স্টাফ রিপোর্টার: ক্যাঙারু কোর্ট কি তাহলে এবার অভিজাত শিক্ষালয়েও? পেশায় যিনি শিক্ষিকা, তিনি প্রকাশ্যে ‘সাঁতার পোশাক’ কেন পরবেন? পড়ুয়ার বাবার মুখে এই প্রশ্ন শুনে কোনও পালটা জবাব প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ তো দেনইনি, উলটে শিক্ষিকাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ। যার জেরে তোলপাড় তিলোত্তমার বিভিন্ন মহল। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি কলেজ-ইউনিভার্সিটিতেও খাপ পঞ্চায়েত বসে গেল? যাদের মর্জি হলেই কারও গর্দান যাবে! পাশাপাশি কোনও শিক্ষিকার প্রকাশ্যে সাঁতার পোশাক পরা উচিত না অনুচিত, তা নিয়েও বঙ্গসমাজ কার্যত আড়াআড়ি দু’ভাগ। মত জানালেন টলিপাড়ার নায়িকারাও।
ঘটনার সূত্রপাত সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ে। সমুদ্রতীরে গিয়ে সাঁতার পোশাক পরে ছবি দিয়েছিলেন শিক্ষিকা। সেই ছবি সামাজিক মাধ্যমে দেখে তাঁরই এক ছাত্র। অভিযোগ, ছবি ভাইরাল হতে অধ্যাপিকাকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করে কর্তৃপক্ষ। তা নিয়ে চলছে আইনি লড়াই। এরই মধ্যে শিক্ষিকার সাঁতার পোশাক অর্থাৎ বিকিনি পরা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে।
এ বিষয়ে মতামত প্রকাশ করেছেন অভিনেত্রী সৌমিলী বিশ্বাস। তিনি স্বপ্নেও ভাবতে পারেন না শিক্ষিকার অঙ্গে দু’টুকরো কাপড়। সে ছবি আবার ছাত্রছাত্রীর হাতে! তাঁর কথায়, প্রত্যেকেরই নিজস্ব একটা জীবন আছে। সেখানে সে নিজের ইচ্ছেমতো পোশাক পরতেই পারে। কিন্তু কে কোন পেশায় রয়েছেন সেটাও মাথায় রাখা উচিত। উনি সমাজের এমন একটা শ্রেণিকে প্রতিনিধিত্ব করছেন যাঁরা অত্যন্ত শ্রদ্ধার। শিক্ষকদের সকলেই শ্রদ্ধার চোখে দেখেন। সৌমিলীর বক্তব্য, “উনি বিকিনি পরায় আমার ব্যক্তিগত কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু সেই ছবি সামাজিক মাধ্যমে না দিলেই পারতেন। ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষিকাকে বিকিনি পরিহিত অবস্থায় দেখবে এটার সঙ্গে আমিও খুব একটা স্বচ্ছন্দ নই।”
[আরও পড়ুন: দুবাইয়ের রেস্তরাঁয় শেফ আশা ভোঁসলে! কী রাঁধলেন? দেখুন ভিডিও]
যদিও অধ্যাপিকার পাশেই দাঁড়িয়েছেন অভিনেত্রী ইন্দ্রাণী দত্ত। তাঁর কথায়, “শুনলাম উনি সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে গিয়ে বিকিনি পরেছিলেন। তা সমুদ্রে কি লোকে ঢাকাই শাড়ি পরে নামবে?” সোজাসাপটা ইন্দ্রাণীর বক্তব্য, “আমি নিন্দে করছি এই ঘটনার। এসব দেখে মনে হচ্ছে পড়ানোর আগে এবার থেকে অধ্যাপকদের শপথ নিতে হবে যে কে কী পোশাক পরবে।”
অভিনেত্রী মিমি দত্তর মতে, এই দু’হাজার বাইশ সালে যদি কেউ শুধুমাত্র বিকিনি পরার জন্য কাউকে দোষী সাব্যস্ত করে তার চেয়ে হাস্যকর আর কিছু নেই। মিমির কথায়, “শিক্ষিকার কাজ ছাত্রছাত্রীদের পড়ানো। সেই ভূমিকায় তিনি কতটা সফল সেটাই শুধুমাত্র তাঁর পেশার মাপকাঠি। ঘুরতে গিয়ে তিনি সুইমিং কস্টিউম পরলেন না মনোকিনি পরলেন সেটা নিয়ে আলোচনা একবারেই অনভিপ্রেত।”
এমন মন্তব্যে সহমত পোষণ করেন অভিনেত্রী তিতাস ভৌমিকও। ওই অধ্যাপিকা যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বল্পবসনা হয়ে যেতেন সেক্ষেত্রে তাঁকে সমালোচনা করা যেত। কিন্তু ঘুরতে গিয়ে কী পরেছেন তা নিয়ে তর্কবিতর্ক নাপসন্দ তিতাসের।