সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যুদ্ধের কালো মেঘে আকাশ অন্ধকার মধ্যপ্রাচ্যের। যে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল গাজায়, তা এবার লেবানন হয়ে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে। এই পরিস্থিতিতে ৪৫ বছর পরে সম্মুখ সমরে মুখোমুখি দুই দেশ ইরান ও ইজরায়েল। এই মহা-সংঘাতই এই অঞ্চলের সবচেয়ে ভয়ংকর সংঘাত হয়ে উঠতে পারে বলে মত ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। ফলে প্রশ্ন উঠছে, কী হতে চলেছে আগামিদিনে? পাশাপাশি এই প্রশ্নও উঠছে, ইজরায়েলের রণনীতি কী হতে পারে? ইরানই বা কী করবে?
প্রথমে ইজরায়েলের কথায় আসা যাক। মার্কিন স্যাটেলাইটের নজরদারি এবং ইজরায়েলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের সাহায্য নিয়ে, ইজরায়েলের 'টার্গেট' হতে পারে তিন দিকে। প্রথমত ইরানের সেনা ঘাঁটিগুলোয় হানা দিতে পারে নেতানিয়াহুর দেশ। বিশেষত সেই সব ঘাঁটি যেখান থেকে শক্তিশালী ব্যালিস্টিক মিসাইলগুলো ছোড়ে ইরান। ফলে সেই সব লঞ্চ প্যাড, কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার ইত্যাদি গুঁড়িয়ে দেওয়া তেল আভিভের প্রাথমিক লক্ষ্য হতে পারে।
আর একটি বড় 'টার্গেট' পরমাণু কেন্দ্রগুলো। আইএইএ সূত্রের দাবি, অসামরিক পারমাণবিক শক্তির জন্য ইউরেনিয়াম যেখানে ২০ শতাংশর বেশি খনন করার দরকার নেই, সেখানে ইরান অনেক বেশি ইউরেনিয়াম ব্যবহার করছে। যার থেকে সন্দেহ গাঢ় হচ্ছে যে, পরমাণু বোমা তৈরি করছে তেহরান। কাজেই সেই ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়ে ইরানকে বড় ঝটকা দিতে পারে ইজরায়েল।
পাশাপাশি হামলা হতে পারে তেলের খনিতেও। এখানে আঘাত করতে পারলে ইরানের আর্থিক পরিকাঠামো ভেঙে পড়তে পারে। তাছাড়া এই হামলায় বহু সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হবে। কোনও সেনা ঘাঁটি বা পরমাণু কেন্দ্রের চেয়ে অনেক বেশি। তাই এটাও ইজরায়েলের অন্যতম লক্ষ্য।
ইরান জানে, তাদের মিসাইল হামলার পর প্রত্যাঘাতের সম্ভাবনা জোরাল। তবে সেক্ষেত্রে তারা ফের আঘাত হানতে পারে তেল আভিভে। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের দাবি, যা হয়েছে তা কেবলই হিমশৈলের চূড়া মাত্র। আগামিদিনে এর চেয়েও ভয়াল হামলা করবেন তাঁরা। যদি ইজরায়েল ইরানে হামলা চালায়। তবে একথাও মানতে হবে, ইরানের পক্ষে ইজরায়েলকে সামরিক শক্তিতে হারানো অত্যন্ত শক্ত। কেননা তাদের বিমানঘাঁটিগুলো সেকেলে। তার উপরে দীর্ঘদিন পশ্চিমি নিষেধাজ্ঞার কারণে অবস্থা তথৈবচ। কিন্তু তেহরানের আসল শক্তি ব্যালিস্টিক মিসাইল-সহ ক্ষেপণাস্ত্রের ভাণ্ডার। তার সঙ্গে রয়েছে তাদের নানা ছায়া গোষ্ঠী। সব মিলিয়ে ইরানের শক্তিও প্রবল। আর সেই কারণেই দুই দেশের সংঘাত ঘিরে মধ্যপ্রাচ্যে ঘনাচ্ছে যুদ্ধের কালো মেঘ।