সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রেম কবেই বা আর বাধা মেনেছে? ভালোবাসায় শারীরিক সম্পর্ক খুবই স্বাভাবিক। দু'টি মানুষের পরম প্রাপ্তির মুহূর্তকে আরও উজ্জ্বল করে তোলে ছোট্ট একটি চিহ্ন। ঘনিষ্ট মুহূর্তে প্রেমিকার শরীরে আদরের কামড় 'লাভ বাইট' (Love Bites) নামে পরিচিত। তবে এই 'লাভ বাইট' আপনার শরীরে বড়সড় প্রভাব ফেলতে পারে, তা কি জানেন?
'লাভ বাইট' বা 'হিকি' ত্বকের উপরে তৈরি হওয়া এক ধরনের ক্ষত। এর ফলে অনেক সময় চামড়ায় কালশিটে দাগ পড়ে। হালকা ব্যথাও হতে পারে। এমনকী ত্বকের গভীর ক্ষত সৃষ্টিরও সম্ভাবনা থাকে। তবে এর থেকে সরাসরি যৌন সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেকটাই কম। কিন্তু বেশ কিছু ক্ষেত্রে অন্যান্য সংক্রমণের আশঙ্কা দেখা দেয়। কী বলছেন চিকিৎসকরা? আসুন জেনে নেওয়া যাক।
কোন কোন ক্ষেত্রে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে?
১) লাভ বাইট যদি খুব জোরালো হয় সেক্ষেত্রে ত্বক ফেটে রক্তপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেই রক্ত অন্য সঙ্গীর ক্ষতস্থানের সংস্পর্শে এলে যৌন সংক্রমণের সম্ভাবনা তৈরি হয়। যদিও এমন ঘটনা বিরল। তবুও এক্ষেত্রে রক্তের মাধ্যমে সংক্রমিত রোগ HIV বা হেপাটাইটিস হওয়ার ঝুঁকি একেবারেই উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়। যদিও লালাতে HIV ভাইরাসের পরিমাণ খুবই কম থাকে এবং লালাতে থাকা এনজাইমগুলো ভাইরাসকে নষ্ট করে দেয়, তাই এটি ছড়ানোর সম্ভাবনা নগণ্য। গভীর চুম্বনের মাধ্যমেও HIV ছড়ানোর ঘটনা অত্যন্ত বিরল, যদি না উভয় সঙ্গীর মুখেই ক্ষতস্থান থাকে।
২) লাভ বাইট (Love Bite) দেওয়া সঙ্গীর মুখে বা লালায় কোনও ধরনের ওরাল ইনফেকশন (যেমন- হার্পিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস) থাকলে, লাভ বাইট দেওয়ার সময় লালার মাধ্যমে সেই সংক্রমণ সঙ্গিনীর ত্বকে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এটি সরাসরি এসটিডি না হলেও এক ধরনের সংক্রমণ।
৩) এছাড়াও মানুষের লালায় অনেক ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকে। যদি লাভ বাইট গভীর হয় কিংবা ত্বকে ক্ষতের সৃষ্টি হয়, তাহলে ওই ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে সংক্রমণ ঘটতে পারে। এটি যৌন সংক্রামক না হলেও অন্য ধরনের সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
তাই, লাভ বাইট নিয়ে অহেতুক ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তবে নিজের স্বাস্থ্য ও সঙ্গীর স্বাস্থ্যের প্রতি সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরি। যেকোনও শারীরিক ঘনিষ্ঠতার আগে নিজেদের মধ্যে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়গুলি আলোচনা করে নেওয়া উচিত। যদি সঙ্গীর মুখে বা ত্বকে কোনও ধরনের ঘা বা সংক্রমণ দেখা যায়, তবে লাভ বাইট দেওয়া বা নেওয়া থেকে বিরত থাকা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। বলাইবাহুল্য নিজেদের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ রাখা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই আদতে যেকোনও ধরনের সংক্রমণ এড়ানোর মূল চাবিকাঠি।
