্লাস্টিক তুলে দিয়ে টিনের শেডের স্টল চালু নিয়ে হকারদের প্রশংসা করেন ফিরহাদ ও দেবাশিস।