রূপায়ন গঙ্গোপাধ্যায়: সেপ্টেম্বরের প্রথমদিকেই উত্তরবঙ্গে আসতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Home Minister Amit Shah)। বসতে পারেন বৈঠকেও। যদিও রাজ্য বিজেপির কাছে এই সংক্রান্ত কোনও খবর নেই বলেই জানিয়েছেন তাঁরা। সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উত্তরবঙ্গ সফর যে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ তা আলাদা করে বলার প্রয়োজন পড়ে না।
সম্প্রতি বঙ্গভঙ্গের দাবি উঠেছে। কেউ উত্তরবঙ্গকে (North Bengal) আলাদা রাষ্ট্র করার দাবি জানিয়েছেন তো কেউ আবার পৃথক রাজ্যের দাবিতে সরব হয়েছেন। এদিকে বঙ্গভঙ্গ ইস্যুতে বিজেপি যথেষ্ট বিড়ম্বনায়। উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্যের দাবি মাঝে মাঝেই তুলে বিভ্রান্তি বাড়াচ্ছেন এক একজন বিজেপি (BJP) নেতা। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ কখনও সেই দাবির পক্ষে সুর মেলাচ্ছেন, কখনও আবার বলছেন, রাজ্য ভাগের পক্ষে বিজেপি নয়। ফলে দলীয় কর্মীদের মধ্যেও বিভ্রান্তি। আগামী ১ সেপ্টেম্বর, শিলিগুড়িতে বৈঠক হতে চলেছে উত্তরবঙ্গের বিধায়কদের নিয়ে। বৈঠকে গেরুয়া শিবিরের ২৯ জন বিধায়কের থাকার কথা।
[আরও পড়ুন: রাজ্য সরকারি প্রকল্পগুলিকে সাহায্য, কন্যাশ্রী-রূপশ্রী-লক্ষ্মীর ভাণ্ডারকে অর্থ দিতে পারে World Bank]
এদিকে সেই সময় উত্তরবঙ্গে আসতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। যদিও এ প্রসঙ্গে কিছুই জানা নেই বলে দাবি করেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর কথায়, “এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।” একই সুর শোনা গিয়েছে উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসুর গলাতেও। তিনিও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর সম্পর্কে কিছু জানেন না বলেই দাবি করেছেন।
দলীয় সূত্রে খবর, আলাদা উত্তরবঙ্গ রাজ্যের দাবি নিয়ে দলের অবস্থান কী হবে তা সেই বৈঠকেই ঠিক হতে পারে। কারণ, গেরুয়া শিবিরে রাজ্যভাগের দাবি নিয়ে বিতর্ক উঠলেও বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে দলের অবস্থান এখনও স্পষ্ট করা হয়নি। উত্তরবঙ্গের বিধায়কদের নিয়ে ওই বৈঠকে বিষয়টি আলোচনার প্রধান ইস্যু হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছে দলের একাংশ। ওই বৈঠকে দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী ছাড়াও থাকতে পারেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
[আরও পড়ুন: নেই অর্ধেক মাথা, স্ত্রী-পুরুষ উভলিঙ্গ নিয়ে জন্ম বিরল শিশুর, তাজ্জব চিকিৎসকরাও!]
সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বার্লার সামনে পৃথক রাজ্যের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে বিতর্ক তৈরি করেছিলেন দিলীপ ঘোষ। এরপর তাঁর বক্তব্যের উল্টোপথে হেঁটে বাংলা ভাগের বিপক্ষে সওয়াল করেছিলেন দলের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা ও সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। পরে কলকাতায় ফিরে বিতর্কিত বঙ্গভঙ্গ ইসু্যতে অন্য যুক্তি দিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, বঙ্গভাগের কথা কেউ বলেনি। উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহলের মানুষ বঞ্চিত। তাঁরা চাকরির জন্য, চিকিৎসার জন্য অন্য রাজ্যে যাচ্ছেন। সেখানকার মানুষের যে দাবি আছে উন্নয়নের সেটা হয়নি। বাংলা ভাগের দাবির পিছনে তৃণমূল সরকারের ব্যর্থতাকে কাঠগড়ায় তুলে দিলীপবাবু দাবি করেছিলেন, তৃণমূলের গুন্ডারা, পুলিশ যে অত্যাচার করছে সেখানকার মানুষ ভাবছেন এখানে কোনও উন্নয়ন হবে না। জনগণ যে আওয়াজ তুলেছে আমাদের জনপ্রতিনিধিরা সেই আওয়াজকেই তুলে ধরেছেন। কোনও বিভাজনের পক্ষে বিজেপি নেই। সূত্রের খবর, রাজ্য ভাগের বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক বাড়ুক চাইছেন না কেন্দ্রীয় নেতারাও।