অভিরূপ দাস: স্কুলের গেট আটকানো যাবে না। দু’দিকেই ১০ ফুট করে রাস্তা ছেড়ে দিতে হবে হকারদের। শহরের হকারদের নিয়ে আলোচনার পর এমন সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিয়েছে টাউন ভেন্ডিং কমিটি। যে কমিটির চেয়ারম্যান কলকাতার পুর কমিশনার বিনোদ কুমার। কো চেয়ারম্যান বিধায়ক মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার, এবং দেবব্রত মজুমদার।
সম্প্রতি স্কুলে যাওয়ার পথে বেহালায় লরি পিষে দিয়েছে ছ’বছরের সৌরনীল সরকারকে। ঘটনায় গুরুতর আহত হন শিশুটির বাবা সরোজকুমার সরকার। অভিযোগ অধিকাংশ রাস্তায় যেখানে সেখানে বসে পড়ছেন হকাররা। আটকে দিচ্ছেন স্কুলের গেটও। যার জেরে বিপাকে পড়ছে নিত্যযাত্রী থেকে পড়ুয়ারা। একদিকে বাস-লরি, অন্যদিকে হকার। দুই সাঁড়াশি চাপে হাঁটার জায়গা নেই পথচারীদের।
হকার সমস্যা মেটাতে এরপরেই তড়িঘড়ি বৈঠকে বসে টাউন ভেন্ডিং কমিটি। সরকারিভাবে হকারদের ভেন্ডিং লাইসেন্স দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই ১৯ জন পেয়েছেন লাইসেন্স। নিয়ম হয়েছে, সে লাইসেন্স থাকলে তবেই হকিং করতে পারবেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তবে সেই শংসাপত্র পাওয়া মানেই যে আজীবন হকিং করতে পারবেন তা নয়। টাউন ভেন্ডিং কমিটির কো চেয়ারম্যান বিধায়ক দেবাশিস কুমার জানিয়েছেন, প্রত্যেক বছর পুর্ননবীকরণ হবে এই লাইসেন্স। যাঁরা নিয়ম মানবেন না তাদের লাইসেন্স আর পুর্ননবীকরণ করা হবে না।
[আরও পড়ুন: ‘প্রকৃত দোষীকে আড়াল করতে গ্রেপ্তার’, বিস্ফোরক যাদবপুরের ছাত্রমৃত্যুতে ধৃত দীপশেখরের বাবা]
কি কি থাকছে লাইসেন্সে? হকারের নাম, কোন এলাকার মধ্যে তিনি হকারি করতে পারবেন, আধার কার্ড নম্বর, কী ধরণের জিনিস বিক্রি করেন, তার উল্লেখ থাকছে লাইসেন্সে। যা লেখা থাকবে তার বাইরে অন্য কিছু বিক্রিবাটা করতে গেলেই বাতিল হবে হকারের লাইসেন্স। হকিং করার জন্য বছরে আটশো টাকা দিতে হবে হকারকে। হকার কমিটির নেতারা জানিয়েছেন, পথচারীদের পাশাপাশি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয় নয়া হকার নীতিতে তাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। শহরের একাধিক স্কুলের গেটের বাইরে হকারদের দৌরাত্ম্য দেখা যায়। নতুন নিয়ম অনুযায়ী সরকারি হোক বা বেসরকারি প্রতিটি স্কুলের গেটের ডানদিক এবং বাঁদিকে ১০ ফুট করে জায়গা ছেড়ে দিতে হবে হকারদের।
হকার সংগ্রাম কমিটির শক্তিমান ঘোষ জানিয়েছেন, স্কুলের বাচ্চাদের ঢুকতে বেরোতে যাতে কোনও অসুবিধা না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে হকারদের। টাউন ভেন্ডিং কমিটির একটি টিম শহরের একাধিক স্কুল চত্ত্বর ঘুরে দেখবে। যাঁরা স্কুলের গেট আটকে হকারি করছেন তাদের ভেন্ডিং লাইসেন্স দেওয়া হবে না। শুধু তাই নয় ফিতে দিয়ে মাপা হবে শহরের ফুটপাথ। প্রতিটি ফুটপাথের এক-তৃতীয়াংশ জায়গা নিয়ে বসতে পারবেন হকাররা। হকার জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির নেতা অসিত সাহা জানিয়েছেন, শুধু স্কুল নয়, যেকোনও অফিস, ব্যাঙ্কেরও দু’দিকে ১০ ফুট করে জায়গা ছাড়তে হবে হকারদের।