অভিরূপ দাস: টিকা নেওয়ার পরেও হতে পারে র্যাবিস। আশঙ্কার কথা শোনালেন শহরের প্রখ্যাত ভাইরোলজিস্ট ড. সিদ্ধার্থ নারায়ণ জোয়ারদার। মঙ্গলবার 'ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচতে প্রবীণদের সাবধানতা এবং সচেতনতা' শীর্ষক আলোচনাসভায় উঠে এল একাধিক ভাইরাসের প্রসঙ্গ। তেমনই একটি ভাইরাস, র্যাবিস। ঘরে ঘরে কুকুর বিড়াল পোষার প্রবণতা বাড়ছে। আজকাল রাস্তাঘাটে অনেকেই বিড়াল-কুকুরকে খাবার দেন। কতটা সচেতন তাঁরা? তথ্য বলছে, র্যাবিস ভাইরাসের জন্য বিপন্ন ৯০টি দেশের ২৫০ কোটি মানুষ। র্যাবিস এক ধরনের নিউরোট্রফিক ভাইরাস। স্নায়ুর মধ্যে দিয়ে তা এগিয়ে যায় মস্তিষ্কের দিকে।
কুকুর-বিড়াল কামড়ালে এই ভাইরাস প্রবেশ করে মানব শরীরে। তারপর? ড. সিদ্ধার্থ নারায়ণ জোয়ারদার জানিয়েছেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে অসুখ হওয়ার আগে টিকা নিতে হয়। কিন্তু সাধারণত র্যাবিসের ক্ষেত্রে কুকুর-বিড়াল কামড়ানোর পর সকলে টিকা নেন। যাকে বলা হয় পোস্ট এক্সপোজার ভ্যাকসিন। তবে এই টিকা অনেক সময় কাজ করে না। এর প্রধান কারণ সময়ের তারতম্য। প্রতি ঘন্টায় ২৫ সেন্টিমিটার করে এগোয় র্যাবিস ভাইরাস। এদিকে টিকা নিলেও শরীরে সঙ্গে সঙ্গে অ্যান্টিবডি তৈরি হয় না। টিকা নেওয়ার প্রায় ৪/৫ দিন পর তৈরি হয় অ্যান্টিবডি। সেক্ষেত্রে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার আগে মস্তিষ্কে র্যাবিস ভাইরাস পৌঁছে গেলে মৃত্যু নিশ্চিত। তাই টিকার থেকেও আগে প্রয়োজন ক্ষতস্থান পরিষ্কার।
প্রাণী স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের বক্তব্য, কুকুর-বিড়াল কামড়ালে ক্ষতস্থান টানা ৩০ মিনিট ধরে পরিষ্কার করতে হবে। সাবান জল দিয়ে টানা আধঘন্টা পরিষ্কার করলে ঠেকানো যেতে পারে ভাইরাসকে। এরপর প্রভিডন আয়োডিন অথবা, টিংচার আয়োডিন দিয়ে সাফ করতে হবে ক্ষতস্থান। কোনওভাবেই ক্ষতস্থানে ব্যান্ডেজ করা বারণ। মস্তিষ্কের যত কাছে কুকুর-বিড়াল কামড়াবে বিপদ তত বেশি। স্নায়ুতে ভাইরাস একবার গতি পেলে একে ঠেকানো দায়।
এদিনের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন শহরের একাধিক প্রবীণ-প্রবীণা। কুকুর-বিড়াল র্যাবিস ভাইরাসের 'ন্যাচরাল রিজভয়ার' বা স্বাভাবিক আধার। এমতাবস্থায় কুকুর-বিড়ালের কামড়কে হালকাভাবে নিতে বারণ করেছেন ভাইরাস বিশেষজ্ঞ। যাঁরা রাস্তার কুকুর-বিড়ালকে খাওয়ান তাঁদের আগে থেকে র্যাবিসের টিকা বা প্রি-এক্সপোজার ভ্যাকসিন নিয়ে রাখতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা।
