সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বছর কয়েক আগে মৃগী রোগে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন বলি অভিনেত্রী ফাতিমা সানা শেখ। আর এবার অদ্ভুত এক রোগের কথা জানালেন এই 'দঙ্গল' অভিনেত্রী। ফাতিমা জানিয়েছেন, তিনি ২ বছর ধরে 'বুলিমিয়া' রোগে ভুগেছেন। 'চ্যাপ্টার টু উইথ রিয়া চক্রবর্তী' পডকাস্টে সম্প্রতি এমনটাই জানান তিনি।
'দঙ্গল' ছবিতে চরিত্রের উপযোগী করে নিজেকে গড়ে তোলার জন্য একসময় ওজন বাড়াতে শুরু করেছিলেন। প্রতিদিন ২৫০০ থেকে ৩০০০ ক্যালোরি খাবার খেতেন। সঙ্গে চলত নিয়মিত শরীরচর্চা। সেই সময়েই অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হয়ে গিয়েছিল তাঁর। বাড়ি কিংবা বাড়ির বাইরে, যেখানেই থাকুন না কেন, তিনি সবসময় খেতেন। কিন্তু শুটিং শেষ হওয়ার পর বিপদে পড়লেন। তাঁর এই খাদ্যাভাসের পরিবর্তন হল না কিছুতেই। অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কিছুতেই কমছিল না। মানসিক অস্থিরতায় ভুগতে শুরু করলেন তিনি। আর সেই ভয়ে একদিন খাবার খেয়ে পরের দিন উপোস থাকতেন। আসলে ফাতিমা জানতেও পারেননি যে তিনি ইটিং ডিজঅর্ডারে ভুগছেন। রোগটির নাম বুলিমিয়া নার্ভোসা।
এটি আসলে একটি মানসিক রোগ। অল্প সময়ে অতিরিক্ত খাদ্যগ্রহণ বা 'বিঞ্জ ইটিং'-এর পর সেই বাড়তি ক্যালোরি শরীর থেকে বের করে দেওয়ার জন্য নানারকম ক্ষতিকর আচরণ বা প্রবণতা রোগীর মধ্যে দেখতে পাওয়া যায়। একসঙ্গে খুব বেশি খাবার খেয়ে ফেলার পর রোগীর মনে ওজন বৃদ্ধি নিয়ে অত্যধিক ভয় কাজ করে। এমনকী খাওয়ার পর অপরাধবোধে ভুগতেও দেখা যায়। ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য গলায় আঙুল ঢুকিয়ে স্বেচ্ছায় বমি করা, অত্যাধিক ব্যায়াম কিংবা জোলাপ জাতীয় ওষুধ সেবন করার প্রবণতা দেখা দেয়। আর এর ফলে শরীরে ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতা, দাঁতের ক্ষয়, হজমের সমস্যা এবং হৃদরোগের মতো মারাত্মক শারীরিক অসুস্থতা দেখা দেয়। কিন্তু কপাল মন্দের মধ্যে 'বুলিমিয়া' চট করে ধরা পড়ে না। তাই, ক্ষতি যা হওয়ার আগেই হয়ে যায়।
প্রতিহত করবেন কীভাবে?
এই রোগের মূল যে কারণ অর্থাৎ রোগীর অদ্ভুত চিন্তাভাবনা ও আচরণ তা পরিবর্তন হলেই সমস্যা মিটবে। আর এ জন্য দরকার কগনিটিভ বিহেভিয়র থেরাপি। রোগের হাত থেকে তাৎক্ষণিক ভাবে বাঁচার জন্য অ্যান্টি ডিপ্রেস্যান্ট জাতীয় ওষুধ অনেকেই ব্যবহার করে থাকেন। তবে, সাইকো থেরাপির পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলাও দরকার। তাছাড়া মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা একান্ত জরুরি। সময় সাপেক্ষ হলেও এ রোগে আরোগ্য লাভ সম্ভব।
