সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অতিরিক্ত স্থূলতা এবং জাঙ্ক ফুডের প্রতি ঝোঁকের কারণে কমবয়সিদের মধ্যেও দ্রুত বাড়ছে ডায়াবেটিসের প্রবণতা। যার ফলে হৃৎপিণ্ড, কিডনি, চোখ-সহ শরীরের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বিভিন্ন জটিল রোগের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। সময়মতো সচেতনতা ও চিকিৎসার মাধ্যমেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সম্ভব বলে জানিয়েছেন শহরের বিশিষ্ট চিকিৎসকরা। কলকাতায় হাওড়া টাউন ডায়াবেটিস স্টাডি সোসাইটির উদ্যোগে দু'দিনব্যাপী দশম ন্যাশনাল কনফারেন্স অন ডায়াবেটিস অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে দেশ-বিদেশের বহু চিকিৎসক ও বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী সিধু উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে মূলত কম বয়সে ডায়াবেটিসের বাড়বাড়ন্ত এবং তা নিয়ন্ত্রণের উপায় নিয়ে আলোচনা হয়।
সোসাইটির সামাজিক সম্পাদিকা জয়তী ভট্টাচার্য জানান, “আজকের প্রজন্ম ফাস্ট ফুড ও অনিয়মিত জীবনযাপনের কারণে খুব দ্রুত ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। রোগীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোই এখন প্রধান কাজ।” তিনি আরও বলেন, "শুধু শহরেই নয় গ্রামের মানুষদের মধ্যেও ডায়াবেটিসের প্রবণতা বাড়ছে। তাই তাঁদের চিকিৎসায় সহযোগিতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।" সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ও বিশিষ্ট এন্ডোক্রিনোলজিস্ট ডা. সঞ্জয় শাহ বলেন, “ডায়াবেটিসকে হালকাভাবে নিলে চলবে না। এটি একদিকে যেমন সাইলেন্ট কিলার, তেমনই সঠিক সময়ে ব্যবস্থা নিলে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।”
ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ ডা. গুরুপ্রসাদ ভট্টাচার্য বলেন, “শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমা হলে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বাড়ে। ফলে অল্প বয়সেই ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। স্থূলতা কমানোই এই রোগ প্রতিরোধের মূল চাবিকাঠি।” মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. মৃদুল বেরার মতে, “অসংযত খাদ্যাভ্যাস, রাত জেগে থাকা, অনিয়মিত কাজের সময়সূচি ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। পরিবার থেকেই এই অভ্যাসগুলো নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।”
নেফ্রোলজিস্ট ডা. বিস্ময় কুমার সতর্ক করে বলেন, “ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে কিডনি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একবার কিডনি ফেলিওর শুরু হলে তা আর ফিরিয়ে আনা যায় না।” চিকিৎসকরা জানান, ডায়াবেটিস প্রতিরোধে নিয়মিত শরীরচর্চা, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত ঘুম ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত জরুরি। একইসঙ্গে রোগ ধরা পড়লে সময়মতো চিকিৎসকের পরামর্শ এবং ওষুধ খেয়ে জটিলতা অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব। চিকিৎসকদের একবাক্যে বক্তব্য, স্থূলতা কমাও, ডায়াবেটিস আটকায়।
