সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'মস্তিষ্কখেকো' অ্যামিবা বা নিগ্লেরিয়া ফাউলেরির সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে শবরীমালা তীর্থযাত্রীদের জন্য বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে কর্ণাটক সরকার। কর্ণাটক স্বাস্থ্য দপ্তর রাজ্য থেকে কেরলে যাওয়া তীর্থযাত্রীদের নদী, হ্রদ বা অন্যান্য মিষ্টি জলের উৎসগুলিতে স্নান করা এড়িয়ে চলার পরামর্শ জারি করেছে।
কেন এই সতর্কতা?
নিগ্লেরিয়া ফাউলেরি নামক এই মারাত্মক অ্যামিবা 'প্রাইমারি অ্যামিবিক মেনিনগোএনসেফালাইটিস' (PAM) নামক গুরুতর সংক্রমণ ঘটায়। এই অ্যামিবা সাধারণত স্থির বা অপরিষ্কার জল, যেমন পুকুর, হ্রদ, ডোবা বা ভেজা মাটিতে জন্মায়। অ্যামিবা একজনের শরীর থেকে অন্যজনের শরীরে ছড়ায় না। আবার দূষিত জল পান করলেও সংক্রমণ হয় না। এটি শুধুমাত্র নাকের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে মস্তিষ্কে পৌঁছোয়। সেখানে এটি তীব্র সংক্রমণ তৈরি করে।
অ্যাডভাইজরিতে কী বলা হয়েছে?
কর্ণাটক সরকারের অ্যাডভাইজরিতে শবরীমালা তীর্থযাত্রীদের পরিষ্কার বা ক্লোরিনযুক্ত সুইমিং পুলের জল ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, ধর্মীয় স্নান বা ডুব দেওয়ার সময় সকলকে নোজ ক্লিপ ব্যবহার করতে বা নাক শক্ত করে বন্ধ করে রাখতে বলা হচ্ছে। কারণ, জলে অ্যামিবা থাকলে তা নাকের মাধ্যমে মস্তিষ্কে পৌঁছোয়। তাই নাক বন্ধ রেখে স্নান করলে সেই আশঙ্কা কিছুটা হলেও কমবে। যদিও স্নান না করার পরামর্শই সরকারের তরফে দেওয়া হয়েছে।
PAM-এর লক্ষণ ও চিকিৎসা
PAM একটি অত্যন্ত মারাত্মক সংক্রমণ, যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রাণঘাতী। এর লক্ষণগুলি হঠাৎ করে দেখা দেয় এবং অতি অল্প সময়ের মধ্যে তীব্র আকার ধারণ করে। প্রাইমারি অ্যামিবিক মেনিনগোএনসেফালাইটিসে আক্রান্ত হলে কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। কী কী?
১) তীব্র জ্বর।
২) অসহ্য মাথাব্যথা।
৩) বমি বমি ভাব এবং বমি।
৪) সাঙ্ঘাতিক কাঁপুনি।
৫) ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া। মেনিনজাইটিসের মতো লক্ষণ।
৬) আলো সহ্য না হওয়া।
৭) মানসিক বিভ্রম তৈরি হওয়া।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রোগের চিকিৎসায় সাধারণত অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ অ্যাম্ফোটেরিসিন বি ব্যবহার করা উচিত। এর সাথে রিফাম্পিন, ফ্লুকোনাজল এবং মিল্টেফোসিন সহ আরও কিছু ওষুধের কম্বিনেশন ব্যবহার করা যেতে পারে। দ্রুত রোগ নির্ণয় এবং শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কমিয়ে এনে এই রোগ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
