গোবিন্দ রায়: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস মানহানি মামলা দায়ের করেন। সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি কৃষ্ণা রাওয়ের বেঞ্চে মামলাটি ওঠে। শুনানি শেষ। দুপক্ষের সওয়াল জবাব শুনে কোনও মন্তব্য করেননি বিচারপতি। আপাতত স্থগিত রায়দান।
লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের(C V Ananda Bose) বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ তোলেন রাজভবনের এক অস্থায়ী মহিলা কর্মী। এই অভিযোগ নিয়ে জোর চাপানউতোর তৈরি হয়। রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতে জড়ায় আরও একবার। টানাপোড়েনের মাঝেই আবার বরানগর এবং ভগবানগোলার দুই বিধায়কের শপথ নিয়ে নজিরবিহীন জটিলতা তৈরি হয়। সে প্রসঙ্গে উষ্মাপ্রকাশ করতে গিয়ে রাজ্যপালের শ্লীলতাহানির প্রসঙ্গ টেনে আনেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)।
তিনি দাবি করেন, "জেতার পরেও একমাস ধরে আমার বিধায়করা বসে আছেন। রাজ্যপাল শপথ নিতে দিচ্ছেন না। মানুষ ওঁদের নির্বাচন করেছে। ওঁর কী অধিকার তাঁদের শপথ নিতে দিচ্ছেন না। ওঁর কী অধিকার তাঁদের শপথ নিতে না দেওয়ার? উনি হয় স্পিকারকে এই অধিকার দিন, নয়তো ডেপুটি স্পিকারকে। আর তা না হলে নিজে বিধানসভায় আসুন। ওঁর রাজভবনে কেন সকলে যাবেন? রাজভবনে যা কীর্তি-কেলেঙ্কারি চলছে, তাতে মেয়েরা যেতে ভয় পাচ্ছেন বলে আমার কাছে অভিযোগ করছেন।" এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাই কোর্টে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা দায়ের করেন রাজ্যপাল বোস।
[আরও পড়ুন: পুলিশকে লক্ষ্য করে চলল গুলি! অভিযুক্তকে ধরতে গিয়ে কুলতলিতে ধুন্ধুমার]
সোমবার বিচারপতি কৃষ্ণা রাওয়ের বেঞ্চে ওই মামলার শুনানিতে রাজ্যপালের আইনজীবী বলেন, "রাজ্যপাল সম্পর্কে মানহানিকর মন্তব্য করা হয়েছে। দুই নবনির্বাচিত বিধায়কের শপথ নিয়ে রাজ্যপাল চিঠি দিয়েছিলেন। সেই চিঠিতে কোনও ভয়ের কথা ছিল না। তার পরেও মহিলারা রাজভবনে যেতে ভয় পান এই ধরনের মন্তব্য করা হয়েছে। এটা বিদ্বেষমূলক মন্তব্য।" মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবীর পালটা সওয়াল, "মুখ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্য মানহানিকর নয়। তিনি শুধু একটি মন্তব্য করেছেন। সাধারণের স্বার্থে এমন কথা বলেছেন। সংবাদমাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, কেন সবাইকে রাজভবনে যেতে হবে? মহিলারা সেখানে যেতে নিরাপদ বোধ করেন না। মহিলারা তাঁকে সে কথা বলেছেন। এটা মানহানি হতে পারে না। জনসমক্ষে একথাই মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন। এটা তাঁর বাক্স্বাধীনতা।"
পালটা আবার রাজ্যপালের আইনজীবী বলেন, "দুই বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁরা শপথ নেবেন। এটা প্রশাসনিক কাজকর্মের মধ্যে পড়ে। কিন্তু সেখানে অন্য বিষয় কেন জুড়ে দেওয়া হল?" দুপক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শুনে আদালতের তরফে কিছুই বলা হয়নি। সোমবারের মতো শুনানি শেষ। আপাতত স্থগিত রায়দান।