সুলয়া সিংহ: কথায় বলে যার শেষ ভাল তার সব ভাল। সরাসরি ভাল না বললেও ‘হ্যালো’র (Hello 3) শেষটা খুব একটা মন্দ হল না। একগুচ্ছ রহস্যের জট ছাড়ল শেষ পাতে। আর তাতেই নন্দিতার পাশাপাশি প্রশ্নের জাল থেকে মুক্তির স্বাদ পেলেন দর্শকও।
হ্যালোর প্রথম সিজনটি যখন এসেছিল, তখন দেশের বাজারে সবে সবে পথচলা শুরু হয়েছে ওয়েব প্ল্যাটফর্মের। তখন মোবাইলের পর্দায় গ্ল্যামারাস প্রিয়াঙ্কা সরকার ও পারফেক্ট বাঙালি নারী রাইমা বেশ ভালই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। তবে নীনার ষড়যন্ত্রে মার-প্যাঁচ দেওয়া দ্বিতীয় সিজনটি তেমন মন ছুঁতে পারেনি। কিন্তু গল্পের মোড় কোন দিকে ঘোরে, নন্দিতা আদৌ নীনার ভালবাসা উপলব্ধি করে কিনা, সেসব দেখারই অপেক্ষা ছিল। যার শুরুটা একেবারেই ভাল লাগেনি। কথায় বলে, অতি সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট। ঠিক তেমনই তৃতীয় সিজনের প্রথমে অকারণ অতিরিক্ত রহস্য রীতিমতো বিরক্তিকরই যেন হয়ে উঠেছিল। প্রথম ছ’টি পর্ব বেশ কষ্টসাধ্যভাবেই দেখে শেষ করতে হয়। তারপর মুক্তি পায় ফিনালে সিজনের শেষ ছ’টি পর্ব। যেখানে ধীরে ধীরে একের পর এক রহস্য উন্মোচিত হতে থাকে।
[আরও পড়ুন: নতুন ছবির জন্য রূপ বদলে ফেললেন আয়ুষ্মান, ‘লুপ লপেটা’র ফার্স্ট লুকে শৌচালয়ে তাপসী]
রহস্য-রোমাঞ্চ তৈরিতে একেবারে গোয়েন্দা কাহিনিকেও হার মানাতে চেয়েছেন পরিচালক সৌমিক চট্টোপাধ্যায় ও অনির্বাণ মল্লিক। কিন্তু তার পরিবেশনে বহু গলদ রয়ে গিয়েছে। বারবার মনে হচ্ছে, গল্পের স্বার্থে চরিত্র নয়, চরিত্রের স্বার্থে গল্প। মানে জীবনে ওই রহস্যগুলোর জট ছাড়ানো ছাড়া তাদের আর কোনও কাজ নেই। পরকীয়া হোক বা কাউকে বোকা বানানো, কিংবা উপার্জনের রাস্তা- সবকিছুই বড় অনায়াস, সহজলভ্য। নিঃশব্দে যেমন নামী স্কুলের শিক্ষক হওয়া যায়, আবার তেমনই চোখে ধুলো দিয়ে বড় পাবের বারটেন্ডার হওয়াও বাঁয়ে হাত কা খেল। পুলিশও পরিচালকের মর্জিতেই সক্রিয়। আর সেখানেই সিরিজটি বাস্তবের ফ্লেভার হারিয়েছে।
‘ভিলেন’ নীনার বেড়াজাল ভাঙতে নন্দিতাকে কী কী করতে হবে কিংবা সাহেব কীভাবে সিরিজে গুরুত্বপূর্ণ একটি ভূমিকায় ধরা দিলেন, সেসব না হয় নিজেই দেখবেন। তবে একটা কথা বলে রাখা ভাল, রাইমার (Raima Sen) একইরকম অভিনয় আর অভিব্যক্তি দেখে কিন্তু বিরক্ত হতে পারেন। সাহেবও যে কেন এত কাঠখোট্টা, বোঝা দায়। ‘ভিলেন’ প্রিয়াঙ্কাই (Priyanka Sarkar) যা একটু গল্পকে টেনে নিয়ে গিয়েছেন। জয় সেনগুপ্ত নিজের জায়গায় ঠিকঠাক। সিরিজের ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোরও ভীষণ একঘেয়ে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম যে গতিতে এগিয়ে চলেছে, তাতে পরিবেশনার মান আরও উন্নত না হলে হারিয়ে যেতে হবে ‘হ্যালো’র মতো তারকাখচিত সিরিজকেও।