সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাত পোহালেই বিশ্বকর্মা পুজো। তিনি প্রযুক্তি বিদ্যার দেবতা। উপবেদ, স্থাপত্যবেদ ও চতুঃষষ্টিকলার প্রকাশক। তবে কি না অন্য পুজোর মতোই বিশ্বকর্মা পুজোরও কিছু বিধিবিধান রয়েছে। যা পালন করলে ফল মেলে বেশি, এমনটাই মনে করেন শাস্ত্রজ্ঞরা।
কথিত আছে, যুগে যুগে ভূভারতের যতরকম সুন্দর নির্মাণশৈলী তৈরি হয়েছে, সবটাই নির্মাণ করেছেন বিশ্বকর্মা। এই দেবতার হাত ধরেই ধরিত্রীতে পুষ্পক বিমান, দ্বারকা নগর, যমপুরী, কুবেরপুরী নির্মিত হয়েছে। রামায়ণে বর্ণিত অপূর্ব শোভা ও সম্পদবিশিষ্ট লঙ্কা নগরীর নির্মাতাও বিশ্বকর্মা বলেই কথিত। তিনি উপবেদ, স্থাপত্যবেদ ও চতুঃষষ্টিকলারও প্রকাশক।
অন্যান্য দেব-দেবীর পুজোর মতোই বিশ্বকর্মা পুজোরও বিশেষ বিধি রয়েছে। সঠিক পন্থায় পুজো করলে সন্তুষ্ট হন দেবতা। ফলও মেলে বেশি। এমনটাই বলছে শাস্ত্র। এবার জেনে নেওয়া যাক কী সেই বিধি।
১. বিশ্বকর্মা পুজোয় দীপ, ধুপ, জল ও পৈতে লাগবেই। এছাড়াও পুজোর সামগ্রীতে অবশ্যই থাকা চাই চন্দন, পরামর্শ জ্যোতিষবিদদের।
২. অন্য পুজোর মতোই ফুল দিয়ে দেবতার আরাধনা করতে হবে। এক্ষেত্রে জ্যোতিষবিদরা দেবতাকে সাদা ফুল অর্পণ করার পরামর্শ দিচ্ছেন।
৩. শাস্ত্রমতে বিশ্বকর্মা দেবের পুজোয় কপালে টিকা লাগানো জরুরি। কেন? টিকার অর্থ কী? টিকার অর্থ হল, দেবতার সামনে নিরাপত্তা ও সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি রাখা। দেবতার প্রতি নিবেদিত প্রাণ হওয়ার প্রতিশ্রুতির প্রমাণ চিহ্নও টিকা। এসব কারণেই বিশ্বকর্মা পুজোয় সিঁদুরের টিকা দেওয়া শুভ।
৪. বিশ্বকর্মা পুজোর দিন বাড়িতে থাকা যন্ত্রপাতি, সরঞ্জামের প্রতি যত্নশীল হওয়া উচত, মনে করেন শাস্ত্রজ্ঞরা। সেগুলি কী? ইলেকট্রিকের কাজে লাগে, এমন সরঞ্জাম পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা বাঞ্ছনীয়। যন্ত্রপাতিগুলিকে অয়েলিং করে, ধুয়ো মুছে রাখা উচিত। তার ফলে এইসব যন্ত্রপাতি ভালোও থাকে সারাবছর। ভবিষ্যতে কাজে লাগাতে সুবিধা হয়।
৫. বিশ্বকর্মা পুজোর দিন বাড়ির যন্ত্রপাতি, রান্নাঘরে ব্যবহৃত সরঞ্জাম কাউকে দেওয়া উচিত নয়।
৬. এছাড়াও বিশ্বকর্মা দেবের পুজোর দিনে অচেনা কারোর থেকে খাবার নিয়ে ঘরে রাখতে নেই, বলছেন বহু জ্যোতিষবিদ। কেন? এতে কী হয়? এর ফলে পুজোর দিনে নেতিবাচক এনার্জি ঘরে প্রবেশ করতে পারে, যা কেউ চায় না।
৭. বিশ্বকর্মা পুজো শেষে প্রসাদ সকলকে বিতরণ করা বাঞ্ছনীয়।
এই সব নিয়ম আন্তরিক শ্রদ্ধা ও ভক্তির সঙ্গে পালন করলে দেবতা তুষ্ট হন। ফলও মেলে বেশি। এবং অবশ্যই উচ্চারণ করতে হবে মহামন্ত্র। সেটি হল, দেবশিল্পি মহাভাগ দেবানাং কার্য্যসাধক। বিশ্বকর্মন্নমস্তুভ্যং সর্বাভীষ্টপ্রদয়ক।