সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রকৃতি যেন ভারসাম্য হারিয়েছে। তীব্র গরমের পর এবার আকাশ ভেঙে বৃষ্টি। গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড বৃষ্টিতে কার্যত জলের নিচে বাণিজ্য নগরী মুম্বই। বৃষ্টির দাপটে সপ্তাহের প্রথম দিনেই বিপর্যস্ত জনজীবন। রাস্তায় ভেসে যাচ্ছে গাড়ি, লাইনে জল জমে যাওয়ায় বন্ধ ট্রেন চলাচল, জলের নিচে চলে গিয়েছে কার্যত গোটা শহর। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্কুল-কলেজ।
আবহাওয়া দপ্তরের রিপোর্ট বলছে, রাত্রি ১টা থেকে সকাল ৭টা মাত্র ৬ ঘন্টায় মহারাষ্ট্র ও মুম্বইয়ের একাধিক জায়গায় ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এবং গত ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টির পরিমাণ ৩১৫ মিলিমিটার। যা রেকর্ড বৃষ্টিপাত হিসেবে দাবি করা হচ্ছে। থানে, পালঘর এবং কঙ্কণ এলাকায় আজও হলুদ সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর। জলবন্দী মুম্বইয়ের একাধিক ছবি ও ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে যেখানে দেখা যাচ্ছে, রাস্তায় বেরিয়ে বিপাকে জনজীবন। কোথাও হাঁটু সমান জল তো কোথাও কোমর সমান জল। দীর্ঘ ট্র্যাফিক জ্যামে থমকে গিয়েছে গোটা শহর।
মুম্বই শহরের লাইফ লাইন হিসেবে ধরা হয় লোকাল ট্রেনকে। সেখানেও বেহাল অবস্থা। জানা যাচ্ছে, ওর্লি, বানতারা ভবন, কুর্লা ইস্ট, কিং সার্কেল এলাকা, দাদর, বিদ্যাবিহার এলাকায় জলের নিচে চলে গিয়েছে রেল ট্র্যাক। ফলে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ট্রেন পরিষেবা। যাত্রায় ট্র্যাফিক জ্যামের জেরে এখানকার বেশিরভাগ মানুষই ব্যক্তিগত গাড়ির চেয়ে ট্রেন যাত্রাকেই বেশি গুরুত্ব দেন। ট্রেন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই সমস্যা আরও গুরুতর আকার নিয়েছে। পড়ুয়াদের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে সব সরকারি, বেসরকারি স্কুল ও কলেজে ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার।
[আরও পড়ুন: পুরীতে রথ টানার সময় হুড়োহুড়িতে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু ভক্তের, আহত অনেকে]
এদিকে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, অন্তত ঘণ্টা দুয়েকের জন্য যদি বৃষ্টি বন্ধ হত তাহলেও জল নামানোর চেষ্টা করা যেন। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে তা সম্ভব নয়। এদিকে হাওয়া অফিস বলছে, সোমবার দিনভর ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হবে মুম্বইয়ে। ফলে দুর্ভোগের ছবিটা বদলের কোনও সম্ভাবনা নেই। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, মহারাষ্ট্রের পালঘর, রায়গড়, রত্নাগিরি, কোলহাপুর, সাংলি, সাতারা ঘাটকোপার, কুর্লা এবং সিন্ধুদূর্গে নামানো হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। এই সব জায়গায় জলের নিচে চলে গিয়েছে ঘরবাড়ি। উদ্ধারকার্যে নেমেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও।