সুপর্ণা মজুমদার: মোদি জমানায় একাধিক সিনেমার বিরুদ্ধে ‘প্রোপাগান্ডা’ তথা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণার অভিযোগ উঠেছে। এই তালিকায় যেমন ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ রয়েছে, তেমনই রয়েছে ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’। এবার কাশ্মীরের আরও এক গল্প সিনেমার পর্যায়। নাম ‘আর্টিকল ৩৭০’ (Article 370)। খোদ প্রধানমন্ত্রী জম্মু-কাশ্মীরের মাটিতে দাঁড়িয়ে এই সিনেমা নিয়ে কথা বলেছেন।
সিনেমার নাম এবং ট্রেলারেই গল্প খানিকটা আন্দাজ করা যায়। কীভাবে জম্মু ও কাশ্মীর (Jammu and Kashmir) থেকে ৩৭০ ধারা বিলোপের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়, তাই দেখানো হয়েছে আদিত্য সুহাস জাম্ভালে পরিচালিত এই সিনেমায়। ছবির অন্যতম প্রযোজক এবং চিত্রনাট্যকার আবার আরেক আদিত্য। আদিত্য ধর, যাঁর পরিচালনায় তৈরি হয়েছিল ‘উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’। এই কানেকশনেই চলে আসে নায়িকা ইয়ামি গৌতমের নাম। ‘উরি’তে অভিনেত্রীকে পার্শ্ব চরিত্র হিসেবে দেখা গিয়েছিল। তবে ‘আর্টিকল ৩৭০’ ছবিতে তিনিই কেন্দ্রীয় চরিত্রে।
সিনেমা শুরু হয় বুরহান ওয়ানির এনকাউন্টারের ঘটনায়। সিনিয়রের নির্দেশ না মেনে এই এনকাউন্টারের নেতৃত্ব দেয় গোয়েন্দা দপ্তরের ফিল্ড অফিসার জুনি (ইয়ামি গৌতম)। তাতেই অশান্ত হয়ে ওঠে উপত্যকা। শাস্তি হিসেবে জুনি পায় ট্রান্সফার। দিল্লি চলে যেতে হয় তাকে। সেখানে আবার জুনির দিকে নজর পড়ে প্রধানমন্ত্রীর অফিসের আধিকারিক রাজেশ্বরীর (প্রিয়ামণি)। তার নির্দেশেই আবার NIA টিম নিয়ে উপত্যকায় ফেরে জুনি। শুরু হয় এক টপ সিক্রেট মিশন।
[আরও পড়ুন: ‘বাবুরাম সাপুড়ে’ সৃজিত! আমাজন থেকে আনা পাইথন পুষছেন পরিচালক ]
বাস্তব অবলম্বনে সিনেমা তৈরির জন্য সৃজনশীল স্বাধীনতা পরিচালক আগেই নিয়ে নিয়েছেন। সুতরাং সেই বিষয়ে আর কীই বা বলার থাকতে পারে! তার চেয়ে বরং অভিনয়ের কথায় আসা যাক। ইয়ামি গৌতম (Yami Gautam) যাবতীয় অভিনয় চোখ দিয়েই করার চেষ্টা করেছেন। ফলে সিনেমার বেশিরভাগ সময়ে তাঁর বিস্ফারিত নেত্রই দেখা গিয়েছে। প্রিয়ামণি একজন ব্যুরোক্র্যাটের গাম্ভীর্য বজায় রাখার চেষ্টা করেছেন ঘাড় শক্ত রেখে। মুখের অভিব্যক্তি খুব একটা দেখা গেল না। বাকি চরিত্রদের মধ্যে কেবল নজর কাড়লেন চৌহানের চরিত্রে অভিনয় করা বৈভব তত্ত্বওয়াদি।
ছবিতে প্রধানমন্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন ছোটপর্দার ‘রামচন্দ্র’ অর্থাৎ অরুণ গোভিল। কিরণ কর্মারকার হয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রস্থেটিক ব্যবহার করে এই দুই চরিত্রকে ভরসাযোগ্য করে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। খালিস্তানি, মাওইস্ট, ট্রাইবাল সেপারেটিস্টের মতো শব্দ এই সিনেমায় ব্যবহার করা হয়েছে। স্টোন পেল্টিংয়ের কথা বলা হয়েছে, কিন্তু প্যালেট গানের ক্ষতর কথা কী সেভাবে বলা হল? জুনি একজন প্রশিক্ষিত যোদ্ধা হওয়া সত্ত্বেও কোনও গুলির লড়াইয়েই হেলমেট পরার প্রয়োজন বোধ করল না? ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির একজন টিম যে লিড করতে পারে সেই জুনিই আবার ব্যক্তিগত আক্রোশে কেন জালালকে (রাজ জুৎসি) চোখ রাঙাবে? এমন বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গেল না ছবি দেখে। তবে হ্যাঁ, রাজ্যসভার কূটনৈতিক লড়াই দেখতে ভালো লেগেছে। আর ভালো লেগেছে সিনেমাটোগ্রাফার সিদ্ধার্থ দীনা ভাসানির ক্যামেরায় কাশ্মীর দেখতে।
ছবি- আর্টিকল ৩৭০
অভিনয়ে- ইয়ামি গৌতম, প্রিয়ামণি, অরুণ গোভিল, বৈভব তত্ত্বওয়াদি, স্কন্ধ ঠাকুর, অশ্বিণী কউল, কিরণ কর্মারকার, দিব্যা শেঠ শাহ, রাজ জুৎসি, সুমিত কউল, রাজ অরুণ, অসিৎ গোপীনাথ রেডিজ, অশ্বিণী কুমার, ইরাবতী হারষে মায়াদেব
পরিচালনায় – আদিত্য সুহাস জাম্ভালে
[আরও পড়ুন: কলকাতায় ‘শাস্ত্রী’র সেটে মিঠুনকে দেখতে বলিউডের মধুর ভান্ডারকর, দিলেন স্বাস্থ্যের খবরও ]