সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ছে শিশুরাও। রাজস্থানের সীকর জেলার দান্তা শহরের ঘটনায় সম্প্রতি হতবাক সকলে। জানা যাচ্ছে, মঙ্গলবার সকালেই হৃদরোগে (Heart Disease) মৃত্যু হয়েছে ৯ বছরের শিশু প্রাচী কুমাওয়াতের। স্কুলে টিফিনের সময় এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। শিক্ষকরা জানিয়েছেন, শিশুটিকে কখনওই অসুস্থ বলে মনে হয়নি। সাম্প্রতিক অতীতেও গুজরাটের দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর হৃদরোগে মৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছে। এমনকী ২০২৩ সালে তেলেঙ্গানায় ১৩ বছর বয়সি এক মেয়ের হৃদরোগে মৃত্যুর খবর উঠে আসে শিরোনামে। এই ঘটনাগুলি উদ্বেগ বাড়িয়েছে সাধারণ মানুষের।
গুরুগ্রামের সিকে বিড়লা হাসপাতালের বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ শ্রেয়া দুবে জানিয়েছেন, শিশুদের এই রোগ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জন্মগত। যদিও আরও অন্যান্য বহু কারণ থাকতে পারে। শিশুর বাবা-মায়ের উচিত এর লক্ষণগুলি সম্পর্কে সচেতন হওয়া যাতে সঠিক সময়ে প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করা যায়।
কোন কোন কারণে শিশুর হৃদরোগের ঝুঁকি দেখা দেয়?
হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি সাধারণত বয়স্কদের মধ্যে থাকলেও শিশুদেরও কিছু কারণে এই লক্ষণ দেখা দিতে পারে। শিশুর জন্মগত হার্টের সমস্যা, হৃদপিণ্ডের অস্বাভাবিক কার্যকারিতা- এসবের অন্যতম কারণ। এর ফলে শিশুর হৃদপিণ্ডে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এমনকী অনিয়মিত হৃদস্পন্দনও দেখা দিতে পারে। এছাড়াও কাওয়াসাকি রোগ, কার্ডিওমায়োপ্যাথি এবং জিনগত ব্যাধির কারণে শিশুদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে।
এই লক্ষণগুলি দেখলে শিশুকে ফেলে রাখবেন না
বাবা-মায়ের উচিত জন্ম মুহূর্ত থেকেই শিশুর স্বাস্থ্যের দিকে সঠিক মনোযোগ দেওয়া। যদি দেখেন আপনার শিশুর ত্বকের রং নীলাভ, কিংবা ঠোঁটের চারপাশ নীলাভ বর্ণের, ত্বকে ফ্যাকাশে ভাব, ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এগুলি শিশুর হৃদরোগের সম্ভাব্য লক্ষণ। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ প্রয়োজনে ECO, ECG কিংবা অন্যান্য কার্ডিয়াক পরীক্ষার মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
শিশুর বাবা-মায়ের আশু কর্তব্য
(১) আপনার শিশুর শারীরিক স্বাস্থ্যের দিকে নিয়মিত খেয়াল রাখুন। একজন শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়মিত চেক-আপের মধ্যে রাখা একান্ত প্রয়োজন।
(২) ফল, টাটকা শাকসবজি ও দানা জাতীয় খাবার খাদ্যতালিকায় রাখুন। শিশুকে সুষম খাদ্য দিন। চিনি ও কোকজাতীয় পানীয় বর্জন করুন।
(৩) চিকিৎসকের পরামর্শমতো জন্মের পর শিশুর সমস্ত টিকার কোর্স সঠিক সময়ে করিয়ে রাখুন।
(৪) মানসিক চাপ বর্জন করে সুস্থ স্বাভাবিক জীবন বেছে নিতে শিশুকে সাহায্য করুন।
মনে রাখবেন, শিশুর স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা ও চিকিৎসকের পরামর্শমতো চললে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত যেকোনও ঝুঁকির হাত থেকেই রেহাই পাওয়া সম্ভব।
