দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষিত রূপশ্রী প্রকল্প এবার মণ্ডল পরিবারে আনন্দ নিয়ে এল। হুগলির বাঁশবেড়িয়ায় রূপশ্রী প্রকল্পের টাকায় নতুন জীবন শুরু করতে চলেছেন এলাকার সাত নম্বর ওয়ার্ডের বসু লেনের সুপর্ণা মণ্ডল। রবিবার বাঁশবেড়িয়ায় চার হাতের মিলন হল।
[মেয়ের খুনির আত্মীয়কে টিকিট দিয়েছে বেচারাম, ক্ষোভে নির্দল প্রার্থী তাপসী মালিকের বাবা]
পাত্রীর বাবা মঙ্গল মণ্ডল রাজমিস্ত্রীর কাজ করে কোনওমতে সংসার চালান। পাত্রী সুপর্ণা স্থানীয় গার্লস স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর কলা বিভাগে স্নাতক স্তরে পড়াশুনো করছেন। সুপর্ণার ভাই এই বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। দরিদ্র পরিবারের পক্ষে মেয়ের বিয়ে দেওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। তাই আগেভাগেই মেয়ের জন্য উপযুক্ত পাত্রের সন্ধানও শুরু করে দিয়েছিলেন মঙ্গলবাবু। মগরা আলিখোঁজা গ্রামের তাপস মিস্ত্রীকে পাত্র হিসেবে পছন্দও হয়ে যায়। তাপসবাবু পেশায় একটি নৃত্য শিক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষক। ছেলে ও মেয়ের পড়াশোনা চালিয়ে মেয়ের বিয়ে দেওয়ার খরচ কোথা থেকে আসবে, তা নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন মঙ্গলবাবু। নিজের এই সমস্যার কথা স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর অমিত ঘোষকে জানান। কন্যাদায়গ্রস্ত পিতার কথা শুনে কাউন্সিলর বলেন, ‘রাজ্যের মানুষের পাশে সবসময় মুখ্যমন্ত্রী আছেন।’ অমিতবাবু এই পরিবারটির দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। অনলাইনে ফর্ম ডাউনলোড করে মেয়ের বাবাকে দেন। সেই ফর্ম পূরণ করে মঙ্গলবাবু মহকুমা শাসকের কাছে জমা দেন। এরপরই পাত্রীর বয়সের শংসাপত্র, বাবার উপার্জনের সার্টিফকেট ও অন্যান্য প্রযোজনীয় নথি যাচাই করে প্রশাসন সবুজ সংকেত দেয়। ২১ এপ্রিল ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রূপশ্রী প্রকল্পের ২৫ হাজার টাকা জমা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাঁফ ছেড়ে বাঁচে গোটা মণ্ডল পরিবার। শুরু হয়ে যায় বিয়ের তোড়জোড়। গত রবিবার সকাল থেকেই বসু লেনে বাজতে শুরু করেছে বিয়ের সানাই। গায়ে হলুদ থেকে অতিথি আপ্যায়ণ কোনও কিছুতেই কমতি নেই। রাতে মেয়েকে যখন বিয়ের পিঁড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তখন বাবা মঙ্গল ও মা অনিমা মণ্ডলের চোখে আনন্দের অশ্রু।
অশ্রুসজল চোখে তাঁরা বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের মতো গরীব মানুষগুলোর কথা চিন্তা করেন। তাই আজও আমরা সম্মানের সঙ্গে বেঁচে আছি। আজকে মেয়েকে পাত্রস্থ করতে পারছি তা আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর জন্য। তাঁকে শতকোটি প্রণাম জানাই।’ চোখে আনন্দের জল চিক চিক করছে সুপর্ণারও। তারই মাঝে বলেন, ‘নতুন জীবনে প্রবেশের আগে মনে মনে দূর থেকে প্রণাম জানাই মুখ্যমন্ত্রীকে। তিনি যেন আমাদের দু’জনকে আশীর্বাদ করেন। জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে মুখ্যমন্ত্রীর এই অবদানের কথা মনে থাকবে।’ পাশাপাশি অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের উদ্দেশ্যে সুপর্ণা বলেন, ‘তোমরা পড়াশোনা চালিয়ে যাও। যে রাজ্যে এমন মুখ্যমন্ত্রী আছেন সে রাজ্যে মানুষের আগামী দিনে কোনও দুঃখ কষ্ট থাকবে না।’ স্থানীয় কাউন্সিলর অমিত ঘোষ জানান, তিনি বিষয়টি জানতে পারার পর থেকে চেষ্টা করেছেন, কেমন করে রূপশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পেতে পারে এই পরিবার। মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প যে সার্থক রূপ পেয়েছে, এটাতেই তিনি খুশি।
[বনকর্মীদের নজরদারিতে গোপনে শিকার, বুনোশুয়োর-খরগোশ মেরে হল ভূরিভোজও]
The post সহায় রূপশ্রী প্রকল্প, দুশ্চিন্তা কাটিয়ে বিয়ের সানাই বাজল হুগলির মণ্ডল পরিবারে appeared first on Sangbad Pratidin.