shono
Advertisement

রবীন্দ্র সংগীত বিকৃত করে বিপাকে হিরো আলম, পাঠানো হল আইনি নোটিস

শুনেছেন গানটি?
Posted: 07:57 PM Jul 23, 2022Updated: 07:57 PM Jul 23, 2022

সুকুমার সরকার, ঢাকা: ফের সমালোচনার মুখে আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম। শুধু তাই নয়, এবার বিকৃতভাবে রবীন্দ্র সংগীত গাওয়ায় হিরো আলমকে লিগ্যাল নোটিস পাঠিয়েছেন এক আইনজীবী। সেইসঙ্গে ‘গণ-উৎপাত’ আখ্যা দিয়ে গানটিকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে অপসারণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার হিরো আলমের (Hero Alom) ঠিকানায় নোটিস দিয়েছেন অ্যাডভোকেট হাসান অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের স্বত্ত্বাধিকারী বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার।

Advertisement

ভবিষ্যতে মিউজিক ভিডিও বানানোর নামে বিকৃত ও অশুদ্ধ বাংলা শব্দ উচ্চারণ, অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি ও নগ্ন বা অর্ধনগ্ন নৃত্য পরিবেশন এবং অশালীন পোশাক পরে ভিডিও রেকর্ড করে সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রচার থেকে সম্পূর্ণভাবে বিরত থাকতে বলা হয়েছে তাঁকে। জনপ্রিয় রবীন্দ্র সংগীত ‘আমারও পরানো যাহা চায়’ গানটির একটি মিউজিক ভিডিও হিরো আলম তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে রিলিজ করেছেন। সেখানে কিছু দৃশ্যে তাঁকে গিটার হাতে গানটি গাইতে দেখা গিয়েছে। অভিযোগ, হিরো আলমের গাওয়া গানের কিছু লাইন ও শব্দের সঙ্গে রবি ঠাকুরের মূল গানটির লাইন ও শব্দের মিল পাওয়া যায়নি।

[আরও পড়ুন: বিচারব্যবস্থায় আস্থা, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা নিচ্ছে না তৃণমূল]

একইভাবে বাংলাদেশের বিখ্যাত শিল্পী মৌসুমী ভৌমিকের গাওয়া ‘আমি শুনেছি সেদিন তুমি’ গানটিও হিরো আলম গেয়েছেন। যার কিছু লাইন ও শব্দের সঙ্গে মূল গানটির লাইন ও শব্দের মিল নাই। ইতিপূর্বে আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম উগান্ডার সোয়াহিলি ভাষার ‘মোগোয়া জাগোম্বে’ নামে একটি লোকগান করেছেন। সেখানেও মূল গানের সঙ্গে নিজের ইচ্ছামতো নতুন কিছু শব্দ ব্যবহার করেছেন। নোটিসে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন গানের মিউজিক ভিডিও তৈরি করার সময় সরাসরি গানের কথা ও সুরের বিকৃতি ঘটাচ্ছেন হিরো আলম। সেখানে আরও বলা হয়েছে, গান গাওয়ার অধিকার সকলের আছে, কিন্তু কোনও গান বিকৃতি করার অধিকার কারও নেই। এমনকী, গানের বাণিজ্যিক রিমেক বা ব্যবহার করতে গেলেও মূল গায়ক/গায়িকার বা গানের স্বত্ত্বাধিকারীর অনুমতি নেওয়াটাও জরুরি।

 

হিরো আলম মিউজিক ভিডিও নির্মাণের নামে বিকৃত ও অশুদ্ধ বাংলা শব্দ উচ্চারণ, অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি ও দৃশ্যধারণ করে সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রচার ও প্রকাশ করে গণ-উৎপাতের মতো অপরাধ করেছেন। উৎপাত শব্দের অভিধানিক অর্থ হচ্ছে উপদ্রব, দৌরাত্ম্য, অত্যাচার। এটি এমন এক ধরনের অপরাধমূলক কাজ, যা জনগণের অধিকারে হস্তক্ষেপ করে। এটি দেওয়ানি ও ফৌজদারী অপরাধ। গণ-উৎপাত সম্পর্কে ১৮৬০ সালের দন্ডবিধির ২৬৮ ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি কর্তৃক জনসম্মুখে এমন কোনও কাজ করা, যার দ্বারা জনগণের বিরক্তি সৃষ্টি হয় এমন কার্য করাকে গণ উৎপাত বলে’। এছাড়া দন্ডবিধির ২৯৪ ধারায় বলা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি অন্যদের বিরক্তি সৃষ্টি করে (ক) কোন প্রকাশ্য স্থানে কোন অশ্লীল কার্য করে অথবা (খ) কোন প্রকাশ্য স্থানে বা সন্নিকটে কোন অশ্লীল গান, গাঁথা সংগীত বা পদাবলী গায়, আবৃত্তি করে বা উচ্চারণ করে; সেই ব্যক্তি যে কোনো বর্ণনায় কারাদন্ডে যাহার মেয়াদ ৩ মাস পর্যন্ত হইতে পারে বা অর্থদন্ডে বা উভয়দন্ডে দন্ডনীয় হবে।’

[আরও পড়ুন: এসএসসি দুর্নীতি: ‘চোর ধরো, জেলে ভরো, স্বচ্ছ নিয়োগ চালু করো’, নয়া স্লোগান নিয়ে পথে বামেরা]

লিগাল নোটিসে আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার আরও বলেছেন, আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম একজন চলচ্চিত্র শিল্পী, প্রযোজক, পরিচালক এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে একজন জনপ্রিয় ব্যক্তি। অনেকেই তাঁর ভাষাগত উচ্চারণ, আচার-আচরণ, অঙ্গভঙ্গি, নাচ, পোশাক, চলাফেরা অনুকরণ ও অনুসরণ করে থাকে। ফলে হিরো আলমের মিউজিক ভিডিওর কর্মকাণ্ডে শিশু-কিশোররা, তরুণ-তরুনীরা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হতে পারে। যা সমাজে নৈতিক অবক্ষয় সৃষ্টি করবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement