সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাধারণত বয়স্কদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনের প্রবণতা বেশি দেখা যায়। তবে, কম বয়সীদের মধ্যেও দ্রুত বাড়ছে এই সমস্যা। সম্প্রতি 'দ্য ল্যানসেট চাইল্ড অ্যান্ড অ্যাডোলেসেন্ট হেলথ' জার্নালে প্রকাশ পেল এমনই তথ্য। নয়া গবেষণায় জানা গিয়েছে, ২০০০ সাল থেকে শিশু-কিশোরদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের ঘটনা বিশ্বব্যাপী প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে গিয়েছে।
গবেষণা অনুসারে, ২০০০ সালে শিশু-কিশোরদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের হার ছিল ৩ শতাংশের সামান্য বেশি। অথচ ২০২০ সালের মধ্যে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ শতাংশেরও বেশি। মুম্বাই ফর্টিস হাসপাতালের নেফ্রোলজিস্ট ডাঃ বৈভব কাস্কার জানান, উচ্চ রক্তচাপ শুধু বয়স্কদের শারীরিক সমস্যা নয়। তাই সতর্ক হতে হবে তরুণদেরকেও।
প্রতি দশজনের মধ্যে একজন কিশোর-কিশোরীর রক্তচাপ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। 'জামা' জার্নালে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ছ'বছরের শিশুদের মধ্যেও এখন পেডিয়াট্রিক হাইপারটেনশন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। শিশুর অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, শরীরচর্চার অভাব এবং অতিরিক্ত মানসিক চাপকেই এর জন্য দায়ী করেছেন চিকিৎসকরা।
এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এক তথ্য তুলে ধরেছেন। স্থূলতায় ভোগা প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন শিশু বা কিশোরের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। স্থূলতার কারণে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স এবং রক্তনালীতে পরিবর্তন আসে। ফলে রক্তচাপ বেড়ে যায়।
এছাড়াও, বিশ্বব্যাপী প্রায় ৮ শতাংশ শিশু-কিশোর এখন প্রি-হাইপারটেনশন অবস্থায় রয়েছে। ভবিষ্যতে এই অবস্থা বিপজ্জনকভাবে বাড়তে পারে। গবেষণায় আরও জানা যাচ্ছে, বিশ্বব্যাপী ৯ শতাংশের বেশি শিশু-কিশোরের মাস্কড হাইপারটেনশন থাকতে পারে। এই অবস্থায় ডাক্তারের কাছে মাপলে রক্তচাপ স্বাভাবিক দেখায়। অথচ, বাড়িতে বা অন্যান্য সময় এটি বেশি থাকে।
চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন, যেহেতু রক্তচাপ কম বয়েসিদের মধ্যেও সিঁধ কাটতে শুরু করেছে, তাই অবহেলা না করে নিয়মমাফিক রক্তচাপ পরীক্ষা করানো উচিত। বয়ঃসন্ধিতেই যদি রোগটি শনাক্ত হয়, তাহলে ভবিষ্যতে হৃদরোগ ও কিডনি রোগের মতো জটিলতা এড়ানো সম্ভব।
