সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অভিবাসন বিরোধী আন্দোলনে পুড়ছে ব্রিটেন। দেশের নানা প্রান্তে প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। যা কার্যত দাঙ্গার রূপ নিয়েছে! জায়গায় জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি দোকান ভাঙচুর, লুটপাটের অভিযোগ উঠছে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে ব্রিটেনে থাকা নাগরিকদের জন্য সতর্কবার্তা জারি করেছে ভারতীয় হাই কমিশন। যাঁরা ভারত থেকে ব্রিটেনে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন তাঁদেরকেও সতর্ক করা হয়েছে।
গোটা ঘটনার সূত্রপাত এক দুষ্কৃতী হামলাকে কেন্দ্র করে। গত সপ্তাহে ব্রিটেনের সাউথপোর্টে এক নাচের ক্লাসে ছুরি নিয়ে হামলা চালায় এক দুষ্কৃতী। এই ঘটনায় মৃত্যু হয় ৩ জনের। রটে যায় ওই হামলাকারী একজন অভিবাসী এবং ইসলামিক কট্টরপন্থী। তার পর থেকেই সরকারের বিরুদ্ধে অভিবাসন বিরোধী বিক্ষোভ শুরু করেন সাধারণ মানুষ। গতকাল, সোমবার না হিংসাত্মক আকার ধারণ করে। জ্বলে ওঠে একাধিক শহর। এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন লন্ডনের ভারতীয় হাইকমিশন।
[আরও পড়ুন: এবার নিউ ইয়র্কেও লাঞ্ছিত বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশের দূতাবাসে মুজিবের ছবি ছিঁড়ল উন্মত্ত জনতা]
মঙ্গলবার এক্স হ্যান্ডেলে নির্দেশিকা জারি করে হাইকমিশনের তরফে জানানো হয়, 'গত কয়েকদিন ধরে ব্রিটেনের বেশ কিছু জায়গায় অশান্তি ও অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে এখানে যে ভারতীয়রা রয়েছেন এবং যাঁরা ভারত থেকে আসছেন, তাঁদের ভ্রমণের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বনের কথা বলা হচ্ছে। গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে ভারতীয় হাইকমিশন। সকলকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, স্থানীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর খবরে নজর রাখুন, তার পর ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নিন। যেখানে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ সেই জায়গাগুলোয় এড়িয়ে চলুন। কোনও প্রয়োজন হলে হাইকমিশনের এমারজেন্সি নম্বরে যোগাযোগ করুন। ফোন- 44 (0) 20 7836 9147, ইমেল-inf.london@mea.gov.in'
উল্লেখ্য, সোমবার ব্রিটেনের বেলফাস্ট, ডার্লিংটন ও প্লাইমাউথে পুলিশের উপর আক্রমণ করা হয়। এছাড়া বেছে বেছে পুড়িয়ে দেওয়া হয় অভিবাসীদের দোকানপাঠ, বেছে বেছে চলে হামলা। এদিন প্রায় ১৫০ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই গ্রেপ্তারির খবর সামনে আসতেই নতুন করে আগুন জ্বলে ওঠে দেশে। হামলা চলে সাংবাদিকদের উপরেও। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে আন্তর্জাতিক মহলের অনুমান, ২০১১ সালের পর এটাই সবচেয়ে বড় দাঙ্গা ব্রিটেনে! যদিও ব্রিটিশ পুলিশের দাবি, ওই হামলাকারী কোনও বিদেশি নন, তিনি ব্রিটেনের নাগরিক। যদিও পুলিশের দাবিতেও বিশেষ কাজ হয়নি। বিক্ষোভ-প্রতিবাদে অনড় রয়েছেন সাধারণ মানুষ। এদিকে, এই ঘটনায় এবার কড়া বার্তা দিয়েছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার। জানিয়েছেন, অতি ডানপন্থীরা গায়ের রং দেখে সাধারণ মানুষকে টার্গেট করছে। যারা এই ঘটনা ঘটাচ্ছে তাঁদের কাউকে রেহাত করা হবে না।