নির্মল ধর: বছর তিন-চার আগে ‘স্ত্রী’ নামের একটা হরর-কমেডি দেখেছিলাম মনে আছে। হার্দিক মেহতার এই নতুন ছবি ‘রুহি’ (Roohi) দেখতে বসে দর্শকের ওই ‘স্ত্রী’ ছবিটির কথা বারবার মনে পড়বেই। না, এটা ওই ছবির নকল কখনওই নয়, কিন্তু গপ্পের বীজ সম্ভবত একই। মৃগদীপ লাম্বা ও গৌতম মেহরার চিত্রনাট্য সেই বীজ থেকে একটা মনোহারী ছবির কাঠামো তৈরিই করতে পারেননি, সুতরাং হার্দিক আর কী করবেন! তাঁর অবস্থা “বেচারি”র মতোই। দেহাতি হিন্দি ভাষাটাও অনেক সময় সাধারণ দর্শকের কাছে সুবোধ্য নয়। ফলে সংলাপের মজাটিও তেমন যুতসই হয়নি।
কাল্পনিক গ্রাম বাগগাদপুরের দুই তরুণ ভাওরা (রাজকুমার) আর কটনি (বরুণ শর্মা) পেশায় সাংবাদিক হলেও উপরি কাজ “মহিলা হরণ”! এবং তারপর সেই মহিলার সঙ্গে পছন্দের ছেলের বিয়ে দেওয়া। হ্যাঁ, সেটাই নাকি সেই অখ্যাত গ্রামের রেওয়াজ! আজকের অ্যান্ড্রয়েড ফোন এবং কম্পিউটার শাসিত সময়েও। এরাই একবার তুলে আনে বিবাহযোগ্য তরুণী রুহিকে (জাহ্নবি)। কিন্তু তার মধ্যে যে আরও একটি সত্ত্বা রয়েছে সেটা তো জানা ছিল না। বিয়েটা পিছিয়ে যাওয়ায় রুহিকে লুকিয়ে রাখা হয় এক পোড়ো বাড়িতে। সেখানেই ভাওরা আবিষ্কার করে রুহির দ্বিতীয় রূপকে। যার চেহারায় পেত্নীর ছাপ! নাম তার তখন আফজা। মাঝেমাঝেই এই রুহি আর আফজার আবির্ভাব ঘটলে ভাওরা আর কাটনির মাঝে প্রেমরোগ ধরা পড়ে।
[আরও পড়ুন: দলছুটরা কান ধরে ফিরবে, ২ মে’র পর মিলিয়ে নেবেন, প্রচারে বিস্ফোরক কাঞ্চন]
এনিয়ে দু’জনের মধ্যে ক্ষণিকের ভুল বোঝাবুঝি ঘটলেও, শেষপর্যন্ত সব ঘটনার পরিসমাপ্তি ঘটে বাণিজ্যিক সিনেমার কৌশলেই। কিন্তু সেই পরিণতিতে যাওয়ার পথটি না পাওয়া গেলেও হরর দেখার রোমাঞ্চ বা বুদ্ধিমান কমেডির কোনও ছোঁয়া। অথচ, বড় বড় কথা বলার বেলায় কোনও খামতি নেই। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার প্রতি সমালোচনা, ভূত তাড়ানোর ব্যবসাকে খোঁচা দেওয়া, রয়েছে নারীবাদী বক্তব্যও। কিন্তু শেষপর্যন্ত হলটা কী! অশ্বডিম্ব!
‘স্ত্রী’ ছবির সঙ্গে তুলনামূলক আলোচনায় দর্শক কিছু খামতি দেখতেই পারেন। ওই ছবির তুলনায় ‘রুহি’ কোনও দিক থেকেই উপভোগ্য নয়, বরং বিরক্তিকর ও একঘেয়ে।
একমাত্র মুখরক্ষা করেছেন জাহ্নবি কাপুর (janhvi Kapoor)। তাঁর মুখে সংলাপ কম, কিন্তু বেশিরভাগ সময় নির্বাক থেকেও তিনি দু’টি সত্ত্বার মানসিক অবস্থাকে প্রকাশ করতে সক্ষম। রাজকুমার (Rajkumar Rao) তাঁর নিজস্ব স্টাইলে কমেডির ছোঁয়ায় মন্দ নন। তবে নতুন কিছু পাওয়া গেল না। বন্ধুর চরিত্রে বরুণ কিন্তু সমানে সমানে চালিয়ে গিয়েছেন। না, গান নিয়ে আলাদা কিছু বলার নেই। কিছু কমিক সিচুয়েশনে পুরনো হিন্দি গানের ব্যবহার মন্দ লাগেনি। কিন্তু, পুরো গল্প যেখানে বোধবুদ্ধিহীন, সেখানে ছবি আর কতটুকু এগোতে পারে!