অভিরূপ দাস: আচমকাই বেঁকে গিয়েছে মুখের একটা দিক। ঘটনাচক্রে তার আগের দিনই করোনার ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড (Covishield) নিয়েছিলেন মানসী সামন্ত (৪০)। তাঁর স্বামী আশিস সামন্তর দাবি, ভ্যাকসিন (COVID-19 Vaccine) নিয়েই এমনটা হল। SSKM হাসপাতালের চিকিৎসকরা নাকি তাঁকে জানিয়েছেন টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াতেই এই ঘটনা ঘটেছে। প্রেসক্রিপশনেও তাই লেখা আছে বলে দাবি আশিসবাবুর।
এই মুহূর্তে কথা বলতে গেলেই চোয়ালটা বেঁকে যাচ্ছে মানসীর। ডান দিকের চোখটা বন্ধ হচ্ছে না। গত ২৫ জুন শুক্রবার কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন মানসী। শনিবার সকাল থেকেই তার মুখে এমন সমস্যা দেখা যায়। চিকিৎসা পরিভাষায় একে বলা হয় ফ্যাসিয়াল পালসি বা বেলস পালসি। সাধারণত সপ্তম ক্রেনিয়াল নার্ভ আক্রান্ত হলেই ফেসিয়াল মাসল দুর্বল হয়ে যায়। তখনই এহেন সমস্যা দেখা যায়। মুখ বেঁকে যাওয়ার পর হাওড়ার সলপের বাসিন্দা মানসীকে SSKM হাসপাতালে ভরতি করা হয়। ১ জুলাই পর্যন্ত মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
[আরও পড়ুন: দু’বার বিয়ে ভাঙায় বিধ্বস্ত জীবন, হাওড়ায় ট্রেন ধরতে এসে ব্রিজ ঝাঁপিয়ে আত্মঘাতী যুবক]
এ বিষয়ে মানসীর স্বামী আশিস সামন্তর বলেন, “চিকিৎসকরা আমায় বলেছেন কয়েক লক্ষ মানুষের মধ্যে এক আধজনের এমনটা হতে পারে। কপালটা খারাপ আমার স্ত্রী সঙ্গেই সেটা হল।” তবে টিকা নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই আশিসবাবুর। তাঁর কথায়, “আমি বলছি না যে টিকা নেবেন না। করোনা (Corona Vaccine) ঠেকাতে হলে টিকা নিতেই হবে। আমার একটাই অনুরোধ ভ্যাকসিন নেওয়ায় আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। ভ্যাকসিন নেওয়ার পর কোনও সমস্যা হলে চিকিৎসককে বলুন।”
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. অরিন্দম বিশ্বাসের কথায়, “নানান কারণে মুখের একদিক বেঁকে যেতে পারে। সেই সমস্ত কারণের মধ্যে রয়েছে হার্পিস ভাইরাস, চিকেন পক্স, ইনফ্লুয়েঞ্জা, সাইটোমেগালো কিম্বা মাম্পস ভাইরাস। তবে এই কোনও অসুখই নেই মানসীর। SSKM হাসপাতালে করা তাঁর সমস্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট নর্মাল। অরিন্দম বিশ্বাসের বক্তব্য, বেলস পালসিতে আক্রান্ত রোগীর মুখ এক দিকে বেঁকে যায়। পাশের চোখ বন্ধ হয় না। কোন কিছু খেতে গেলে খাবার একপাশে চলে যায়। সামান্যতম উপসর্গ দেখা দিলেই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। ডা. অরিন্দম বিশ্বাস জানিয়েছেন, ভ্যাকসিন নিয়ে যদি এমনটা হয়েও থাকে তবে তা বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনা। এর উপর ভিত্তি করে ভ্যাকসিনের সম্পর্কে বিরূপ মনোভাব তৈরি করা অনুচিৎ।