রাহুল রায়: এসএসসিতে সুপার নিউমেরারি পোস্ট বা অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করে নিয়োগের জন্য, স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) আনা আবেদনের মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)। বুধবার এই সংক্রান্ত মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেও, শিক্ষা ক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত এক মামলায় সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
আদালতের নির্দেশ, এদিনই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে তদন্ত শুরু করতে হবে। ওই ‘সুপার নিউমেরারি’ পোস্ট কার মস্তিষ্কপ্রসূত সিবিআইকে তা খুঁজে বের করতে হবে। পাশাপাশি, কে বা কারা এই ‘বেনামি’ আবেদন করল তাও খুঁজে বের করে সিবিআইকে (CBI) এক সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে, এ নিয়ে জবাবদিহির জন্য রাজ্যের শিক্ষা সচিব মণীষ জৈনকে তলব করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় তাঁকে সশরীরে আদালতে হাজির হতে হবে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, “এগুলি ‘বেনামি’ আবেদন। এই সুপার নিউমেরারি পোস্ট করার কোনও আইন নেই। এটা একটা সংগঠিত অপরাধ। যোগ্য প্রার্থীরা রাস্তায় ঘুরছে আর অযোগ্যরা নিয়োগ পাচ্ছে!”
[আরও পড়ুন: চার্জশিট ব্যবহার করে অপপ্রচার! শুভেন্দুর কয়লা পাচারে ‘প্রভাবশালী’ তত্ত্বের পালটা কুণালের]
এদিন আদালতের এই নির্দেশের প্রেক্ষিতে এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বলেন, “কেউ বলেনি কারও চাকরি যাবে না। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হবে, তাঁদের চাকরি যাবে। এসএসসির তরফে দুটি মডেল কোর্টে জানানো হয়েছিল। তার মধ্যে আদালত যেটি গ্রহণযোগ্য হবে বলে মনে করবে, সেটি রাজ্য সরকার করবে। রাজ্যের তরফে শুধুমাত্র প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।” তিনি আরও বলেন, “আমরা বিচার ব্যবস্থাকে সম্মান করি। বিচারপতিদের শ্রদ্ধা করি। বিচার ব্যবস্থার উর্ধ্বে কেউ নয়। কিন্তু দেখতে হবে কারও উইশ লিস্ট অনুযায়ী আদালত নির্দেশ দিচ্ছে না তো ! পর্যবেক্ষণ দিচ্ছে না তো!”
[আরও পড়ুন: নিজের পুরুষাঙ্গ কেটে জঙ্গলে ফেলে দিলেন মানসিক রোগী! চাঞ্চল্য বনগাঁয়]
গত মে মাসে স্কুল সার্ভিস কমিশনের (School Service Commission) চতুর্থ ও তৃতীয় শ্রেণীর কর্মী নিয়োগ এবং নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশে অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করে। পরবর্তীতে আদালতের অনুমতি নিতে আবেদনও জানায় এসএসসি। সম্প্রতি সুপার নিউমেরারি পোস্ট তৈরির সেই আবেদন প্রত্যাহার করতে চান এসএসসির আইনজীবী সূতনু পাত্র। সেই মামলাতেই এই নির্দেশ আদালতের। শূন্যপদে নিয়োগের আবেদন নিয়ে আইনজীবীদের কোনও নির্দেশিকা ছিল কিনা, জানতে চায় আদালত। তবে কমিশনের চেয়ারম্যান জানান, “প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত কমিশনের। তবে নির্দেশ কার বা কে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা তাঁর জানা নেই। তারপরই বিচারপতির প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় এসএসসিকে। এর আগে আদালতে কমিশনের বক্তব্য ছিল, বঞ্চিতদের সুযোগ দেওয়ার পাশাপাশি, অবৈধ চাকরি পাওয়াদের পুনর্বহালের জন্য এই অতিরিক্ত শূন্যপদ করা হয়েছে।” কমিশনের দাবি, “অনেকেই তিন চার বছর ধরে চাকরি করছেন, তাঁদের পরিবার রয়েছে, তাদের কথা ভেবেই আদালতের রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানো হয়েছে।”