সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে (Bangladesh) ফের আক্রান্ত এক হিন্দু পরিবার। হামলার সময় পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠছে। ঘটোনটি ঘটেছে বাংলাদেশের মাদারীপুর জেলার কালকিনিতে। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: স্থানীয়দের উপর হামলা চিনা কর্মীদের, মানববন্ধন গড়ে প্রতিবাদ বাংলাদেশে]
এই বিষয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে কালকিনি থানার ওসি ইশতিয়াক আশফাক রাসেল জানান, ভুক্তভোগী ওই পরিবারের দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে শুক্রবার আনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্ত কালকিনি পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। মামলায় আনোয়ারের ছেলে রিফাত ব্যাপারি ও ভাইপো সাব্বির ব্যাপারিকেও আসামি করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়। দ্রুত মামলার তদন্ত শেষ করা হবে বলেও জানানো হয়েছে। এদিকে, অভিযুক্ত আনোয়ার পালটা দাবি করেন যে, তাঁর উপর হামলা চালায় ওই হিন্দু পরিবারই।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান নিয়ে পুলিশ আধিকারিক রাসেল জানান, কালকিনি পৌরসভার নয়াকান্দি এলাকায় ঝন্টু চন্দ্র মণ্ডল ধান মাড়াই করার জন্য তাঁর এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন ভাড়া নেন। এদিকে কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেনও ধান মাড়াই করার জন্য একই মেশিন ভাড়া নেন। গত বুধবার ঝন্টু মণ্ডলের কাছ থেকে কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন আনতে তাঁর বাড়ি যান আনোয়ার। কিন্তু কাজ শেষ না হওয়ায় মেশিনটি দিতে রাজি হননি ঝন্টু। এর জেরে দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক সময়ে ঝন্টুকে ধান মাড়াই বন্ধ রাখতে বলেন আনোয়ার।
পরে ঝন্টু কালকিনি থানায় ফোন করে ঘটনাটি জানালে বিষয়টি সমাধানের জন্য দুই কনস্টেবলকে তাঁর বাড়িতে পাঠানো হয়। দু’পক্ষের কথা শুনে পুলিশ ঝন্টুকে ধান মাড়াই শুরু করতে বললে আনোয়ার ও তার স্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে ঝন্টুকে মারধর করতে শুরু করেন।
এদিকে, বাবাকে আক্রান্ত হতে দেখে এগিয়ে আসেন ঝন্টুর ছেলে। ফলে তাঁকেও আনোয়ারের লোকজন মারধর করে বলে জানান ওসি ইশতিয়াক। এদিকে ওই হামলার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, কাউন্সিলর, তার স্ত্রী-সহ কয়েকজন ঝন্টুকে মাটিকে ফেরে মারধর করছেন। এ সময় কাউন্সিলরের স্ত্রী রিক্তা বেগম অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে শোনা যায়। এ সময় আনোয়ার স্ত্রীকে সেখান থেকে সড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঝন্টু সাংবাদিকদের বলেন, “কাউন্সিলর আনোয়ারের আগে থেকেই আমাদের উপর রাগ ছিল। ওই আক্রোশের জেরেই তিনি ও তাঁর পরিবারের লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় আমরা ঘরের চারজনই কমবেশি আহত হয়েছি। তবে আমার ছেলে বেশি আঘাত পেয়েছে। ওকে হাসপাতালে ভরতি করতে হয়েছে।” ঝন্টুর ছেলে উজ্জ্বল বলেন, “কাউন্সিলর আর তাঁর স্ত্রী আমাদের গালাগাল করার পাশাপাশি আমাদের দেশ ছেড়ে যেতেও হুমকি দেয়।”