সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রত্যাশা যা ছিল তাই হয়েছে। ঘাটালে হ্যাটট্রিক করলেন দেব (Dev)। গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী হিরণ চট্টোপাধ্যায়কে ১ লক্ষ ৮২ হাজার ভোটে হারিয়ে বিপুল জয় পেয়েছেন টলিউডের সুপারস্টার। তবে পরাস্ত হওয়ার পরও কিন্তু ময়দান ছেড়ে চলে যাননি হিরণ। বরং দলের কর্মী-সমর্থকদের পাশে থাকবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। কিন্তু আচমকাই কেন 'জেলে ঢোকানোর' কথা বললেন হিরণ চট্টোপাধ্যায় (Hiran Chatterjee)?
আসলে মঙ্গলবার ভোটগণনার দিনই ঘাটালে তৃণমূল-বিজেপি সংঘাতের খবর প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে আহত হয়েছেন দুই শিবিরের কর্মী-সমর্থকই। এদিন সেই আহত বিজেপি কর্মীদেরই হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন হিরণ। তাঁদের শারীরিক পরিস্থিতির খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি পাশে থাকার আশ্বাস দেন পরাজিত পদ্মপ্রার্থী। তাঁদের উদ্দেশে বলেন, "ভোটের হার-জিত আছেই। তবে আপনারা নিশ্চিন্তে থাকুন। কিছু হবে না। কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে। আমিও সবসময়ে আপনাদের পাশে আছি। আপনারাও কর্মী, আমিও কর্মী।" এরপরই ঘাটালে তাঁর হার নিয়ে মুখ খোলেন প্রাক্তন খড়্গপুর বিধায়ক। হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, "হেরে যাওয়া যদি আমার অপরাধ হয়, তাহলে আমায় জেলে ঢুকিয়ে দিন। তবে আমার কর্মীদের উপর অত্যাচার করবেন না। আমার অনুরোধ।" যদিও ঘাটালে ভোটপরবর্তী হিংসা নিয়ে এখনও পর্যন্ত সেরকম কোনও খবর প্রকাশ্যে আসেনি। যাতে কোনওরকম ভোট পরবর্তী হিংসা না হয়, সেদিকে নজর রাখতে আগামী ১৯ জুন পর্যন্ত প্রতিটা কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকছে।
প্রসঙ্গত, চব্বিশের লোকসভা ভোটে এবার শুরু থেকেই নজরে ছিল দেব-হিরণের 'মেগা ফাইট'। যে এলাকা টলিউড সুপারস্টার দেবের গড় বলে পরিচিত, সেখানেই বিজেপি প্রার্থী হিসেবে হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের (Hiran Chatterjee) নাম ঘোষণা করা হয়। রণকৌশলী ছিল, স্টারে স্টারে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে! কিন্তু ভোটপ্রচারের ময়দান থেকেই হিসেব যে বদলাতে থাকে, সেই আঁচ পাওয়া গিয়েছিল। প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণার আগে থেকেই দেবকে বারবার নিজের বাক্যবাণে বিঁধেছেন হিরণ। প্রার্থী হওয়ার পর তাঁর আক্রমণের ঝাঁজ আরও বেড়ে যায়। তবে ঘাটাল শেষমেশ তাঁদের গত দু' বারের সাংসদকেই বেছে নিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: ভোট মিটতেই কলকাতা ছাড়লেন বনি-কৌশানী, বিয়ের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে?]
ছবি: সুকান্ত চক্রবর্তী
কোন অঙ্কে হেরে গেলেন পদ্মপ্রার্থী হিরণ চট্টোপাধ্যায়? খড়্গপুরের প্রাক্তন বিধায়কের প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই তাঁর নজর ঘাটালের আসন জেতার থেকেও তুলনামূলকভাবে বেশি ছিল বিভিন্ন ইস্যুতে দেবকে আক্রমণ করা। ভোটপ্রচারের ময়দানে কখনও দেবের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ এনেছেন, আবার কখনও বা চাকরিপ্রার্থীদের থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ এনে নির্বাচন কমিশনের তরফে নোটিস পেয়েছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সৌজন্য বনাম দোষারপের সিঁড়িভাঙা অঙ্কতেই ক্রমশ যেন পিছিয়ে যেতে শুরু করলেন হিরণ। ভোটের ফলাফল তাতেই সিলমোহর দিয়ে দিল। তবে হেরে গিয়েও ঘাটালের পিচ ছাড়েননি হিরণ চট্টোপাধ্যায়।