সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রেওয়াজ নাকি রাজ, হিমাচল প্রদেশে (Himachal Pradesh Assembly Election) কোনটা বদলাবে? সকাল থেকে দীর্ঘ দড়ি টানাটানির পর শেষ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে পাহাড়ি রাজ্যটি কংগ্রেসের হাতেই আসতে চলেছে। এখনও পর্যন্ত ফলাফল বলছে, পাহাড়ি রাজ্যটিতে ৩৯ আসনে জিততে চলেছে কংগ্রেস। বিজেপির দখলে যাচ্ছে ২৬টি আসন। আর নির্দল প্রার্থীরা জিতছেন ৩টি আসনে।
৬৮ আসনের হিমাচল বিধানসভায় ম্যাজিক ফিগার ৩৫। অর্থাৎ, কংগ্রেস সুস্পষ্টভাবেই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে যাচ্ছে। বস্তুত, প্রায় চার দশক ধরে হিমাচলে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর সরকার বদলের যে রীতি চলে আসছে, সেটা এবারও বজায় রইল। বিজেপি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা সেই রীতিবদলের ভালরকম চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত কাজের কাজটি করে গেল কংগ্রেস (Congress)। আগের বারের থেকে ১৮টি আসন বাড়িয়ে সরকার গড়ার জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে হাত শিবির।
[আরও পড়ুন: বিজেপিতে গিয়ে জয় হার্দিকের, হার কংগ্রেসের জিগনেশের! কী হল বাকি হেভিওয়েটদের?]
তবে সরকার গড়ার জায়গায় পৌঁছে গেলেও স্বস্তিতে নেই কংগ্রেস। তাদের আসনসংখ্যা সংখ্যাগরিষ্ঠতার তুলনায় সামান্যই বেশি। আবার যে ৩ জন নির্দল জিতেছেন, তাঁরা যদি বিজেপিকে সমর্থক করেন, তাহলে বিজেপিও সংখ্যাগরিষ্ঠতার কাছাকাছি পৌঁছে যাবে। আর সেটাই কংগ্রেসের আশঙ্কার মূল কারণ। হাত শিবিরের আশঙ্কা, সোজা পথে ক্ষমতা দখল করতে না পারলেও সরকার গড়ার জন্য ঘোড়া কেনাবেচার মরিয়া চেষ্টা করতে পারে বিজেপি। অন্য রাজ্যের মতো হিমাচলে অপারেশন লোটাসের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ গুজরাটে (Gujarat) বিজেপি যতই বড় ব্যবধানে জিতুক দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার নিজের রাজ্যে হার, তাদের জন্য মোটেই সুখকর বিজ্ঞাপন নয়।
সেকারণেই আগেভাগে বিধায়কদের সতর্ক করা শুরু করেছে হাত শিবির। ইতিমধ্যেই সম্ভাব্য সব জয়ী প্রার্থীর কাছে ফোন গিয়েছে হাই কম্যান্ডের তরফে। কংগ্রেসের তিন শীর্ষনেতা রাজীব শুক্লা, দীপেন্দ্র হুডা এবং ভুপেশ বাঘেলকে (Bhupesh Baghel) ইতিমধ্যেই হিমাচলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, দলের বিধায়কদের ভিনরাজ্যে পাঠিয়ে দিতে পারেন খাড়গেরা। যদিও কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছে।
[আরও পড়ুন: দোষ কি শুধু আপের? গুজরাটে কংগ্রেসের ভরাডুবির আসল কারণ কী কী?]
আসলে কংগ্রেসের আশঙ্কার অন্যতম কারণ দলের অন্দরের বিদ্রোহ। বীরভদ্র সিংয়ের (Virbhadra Singh) প্রয়াণের পর হিমাচল কংগ্রেসে নেতৃত্বের শূন্যতা তৈরি হয়েছে। সেই সুযোগে রাজ্যে একাধিক গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। অন্তত জনা তিনেক নেতা আছেন, যারা মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার। স্বাভাবিকভাবেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের একটা আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। বিজেপি যাতে সেই দ্বন্দ্বের সুযোগ না নেয়, সেটা নিশ্চিত করাই এখন হাত শিবিরের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।