shono
Advertisement

কল্পনার স্বাদে বাস্তবের ফোড়ন মিশিয়ে কেমন হল ‘সাহেবের কাটলেট’? পড়ুন রিভিউ

পুজোর অবসরে হলে যাওয়ার আগে জেনে রাখুন।
Posted: 02:57 PM Oct 23, 2020Updated: 03:04 PM Oct 23, 2020

নির্মল ধর: শুরু থেকে শুরু করা যাক। রান্নাঘরে রাঁধুনি সেজে ছবির পরিচালক-কোরিওগ্রাফারের ভূমিকায় অঞ্জন দত্ত (Anjan Dutt) শুনিয়েছেন বিচিত্র এক রেসিপির মাধ্যমে। “গাঁজাতে দম দিলে হয় সিনেমা” ধরনের একটি লাইন। তাঁর এই নতুন ছবি ‘সাহেবের কাটলেট’ (Saheber Cutlet) অনেকটাই সেরকম। আদতে তুমুল মজা আর গঞ্জিকার বিজ্ঞাপনের মিশেলে তৈরি।

Advertisement

নায়ক রণ এক নামী শেফ। তাঁর বড়ই সাধ প্যারিস গিয়ে নিজের একটা রেস্তরাঁ খুলবে। সেজন্য পৈতৃক সূত্রে পাওয়া চন্দননগরের বাড়ি বিক্রির উদ্দেশ্য নিয়েই দু’দিনের জন্য ‘চৌধুরী’ নিবাসে তাঁর আগমন। কিন্তু সেই বাড়িতে তখন বেশ জমিয়ে বাস করছে

মস্তান পটা, তার বোন খেদি, ভাই ববি আর তাদের উদ্বাস্তু বাবা। প্রথমটায় কেউ তাকে পাত্তাই দেয় না। এমনকী কানা উকিল এসে হম্বিতম্বি করলেও না। হঠাৎই সেখানে আবির্ভাব ঘটে সোলারিস (অঞ্জন) নামের এক  অদ্ভুতুড়ে মানুষের। সেও ওই বাড়ির একটা অংশ দখল করে আছে। এই সোলারিসই রণকে পরামর্শ দেয় ট্যুরিস্ট স্পট চন্দননগরে একটা অন্যরকম রেস্তরাঁ খুলতে,  যেখানে ওই উদ্বাস্তু পরিবারের সকলকেই কাজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হবে। তারপর কোর্ট থেকে দখলের নোটিশ এলেই সব্বাইকে ভাগিয়ে রণ পুরো বাড়িটা পেয়ে যাবে।

[আরও পড়ুন: কমে গিয়েছে মস্তিষ্কের চেতনা, ডাক্তারদের দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে সৌমিত্রবাবুর স্নায়বিক অবস্থা]

যেমন পরামর্শ তেমন কাজ! মাত্র দু-তিন দিনের মধ্যেই গড়ে ওঠে রেস্তরাঁ। সাধারণ ডিমের অমলেট বেচে ৫০০ টাকা রোজগার, পরের দিনও একইরকম। ঠিক হয় পরেরদিন খাবারের সঙ্গে গানেরও জমপেশ আসর বসানো হবে। দলে আবার যোগ দেন স্থানীয় পুলিশ কাম গাইয়ে অম্বরীশের চরিত্র। শেফ রণর সহকারী তরুণী খেদি। ম্যানেজার মস্তান পটা। আর তার বাবা হাফ অংশীদার। অর্থাৎ পুরো বাড়ি জুড়ে সে এক হইচই কাণ্ড! সবটাই হাসি আর মজায় দর্শককে মাতিয়ে রাখার জন্য।

ছবির কাঠামোটাই ‘ফার্স’ (Farce) ঘরানার। বাস্তব-অবাস্তব, কল্পনার এক জগাখিচুড়ি পাকানো। তবে সবটাই উপভোগের জন্য। পুজোর আনন্দের ঘাটতি পূরণে দু’ঘন্টার মজা পেতে এই ছবি। হ্যাঁ, সেই মজার সঙ্গে আজকের সময়কে নিয়ে ব্যঙ্গ করতেও অঞ্জন ছাড়েননি। আবার নিজের মনের মত ননসেন্স গানের কিছু লাইনও যোগ করেছেন। আর এখানেই অঞ্জন দত্তের নিজস্ব ঘরানাটি বেরিয়ে পরে। সুতরাং একটু শিক্ষিত দর্শকের কাছে ‘গাঁজা’র দমটা মন্দ লাগে না। বিশেষ করে শেষ পর্বে পুরনো বাংলা গানের লাইন দিয়ে সুন্দর এক মেডলি তৈরির ব্যাপারটা। ছবিটা এখানেই শেষ হলে ভাল হতো। এরপরেও রণর দাদুর ছবি আবিষ্কার ও আবেগের কান্নাকাটি দেখিয়ে ছবির স্মার্টনেসটা কেমন নেতিয়ে পরল যেন। অঞ্জনের এই কমেডি ছবির রান্না তৈরিতে দারুণ রেসিপির কাজ করেছেন শিল্পীরা। রণর চরিত্রে অর্জুন চক্রবর্তী (Arjun Chakraborty) তো বটেই, পাশে দাঁড়িয়ে নতুন মুখ শ্রীতমা, সুপ্রভাত দাস, অম্বরীশ, কাঞ্চন, অনিন্দিতা, সুজন, মন্টু সক্কলে মিলে ‘সাহেবের কাটলেট’কে সুস্বাদু ও সুপাচ্য করে তুলেছে। এবং সুরকার নীল দত্তর কথা আলাদা করে জানাতেই হবে। বাবার যোগ্য  উত্তরসূরি নীল। বাংলা পুরনো গানের সঙ্গে “উই শ্যাল ওভারকাম” বা “ইট’স মাই ওয়ে অফ সেইং গুডবাই” গানগুলোর লিরিক্সকে ব্যবহার করা মজারু সুর দেওয়া কম কথা নাকি! এবারের পুজোর সেরা আনন্দের ছবি বলতে ‘সাহেবের কাটলেট’। হোকনা তা বেলুনের মতো ফোলানে বা বেশি ঝালের!

[আরও পড়ুন: ৮০০ কোটি টাকা দিয়ে পতৌদি প্যালেস ‘কেনার’ রহস্য ফাঁস করলেন সইফ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement