সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিতর্কিত কৃষি আইনের সমর্থনে আপাতত কোনও কর্মসূচি নয়। হরিয়ানার বিজেপি সরকারকে এমনই নির্দেশ দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। আসলে দিন দুয়েক আগে হরিয়ানার কার্নলে কৃষি আইনের সমর্থনে হতে চলা মহাপঞ্চায়েতের মঞ্চে রীতিমতো তাণ্ডব চালান বিক্ষোভরত কৃষকরা। ওই মঞ্চে বক্তৃতা রাখার কথা ছিল খোদ মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খাট্টারের (ML Khattar)। সেই মঞ্চের বিশৃঙ্খলা দেখে সাময়িকভাবে এই ধরনের কর্মসূচিগুলি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শাহ। আসলে তিনি চান না কোনওভাবেই সরাসরি কৃষক বনাম পুলিশ সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হোক। বুধবার হরিয়ানার শিক্ষামন্ত্রী কানওয়ার পাল গুজ্জর (Kanwar Pal Gujjar) একথা জানিয়েছেন।
হরিয়ানার শিক্ষামন্ত্রীর কথায়,”কার্নলে যা হল, সেটা দেখার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আপাতত রাজ্যে কৃষি আইনের পক্ষে কর্মসূচি নিতে নিষেধ করে দিয়েছেন। আমরা কোনওভাবেই কৃষকদের সঙ্গে সংঘর্ষের মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে চাই না।” বিক্ষোভরত কৃষকদের তোপ দেগে গুজ্জরের দাবি,”গোটা রাজ্য দেখেছে যে সভায় মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য রাখার কথা ছিল, সেখানে কৃষকরা কী পরিস্থিতি করেছে। আমরা আর অশান্তি চাই না।” প্রসঙ্গত, দিন দুই আগে হরিয়ানার কার্নলে কৃষি আইনের সমর্থনে বিজেপি আয়োজিত একটি জনসভায় ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী আসার আগে সভাস্থলে বহু বিক্ষোভকারী রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়েছে। ভেঙে দেওয়া হয়েছে মঞ্চ, ভাঙচুর করা হয়েছে চেয়ারও। সেই ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি এড়াতেই এবার কৃষি আইনের সমর্থনে সভা বন্ধের সিদ্ধান্ত শাহর।
[আরও পড়ুন: কে খালিস্তানি বলল ভাবেন না, বিক্ষোভরত কৃষকদের নিরলস সেবা করে চলেছে ইউনাইটেড শিখ]
প্রসঙ্গত, কৃষি আইন নিয়ে হরিয়ানায় এমনিতেই বেশ চাপে হরিয়ানার শাসক শিবির। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, হরিয়ানার ৬০টিরও বেশি গ্রামে নাকি বিজেপি এবং জেজেপি (JJP) নেতাদের প্রবেশই করতে দেওয়া হচ্ছে না। বিজেপি তথা জেজেপি বিধায়ক এবং নেতারা যাতে প্রবেশ করতে না পারেন তা নিশ্চিত করতে গ্রামের বাইরে রীতিমতো নোটিস ঝোলানো হয়েছে। স্থানীয় কৃষক সংগঠনগুলি নেতাদের উপর চাপ বাড়াচ্ছে। যা কিনা হরিয়ানার জোট সরকারকে রীতিমতো চাপে ফেলে দিয়েছে। একাধিক বিধায়ক ইতিমধ্যেই সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের হুমকি দিয়েছে। চাপে পড়ে মঙ্গলবারই আসরে নামতে হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী এবং উপমুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে বৈঠক করেছেন তিনি। বুধবার উপমুখ্যমন্ত্রী দুষ্মন্ত চৌটালা (Dushyant Chautala) নিজেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) দ্বারস্থ হয়েছেন। হরিয়ানা যে ক্রমশ কৃষক বিক্ষোভের এপিসেন্টার হয়ে যাচ্ছে, তা স্বীকার করে নিচ্ছে শাসক শিবিরও।