অরিজিৎ গুপ্ত ও বিপ্লব দত্ত: টাকার জন্য নয়, বরং মহিলা সম্পর্কিত আক্রোশেই খুন হয়ে গিয়েছেন বেসরকারি ব্যাংকের রিকভারি এজেন্ট পার্থ চক্রবর্তী। প্রাথমিক তদন্তে এমনই ধারণা পুলিশের। মৃতের মাথাটির এখনও খোঁজ মেলেনি। দেহের অন্য অঙ্গ কেটে লোপাট করে দেওয়া হয়েছে। তাই পার্থ চক্রবর্তীর প্রতি যে খুনির চরম আক্রোশ ছিল, সে ব্যাপারে একপ্রকার নিশ্চিত তদন্তকারীরা। বস্তুত, এই খুনের সঙ্গে একাধিক ব্যক্তি জড়িত এবং তারা পেশাদার বলেই মনে করছে পুলিশ। শুক্রবার হাওড়ার মাকড়দহে যেখানে বস্তাবন্দি দেহটি পাওয়া গিয়েছিল, তার উলটো দিকের পুকুরে মাথাটির সন্ধানে ডুবুরি নামিয়ে চলে তল্লাশি। এদিকে ছেলের মৃত্যুর জন্য তাঁর সহকর্মীদের দায়ী করেছেন মৃতের বাবা পঙ্কজ চক্রবর্তী।
[হাওড়ায় ব্যাংক কর্মীকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন, উদ্ধার বস্তাবন্দি খণ্ডিত দেহ]
হাওড়ার ডোমজুড়ে বন্ধন ব্যাংকের লোন রিকভারি এজেন্ট ছিলেন পার্থ চক্রবর্তী। তাঁর বাড়ি নদিয়ার চাকদহে। বুধবার দুপুরে মাকড়দহে রাজবপুরে রাস্তার ধারে একটি বস্তা পড়ে থাকতে দেখেন এক গৃহবধূ। ডোমজুড় থানায় খবর দেন স্থানীয়রা। বস্তায় পার্থের দেহের নিম্নাংশটি ভরা ছিল। বস্তার গায়ে তাজা রক্তও লেগেছিল। পাঁচটি দলে বিভক্ত হয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। তদন্তে জানা গিয়েছে, স্থানীয় একটি স্বর্নিভর গোষ্ঠীদের মহিলাদের কাছে ঋণের টাকা আদায় করতে গিয়েছিলেন পার্থ। ওই মহিলাদের বেশিরভাগই দর্জি। এদিকে আবার বস্তাবন্দি মৃতদেহ থেকে রক্ত গড়িয়ে আসা রুখতে প্রচুর কাপড়ও ব্যবহার করা হয়। পুলিশের সন্দেহ, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কোনও মহিলার সঙ্গে হয়তো সম্পর্ক ছিল পার্থ-র। ঋণ শোধ করা নিয়ে দু’জনের টানাপোড়েন চলছিল। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলা ও মৃতের সহকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারীরা। হাওড়ার মাকড়দহে রাজীবপুরের রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখেছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, সিসিটিভি ফুটেজ বুধবার সাড়ে বারোটার সময়ে পার্থ চক্রবর্তীকে দেখা গিয়েছে। মিনিট কুড়ি বাদে তাঁর মোবাইল ফোনটি বন্ধ হয়ে যায়। এত অল্প সময়ে ওই যুবকের পক্ষে বেশিদূর যাওয়াও সম্ভব নয়। এখন প্রশ্ন হল, গাড়ি করে নিয়ে যাওয়ার সময়ে অসতর্কতায় বস্তাবন্দি দেহটি রাস্তায় পড়ে গিয়েছিল নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে দেহ রাস্তা উপর ফেলে দেওয়া হয়েছিল? উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা।
২০১৫ সালের আগস্টে হাওড়ার ডোমজুড়ে বন্ধন ব্যাংকের লোন রিকভারি এজেন্টে হিসেবে কাজ যোগ দিয়েছিলেন পার্থ চক্রবর্তী। নদিয়ার চাকদহের গোরপাড়ার বাড়িতে থাকেন তাঁর বৃদ্ধ বাবা-মা ও দিদি। বাবা পঙ্কজ চক্রবর্তী এলআইসি এজেন্ট। তাঁর অভিযোগ, ছেলের খুনে জড়িত তাঁর সহকর্মীরাই।
[মানুষের গড় আয়ু ১৪০! ডাক্তারবাবুদের আশ্বাসে সেঞ্চুরির পথে অন্নপূর্ণা]
The post মহিলা সম্পর্কিত আক্রোশেই হাওড়ায় খুন বন্ধন ব্যাংকের কর্মী! appeared first on Sangbad Pratidin.