সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত বেশ কয়েকমাস ধরেই লন্ডনে দফায় দফায় চলছে 'কিং' ছবির শুটিং। আর এর মাঝেই শোনা গেল স্টান্ট করার সময় পেশিতে চোট লাগে শাহরুখ খানের (Shah Rukh Khan)। সূত্রের খবর, মুম্বইয়ের গোল্ডেন টোবাকো স্টুডিওতে একটি অ্যকশনের দৃশ্যে শুটিং করার সময় জখম হন কিং খান। যদিও এই আঘাতের প্রসঙ্গ নিয়ে কোনও বিবৃতি পাওয়া যায়নি অভিনেতা বা তাঁর সহযোগী দলের তরফে। কিন্তু আগামীতে যাতে কোনও বিপত্তি না ঘটতে পারে সেজন্যই তিনি চিকিৎসার জন্য পাড়ি দেন মার্কিন মুলুকে। এই খবর ছড়িয়ে পড়তে শাহরুখের ভক্তকুল উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন। এমনকী এক্স হ্যান্ডেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে।
পেশিতে আঘাত আসলে কী?
আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ অর্থোপেডিক সার্জনস-এর মতে, পেশিতে আঘাত বা টান আসলে খুব সাধারণ একটা ঘটনা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ক্রীড়াবিদ বা অভিনেতারা এই সমস্যায় ভোগেন। কিন্তু পেশিতে টান লেগে খিঁচুনি দেখা দিতে পারে আপনারও। পেশিতে টান লেগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে আমাদের পিঠ, পা এবং কাঁধ। এমনকী পেশির খুব বেশি প্রসারিত হলে তা ছিঁড়েও যেতে পারে।
পেশি টানের লক্ষণ
পেশিতে হঠাৎ অসহ্য যন্ত্রণা বোধ। সেই মুহূর্তে আঘাতপ্রাপ্ত স্থান নড়াচড়া করা যায় না। ফোলাভাব দেখা যায়। কিছুক্ষেত্রে কালশিটে দাগও দেখা দিতে পারে। যদি হঠাৎ করে ঘটে তাহলে এটি অ্যাকিউট স্ট্রেন। পেশির ব্যথা ধীরে ধীরে বাড়লে তা একটি ক্রনিক স্ট্রেন।
পেশিতে টান কেন দেখা দেয়?
(১) ওয়ার্ম আপ না করে সরাসরি ভারী ব্যায়াম করা। পেশির স্বাভাবিক ক্ষমতার চেয়ে ভারী ওজন তোলা, দীর্ঘক্ষণ দৌড়নো বা এমন কোনও কাজ করা যাতে পেশির উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে।
(২) শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইলেক্ট্রোলাইট বেরিয়ে যায়। শরীরে এই ইলেক্ট্রোলাইটগুলির ভারসাম্য নষ্ট হলে পেশিতে টান লাগতে পারে।
(৩) অনেক ক্ষেত্রে রক্তনালীর সমস্যা (যেমন- অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস) বা পায়ের ধমনী সরু হয়ে যাওয়া এই পেশি টানের অন্যতম কারণ হয়ে দেখা দেয়।
পেশির আঘাত এড়াতে চিকিৎসকরা কী পরামর্শ দিচ্ছেন?
পেশির টান নিরাময়ে ডাক্তাররা সাধারণত RICE পদ্ধতি মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
Rest (বিশ্রাম): বিশ্রাম নিন। আঘাত লাগা স্থানে অতিরিক্ত চাপ বা নড়াচড়া এড়িয়ে চলুন।
Ice (বরফ): আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে বরফের সেঁক দিন। এটি ফোলাভাব ও ব্যথা কমায়।
Compression (সংকোচন): ইলাস্টিক ব্যান্ডেজ দিয়ে আঘাতপ্রাপ্ত স্থানটি হালকাভাবে মুড়িয়ে দিন। এটি ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে।
Elevation (উচ্চতা): আঘাতপ্রাপ্ত স্থানটিকে হৃদপিণ্ডের স্তরের উপরে রাখুন। এটিও ফোলাভাব কমাতে সহায়ক।
RICE পদ্ধতি সাধারণত আঘাতের প্রথম ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবহার করা হয়। যদি ব্যথা বা ফোলাভাব না কমে, তাহলে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
