সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: খুব বেশিদিন আগের কথা নয়। বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তৈরি হয়েছিল একটি শিশুর ছবি ঘিরে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল সেই ছবি। যা দেখে শিহরিত হয়েছিল গোটা বিশ্ব। যাঁরা ছবিটি দেখেছেন, তাঁদের চোখ দিয়ে গড়িয়েছিল জলের ধারা।
ছবিতে দেখা গিয়েছিল, তুরস্কের সমুদ্রসৈকতে একটি শিশুর প্রাণহীন দেহ পড়ে রয়েছে। তার পরনে ছিল লাল জামা। শিশুটির নাম আয়লান কুর্দি। মাত্র পাঁচ বছর বয়স তার। নৌকাডুবির পর আয়লান কুর্দির দেহ সৈকতে ভেসে আসে। সিরিয়ার একদল শরণার্থী তুরস্ক হয়ে গ্রিসে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। কিন্তু নৌকাডুবিতে ১২ জন মারা যায়। আয়লান কুর্দি ছিল সেই দলে।
তুরস্কের সমুদ্রসৈকতে পড়ে থাকা আয়লানের স্মৃতি ফিরল আফগানিস্তানের (Afghanistan) বিমানবন্দরে। সেদেশে বিপন্ন শৈশব।কাবুল বিমানবন্দরে একরত্তি একটি শিশুর ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, প্লাস্টিকের দুধের ট্রেতে শুয়ে কেঁদেই চলেছে শিশুটি। কাছেপিঠে দেখা যাচ্ছে না তার মা-বাবাকে। তালিবানের (Taliban) ভয়ে হয়তো পলাতক তার মা-বাবা। গোটা দেশের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। দেশের মতোই শিশুটির ভবিষ্যতও অনিশ্চিত।
[আরও পড়ুন: ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা নয়, Afghanistan-এ আল কায়দাকে শেষ করতে গিয়েছিল America’, মন্তব্য বাইডেনের]
আফগানিস্তানের দখল এখন তালিবান জঙ্গিদের হাতে। দেশের মানুষ প্রাণ বাঁচাতে উঠে পড়েছেন বিমানের ছাদে। উড়ে যাওয়ার সময়ে বিমানের ছাদ থেকে পড়ে মারা গিয়েছেন দু’ জন। এমন ভয়াবহ ছবি দেখে শিউরে উঠেছে গোটা বিশ্ব। তালিবানরা দেশের দখল নেওয়ার পর থেকেই দেশ ছাড়ার জন্য মরিয়া সাধারণ মানুষ। রাজপথে চলন্ত গাড়ি ছেড়ে দিয়ে বিমানে ওঠার জন্য দৌড়তেও দেখা গিয়েছে অনেককে।
এর মধ্যেই আরও একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, আমেরিকার বায়ুসেনার (US military plane) একটি বিমানে ঠাসাঠাসি করে রয়েছেন অসংখ্য আফগান। প্রাণভয়ে দেশ ছাড়ছেন তাঁরা। সেই বিমানে প্রায় ৬৪০ জন যাত্রী উঠে পড়েছে বিমানে। মৃত্যুভয় এতটাই যে করোনাবিধি শিকেয় উঠেছে। তাদের মুখে নেই মাস্ক। আমেরিকার প্রতিরক্ষা বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এত সংখ্যক যাত্রী নিয়ে বিমান ওড়ানোর কোনও ইচ্ছাই ছিল না তাদের। কিন্তু প্রাণভয়ে আফগানরা বিমানে উঠে পড়ায় তাঁদের আর বিমান থেকে নেমে পড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়নি। যাত্রীবোঝাই বিমানটি উড়ে যায় কাতারের উদ্দেশে। এখনও অনেক মানুষ রয়ে গিয়েছেন আফগানিস্তানে। তাদের পরিণতি কী কেউ জানেন না।