shono
Advertisement

থ্রিলার-আবেগের মিশেলে বাণিজ্যিক শর্ত পূরণ করেও সুন্দর, পড়ুন ‘রক্তরহস্য’ ছবির রিভিউ

প্রেক্ষাগৃহে যাওয়ার আগে জেনে রাখুন।
Posted: 01:23 PM Oct 22, 2020Updated: 04:44 PM Oct 22, 2020

নির্মল ধর: প্রথম ছবি ‘রেনবো জেলি’তে অভিনব বিষয় ও প্রয়োগ ভাবনার প্রমাণ রেখেছিলেন তরুণ পরিচালক সৌকর্য ঘোষাল (Soukarya Ghosal)। এবার বড় বাণিজ্যিক হাউসের থাবায় পরে তাঁর চিত্রনাট্যের কলমে এসে পড়েছে অনেক সমঝোতার প্রলেপ। এটা মেনেও তিনি তাঁর প্রয়োগ শৈলীর ওপর তেমন অতি রং চড়ানোর চেষ্টা করেননি, এটাই ছবির প্রধান গুণ। ভালবাসা(সর্ব অর্থেই) এবং মাতৃত্ব, দু’টি চিরন্তন আবেগকে সৌকর্য ছবির চিত্রনাট্যের মেরুদণ্ড করেও ‘রক্তরহস্য’কে (Rawkto Rawhoshyo) অতিনাটকীয় এবং গদগদে করে তোলেননি। এক ধরনের পরিচ্ছন্নতা ও পরিশীলিত মুড প্রায় সারাক্ষণ বজায় রেখেছেন। শুধমাত্র একটি জায়গা হাস্যকর ঠেকেছে, ভিলেনের সঙ্গে পুলিশের ‘চোর পুলিশ’ খেলার দৃশ্যটি।

Advertisement

যতদূর জানি, গল্পের আইডিয়া বিদেশী ছবির ছোঁয়ায়। সৌকর্য সেটিকে খাঁটি বাঙালিয়ানার সাজিয়েছেন। চরিত্রগুলোর পারস্পরিক বাঁধুনি এবং বেড়ে ওঠায় সামঞ্জস্য রয়েছে। ভাইয়া (ঋতব্রত) যে স্বর্ণজার (কোয়েল) বাড়ির পরিচারিকার (কাঞ্চনা) ছেলে,  সেটা বোঝাই যাইনি শেষ মুহূর্তের আগে। যেন ওরা সত্যিই ভাইবোন। ছবির প্লট অনেকটাই আবেগ নির্ভর, মাঝপথ থেকে থ্রিলার এসে ঢুকে পরে। আন্তরিক ভাবে পরোপকারী স্বর্ণজা  প্রেমিক সাম্যর স্ত্রী সন্তানধারণের অপারগতা জানবার পর নিজের গর্ভ ধার দেয়, এককথায় সে হয় সারোগেট মাদার। অথচ সে নিজে বিরল রক্তের অধিকারী। পারিবারিক ডাক্তারকাকু(শান্তিলাল) সেই তথ্য জেনেও খুব একটা আপত্তি করেন না। শিশু সন্তান পরাগ(শ্রীয়াংশ) হবার পর একদিন সকালে কাউকে না জানিয়েই সন্তানসহ প্রেমিক বাবা ও মা উধাও হয় তাঁদের বাড়ি থেকে। এরই মধ্যে টিভিতে সংবাদ প্রচারিত হয় বিরল রক্তের এক শিশুপাচার নিয়ে। আবিষ্কার হয় শিশুটি স্বর্ণজারই এবং সাধারণ দম্পতি সেজে থাকা সাম্য ও স্ত্রী খেয়া(বাসবদত্তা) দু’জনেই আন্তর্জাতিক শিশু ও রক্ত পাচারকারীদের দলের। নিজের ছেলেকে ফিরে পেতে স্বর্ণজা পুলিশের দ্বারস্থ হলে চিত্রনাট্য বদলে যায় থ্রিলার মোডে।

[আরও পড়ুন: চণ্ডীগড় থেকে নতুন ছবির ঘোষণা, ‘আশিকি’র মেজাজে ভিন্ন লুকে আয়ুষ্মান]

এবার টানটান রহস্যের সঙ্গে জুড়ে যায় একরাশ ঘটনা। যেগুলোর যোগাযোগ ও সম্পর্ক খুব একটা জোরাল নয়। তবুও শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত পৌঁছানোর কাজটি সৌকর্য বাণিজ্যিক ঘরানার স্টাইলেই করেছেন। এসেছে চেজিং, নির্মীয়মাণ বাড়ির ওপর ভিলেন ও পুলিশের গুলির লড়াই এবং শিশুকে বাঁচিয়ে এই ছবির কথক ভাইয়ার আত্মত্যাগ।

সৌকর্যর সাবলীল পরিচালনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে প্রতিটি শিল্পীই স্বচ্ছন্দে স্বাভাবিক অভিনয়ে বাণিজ্যিক শর্ত পূরণ করেও সুন্দর হতে পেরেছেন। প্রথম নাম কোয়েল মল্লিকের (Koel Mallick)। প্ৰায় প্রসাধনহীন চেহারায় তিনি খুবই স্বাভাবিক। স্বর্ণজা পেশায় রেডিও জকি। সেখানেও তিনি বেশ সপ্রতিভ। আবার সন্তানের মা হয়ে সুন্দর মমতায় জড়ানো। তাঁর প্রতিবাদী ও লড়াকু মেজাজটাও স্বচ্ছন্দ। ভাইয়ার চরিত্রে ঋতব্রত, ছোট্ট চরিত্রে লিলি চক্রবর্তী, কাঞ্চনা মৈত্রও ভাল কাজই করেছেন। তবে বাসবদত্তা ও চন্দন রায় সান্যাল দর্শকের নজর কাড়েন তাঁদের স্বাভাবিক ও সহজ অভিনয়ের গুণে। ছোট্ট পরাগ চরিত্রের শিল্পী শ্রীয়াংশ সরকারের প্রায় নির্বাক উপস্থিতি ভাল লাগিয়ে দেয় মিষ্টি উপস্থিতির জন্য। আরেকজনের নাম অবশ্যই বলতে হয় – পুলিশ অফিসারের চরিত্রে জয়রাজ ভট্টাচার্য। রক্ত ও রহস্যের ধাঁধায় সৌকর্যের এই ছবি একই সঙ্গে টানটান থ্রিলার ও দর্শক খুশি করার মশলায় চোবানো। যা তাঁর আগের ছবি ‘রেনবো জেলি’ থেকে যোজন দূরে।

[আরও পড়ুন:করোনা আক্রান্ত ‘সারেগামাপা’র চার বিচারক, ধন্দ শুটিং নিয়ে! কী বললেন মনোময় ভট্টাচার্য?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement