সুকুমার সরকার, ঢাকা: শাকিব আল হাসানের মতো বিশ্বমানের ক্রিকেটার কালীপুজোয় যাবেন নাকি মসজিদে যাবেন, তা সম্পূর্ণ তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়। এর জন্য কেউ তাঁকে হত্যার হুমকি দিতে পারে না। মঙ্গলবার একথা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হল বাংলাদেশের হাই কোর্টের পক্ষ থেকে।
গত বছর কালীপুজোর (Kali Puja 2020) ঠিক আগে গত ১২ নভেম্বর বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে গাড়িতে করে ভারতে আসেন শাকিব। তারপর সন্ধেবেলা কাঁকুড়গাছিতে পরেশ পালের কালীপুজো উদ্বোধনে যান। তারপর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসতে থাকে মৌলবাদীরা। ফেসবুক লাইভে দা উঁচিয়ে শাকিবকে গলা কেটে হত্যার হুমকি দেয় মহসিন তালুকদার নামের এক সিলেটের এক যুবক। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় সেই ভিডিও। তারপরই যুবককে গ্রেপ্তার করে করে বাংলাদেশের পুলিশ।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশে গুলির লড়াই, সংঘর্ষে খতম ২ ইয়াবা মাদক পাচারকারী]
মঙ্গলবার সেই মহসিনের জামিন আবেদনের ভারচুয়াল শুনানি হয় বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের বেঞ্চে। শুনানিতে আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয়, “একজন বিশ্বমানের ক্রিকেটার কালীপুজোয় যাবে নাকি মসজিদে যাবে, এটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। এ জন্য কেউ তাঁকে হত্যার হুমকি দিতে পারে না।”
উল্লেখ্য, ঘটনার পরই পরিস্থিতির চাপে পড়ে কালীপুজোর (Kali Puja 2020) উদ্বোধন করার জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন বাংলাদেশের অলরাউন্ডার। তাঁর সেই অবস্থানের বিরোধিতা করেছিলেন তসলিমা নাসরিন (Taslima Nasrin)। ক্ষমা চাওয়ার ভিডিও দেখে লজ্জা পেয়েছেন বলে ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছিলেন ‘বিতর্কিত’ লেখিকা। লিখেছিলেন, “আমার বিরুদ্ধে নব্বই সাল থেকে টানা তিন বছর মৌলবাদী আন্দোলন চলেছিল, আমাকে হত্যা করার জন্য উন্মাদ হয়ে উঠেছিল লাখো মৌলবাদী, নির্বিঘ্নে আমার মাথার মূল্য ঘোষণা করেছিল জিহাদি নেতারা — কই আমি তো একবারও ভাবিনি আমাকে ক্ষমা চাইতে হবে! সরকার আমার বিরুদ্ধে মামলা করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল, আমাকে দু’মাস জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অন্তরীণ থাকতে হয়েছিল, কই একবারও তো মনে হয়নি ক্ষমা চেয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে হবে আমাকে? আমার শুধু মনে হয়েছিল, আমি কোনও অন্যায় করিনি, আমার ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। ক্ষমা যদি কারও চাইতেই হয়, ওদের চাইতে হবে আমার কাছে। “