অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: পথকুকুরদের খেতে দেওয়া ছিল প্রৌঢ়ের অভ্যাস। কিন্তু প্রতিবেশী যুবক সেই বিষয়টি মোটেও ভালো চোখে দেখত না। প্রৌঢ়ের সঙ্গে ওই যুবকের গণ্ডগোলও হত। পরবর্তীকালে সেই ব্যক্তিকে পিটিয়ে মেরেছিল ওই যুবক। হাওড়ার বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় ওই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। সেই ঘটনার ১১ বছর পর মৃতের পরিবার বিচার পেল। দোষী যুবকের ১০ বছরের সশ্রম সাজা শোনাল আদালত।

জানা গিয়েছে, হাওড়ার দক্ষিণ বাঁকসারার ঠাকুরপুকুরের বাসিন্দা বানেশ্বর সাউ (৫৪) প্রতিদিন এলাকার পথ কুকুরদের খেতে দিতেন। তা নিয়ে তীব্র আপত্তি ছিল প্রতিবেশী যুবক শম্ভু বাগের। ২০১৪ সালের ২৫ জুন বাড়ির পাশের রাস্তায় পথকুকুরদের খাওয়াচ্ছিলেন বানেশ্বরবাবু। অভিযোগ, সেসময় প্রতিবেশী শম্ভু বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। প্রতিবাদ করলে অভিযুক্ত নিজের হাতে থাকা কাঠের বাটাম জাতীয় ভারী বস্তু দিয়ে বানেশ্বরবাবুর মাথায় আঘাত করে।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রৌঢ়কে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। সেই ঘটনায় তদন্তে নেমে শম্ভুকে গ্রেপ্তার করেছিল বি গার্ডেন থানার পুলিশ। শুরু হয় মামলা। গত ১১ বছর ধরে মামলাটি চলে হাওড়া আদালতে। এই মামলায় মোট ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যপ্রমাণ নেওয়া হয়। তার ভিত্তিতেই আদালত শম্ভু বাগকে দোষী সাব্যস্ত করে। তাকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাস কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মামলার সরকারি আইনজীবী ব্রজেন্দ্রনাথ শাঁসমল বলেন, "এই ধরনের কোনও ঘটনায় প্রথমবার রাজ্যের কোনও আদালত এমন রায় শোনাল। পশুপ্রেমীদের জন্য নিঃসন্দেহে অনেক বড় জয় এটা।" সাজা শুনে খুশি মৃতের পরিবার।