shono
Advertisement

গোবলয়ের তিন রাজ্যে ভরাডুবি, প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ কংগ্রেস, কেন?

রইল সম্ভাব্য পাঁচ কারণ।
Posted: 04:29 PM Dec 03, 2023Updated: 05:08 PM Dec 03, 2023

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চার রাজ্যের ভোটে কার্যত ভরাডুবি কংগ্রেসের। বিশেষ করে গোবলয়ের ৩ রাজ্যে সেভাবে দাগই কাটতে পারল না হাত শিবির। অথচ এই চার রাজ্য থেকেই ভালো ফলের প্রত্যাশা করেছিল কংগ্রেস। অন্তত ৩ রাজ্যে সরকার গড়ব, শুরু থেকেই বলে আসছিলেন কংগ্রেস নেতারা। তাহলে নির্বাচনে এই ভরাডুবি হল কেন? রইল সম্ভাব্য পাঁচ কারণ।

Advertisement

১। মোদি ফ্যাক্টর: অধুনা ভারতীয় রাজনীতিতে একটি প্রবাদ তৈরি হয়েছে, ‘মোদি হ্যায়, তো মুমকিন হ্যায়।’ ৩ রাজ্যের ফলাফলে সেই প্রবাদ আরও একবার ফলে গেল। গোবলয়ের তিন রাজ্যে যথেষ্ট কঠিন চ্যালেঞ্জ ছিল। এই তিন রাজ্যেই বিজেপি মুখ হিসাবে এগিয়ে দিয়েছিল খোদ প্রধানমন্ত্রীকে। কংগ্রেস যেখানে স্থানীয় নেতৃত্বকে সামনে রেখে ভোটে নেমেছে, সেখানে বিজেপি স্থানীয় নেতাদের সেভাবে গুরুত্বই দেয়নি। পুরো প্রচার অভিযানই চলেছে মোদিকে কেন্দ্র করে। গেরুয়া শিবিরের প্রত্যাশা ছিল, স্থানীয় নেতাদের প্রতি যাবতীয় যা অসন্তোষ সব উড়ে যাবে মোদি আসরে নামলে। হলও সেটাই। প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা, সাংগঠনিক দুর্বলতা সব ঢেকে দিলেন প্রধানমন্ত্রী। তাছাড়া গোবলয়ে বিজেপির সঙ্গে সরাসরি লড়াইয়ে কংগ্রেস যে বারবার অসহায় হয়ে যায়, সেটা আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল।

[আরও পড়ুন: কংগ্রেসের ‘সান্ত্বনা পুরস্কার’ শুধু তেলেঙ্গানা, বিজেপির জন্য বন্ধ দক্ষিণের দুয়ার]

২। অন্তর্কলহ: শচীন পাইলট বনাম অশোক গেহলট। টিএস সিংদেও বনাম ভুপেশ বাঘেল। কমল নাথ বনাম দিগ্বিজয় সিং। উত্তর ভারতের যে তিন রাজ্যে ভোট হয়েছে, তিন রাজ্যেই কোন্দলে জর্জরিত কংগ্রেস। রাজস্থানে পাঁচ বছর পর পর সরকার বদলের রীতি পালটে ফেলার একটা সুবর্ণ সুযোগ ছিল কংগ্রেসের সামনে। কিন্তু পাইলট-গেহলটের দ্বন্দ্ব শেষ পর্যন্ত হাত শিবিরের জন্য আত্মঘাতী হয়ে গেল। গেহলটকে মুখ করায় সেভাবে প্রচারই করলেন না পাইলট। ফলে গুর্জর ভোটে ভাগ বসাল বিজেপি। আবার ছত্তিশগড়ে মুখ্যমন্ত্রী ভুপেশ বাঘেল এবং উপমুখ্যমন্ত্রী টিএস সিংদেওয়ের লড়াই সর্বজনবিদিত। তাঁরা দুজনেই লড়েছেন, তবে একে অপরের হাত ধরে নয়। একে অপরের বিরুদ্ধে। মধ্যপ্রদেশেও শেষবেলায় কমল নাথ এবং দিগ্বিজয়ের মতো বিরোধ প্রকাশ্যে এসেছিল।

৩। একলা চলোর মাশুল: পাঁচ রাজ্যের ভোটে ইন্ডিয়া জোটকে কার্যত উপেক্ষা করে গিয়েছে কংগ্রেস। কোথাও প্রচারে ইন্ডিয়া নেতাদের ডাকা হয়নি। মধ্যপ্রদেশ-রাজস্থানে সমাজবাদী পার্টি- সিপিএমের মতো তথাকথিত ছোট দলগুলিকে পাত্তাই দেয়নি কংগ্রেস। এমনকী ইন্ডিয়া জোটের নেতারা ভোপালে যৌথ জনসভা করতে চেয়েছিলেন। সেটাকেও পাত্তা দেননি কমল নাথ। যার ফল ভুগতে হল হাত শিবিরকে।

৪। দেদার খয়রাতি ও দুর্নীতি: এ বলে আমায় দেখ, ও বলে আমায় দেখ। ভোটের আগে যে দুই রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস, সেই দুই রাজ্যেই ব্যাপক খয়রাতি চালিয়ে গিয়েছে। মধ্যপ্রদেশেও ব্যাপক প্রপ কিন্তু মজার কথা হল, এই খয়রাতিতে কংগ্রেসকেও টপকে গিয়েছে বিজেপি। যা বিরাট ফ্যাক্টর হয়েছে চার রাজ্যেই। তাছাড়া মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তিশগড়ে কংগ্রেস অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসেও ভুগেছে। কংগ্রেস নেতারা ধরেই নিয়েছিলেন, নিজেরা মাঠে না নামলেও জনতা তাঁদের জিতিয়ে দেবে। বাস্তবে সেটা হয় না। আবার যে দুই রাজ্যে কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল, সেই দুই রাজ্যে দুর্নীতির অভিযোগও ছিল ব্যাপক।

[আরও পড়ুন: ‘সবচেয়ে বড় অপয়া’, তিন রাজ্যে বিজেপি এগোতেই গেরুয়া নেতার খোঁচা রাহুলকে]

৫। রাহুলের দিশাহীন প্রচার: কংগ্রেসের প্রচারেও এবার সঠিক দিশা ছিল না। কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃত্বে একসুরে কথা বলেছেন, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আরেক সুরে কথা বলেছেন। রাজ্য নেতৃত্ব যেখানে রাজ্যের ইস্যু নিয়ে সরব হয়েছেন, সেখানে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অর্থাৎ রাহুল গান্ধী এসে বলেছেন জাতিগত জনগণনার কথা। যা আমজনতার বোধগম্য হয়নি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement