সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চলতি গ্রীষ্ম রেকর্ড গরমের সাক্ষী হয়েছে ভারত। দাবদাহের ভয়াবহতা চরমে পৌঁছেছে। দাউদাউ গরমে গত তিন দিনে কেবল দিল্লি, নয়ডাতেই ১৫ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। এবার জানা গেল, গত সাড়ে তিন মাসে তপ্ত কড়াইয়ের ভারতে ৪০ হাজার মানুষ হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন! অন্যদিকে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দাবি, ১১ থেকে ১৯ জুনের মধ্যে গরমে ১৯২ জন ভবঘুরের মৃত্যু হয়েছে রাজধানীতে। এদিকে প্রকৃতির খামখেয়ালিপনার সাক্ষী উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলি। উত্তর ও মধ্য ভারত যখন বৃষ্টির অপেক্ষায় চাতক, তখন অসম-সহ একাধিক রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
আবহ বিজ্ঞানীরা বলছেন, এবার ভয়ংকরতম গ্রীষ্মের সাক্ষী গোটা এশিয়াই। ভারতের উত্তরাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে গড় তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রির আশপাশে থাকছে। জলবায়ুর এই পরিবর্তনের জন্য দায়ী মানব সভ্যতা। আরও ভালো করে বললে 'উন্নয়ন'। গত মার্চের পর থেকেই ক্রমশ অসহনীয় হয়েছে উঠেছে দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপামাত্রা। সূর্যের উনুনে পুড়ে আকাশে উড়তে উড়তে বহু পাখির মৃত্যু হচ্ছে। অন্যদিকে পেটের ভাত জোটাতে রাস্তায় বেরনো নরকযন্ত্রণা হয়ে উঠছে খেটে খাওয়া মানুষের জন্য। অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এই অবস্থায় হাসপাতালগুলিকে জরুরি পরিস্থিতির জন্য সতর্ক থাকতে বলেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। যদিও দিল্লির বেশ কয়েকটি হাসপাতালে জলসংকট তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: ভোটে ধাক্কার পরেই ‘অন্নদাতা’দের কল্যাণ মোদির! ১৪ শস্যের MSP বাড়াল কেন্দ্র]
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১ মার্চ থেকে ১৮ জুনের মধ্যে দেশে ৪০ হাজার মানুষ হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন! এদের মধ্যে গরমের কারণে মৃত্যু হয়েছে ১১০ জনের। যদিও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা হলিস্টিক ডেভলপমেন্টের দাবি, শুধু দিল্লিতেই ১১ থেকে ১৯ জুনের মধ্যে ১৯২ জুন ভবঘুরে গরমের বলি হয়েছেন।
আবহাওয়া অফিসগুলির বক্তব্য, চলতি মাসেও স্বাভাবিক তাপমাত্রাকে ছাপিয়ে গিয়েছে উত্তর ও পূর্ব ভারতের একাধিক শহরের তাপমাত্রা। দেশের বহু শহর 'হিট ট্র্যাপে' পরিণত হয়েছে। একই সময় অসমে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১ লক্ষ ৬০ হাজার মানুষ। প্রাণ গিয়েছে ১৫ জনের। সেখনে মাত্রাছাড়া বৃষ্টিপাত অব্যাহত। বিজ্ঞনীরা বলছেন, গোটা অবস্থার জন্য দায়ী উষ্ণায়ন। আদতে 'হিট ট্র্যাপে'র চেয়েও বড় ফাঁদ মানুষ তৈরি করেছে। উন্নয়নের নামে প্রকৃতি ধ্বংস যে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত তা ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে। যদিও গোটা বিষয়টাই এখন মানুষের হাতের বাইরে চলে গিয়েছে!