বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: সবেধন নীলমণি শুধু কেরল (Kerala)। বাংলায় ক্ষমতা হারানো বছর ১১ হয়ে গেল। এরাজ্যে বিধানসভা ভোটের নিরিখে তিন নম্বরে নেমে এসেছে সিপিএম। ত্রিপুরাতেও অবস্থা তথৈবচ। অন্যান্য রাজ্যগুলিতেও বিরাট কোনও প্রভাব নেই। একটা সময় যে দলের লোকসভার (Lok Sabha) সদস্য সংখ্যা চল্লিশের বেশি ছিল, সেই দলই আজ নেমে এসেছে মাত্র ৩-এ। কিন্তু ক্রমশ শক্তিহারা হলেও জৌলুস কমেনি সিপিএমের (CPM)। অন্তত পার্টি কংগ্রেসের আয়োজন দেখলে বোঝার উপায় নেই যে এই দলটি গোটা দেশের মাত্র একটি রাজ্যে ক্ষমতায়।
কেরলের কান্নুরে সিপিএমের ২৩তম পার্টি কংগ্রেস চলছে। যার চোখ ধাঁধানো আয়োজন অবাক করতে পারে অনেককেই। পার্টি কংগ্রেস উপলক্ষ্যে গোটা কান্নুর জেলা লাল পতাকায় মুড়ে ফেলেছে কেরল সিপিএম। পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুনের ছড়াছড়ি। পার্টি কংগ্রেসের জন্য দুটি অস্থায়ী ছাউনি তৈরি হয়েছে বিরাট এলাকা নিয়ে। দুটি ছাউনিই পুরোপুরি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। মোট কথা বিভিন্ন রাজ্য থেকে আগত প্রতিনিধিদের আয়েসের যাতে কোনও খামতি না হয় সেটা ভালমতোই নজরে রেখেছেন পার্টির কেরলের নেতারা।
[আরও পড়ুন: মনোজিতের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ বৈশাখীর, ‘মুক্তির স্বাদ পেল’, বলছেন শোভন]
পার্টি কংগ্রেসের যোগ দিতে গোটা দেশ থেকে কান্নুরে গিয়েছেন প্রায় ৯০০ প্রতিনিধি। এদের মধ্যে বাংলার প্রতিনিধি রয়েছেন কমবেশি ১৮০ জন। বিভিন্ন রাজ্য থেকে আগত সদস্যদের কান্নুরে থাকারও এলাহি বন্দোবস্ত করা হয়েছে। কান্নুর ছোট শহর। সেখানে কোনও ৫ তারা হোটেল না থাকায় পলিটব্যুরোর সদস্যদের রাখা হয়েছে ৪ তারা হোটেলে। রাজ্য কমিটির সদস্যদের রাখা হয়েছে ৩ তারা হোটেলে। অন্যান্য প্রতিনিধিদেরও ভাল মানের হোটেলেই রাখা হয়েছে।
প্রতিদিন পার্টি কংগ্রেসের ছাউনিতে প্রতিনিধিদের খাওয়াদাওয়ারও এলাহি আয়োজন করা হচ্ছে। বিভিন্ন রাজ্যের প্রতিনিধি ছাড়াও নিরাপত্তারক্ষী, ভলান্টিয়ার (Civic Volantiar) মিলিয়ে প্রায় দেড় থেকে দু’হাজার মানুষের জন্য প্রতিদিন খাবার-দাবারের আয়োজন করা হচ্ছে। যেখানে উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের প্রতিনিধিদের জন্য আলাদা আলাদা ভুরিভোজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বুধবারই যেমন উত্তর ভারতের প্রতিনিধিদের খাবারের মেন্যুতে ছিল, ভাত রুটি, ডাল মাখনি, রুই মাছের কালিয়া, চিকেন কষা, চিংড়ির ঝাল, পাপড়, ফ্রুট স্যালাড, টকদই, পায়েস, আইসক্রিম এবং বিভিন্ন রকমের ফল। দক্ষিণ ভারতের প্রতিনিধিদের জন্যও বিপুল আয়োজন করা হয়।
[আরও পড়ুন: মহিলাদের জন্য বিপুল কর্মসংস্থান, সাড়ে ৪ হাজার কনস্টেবল নিয়োগের সম্ভাবনা রাজ্যে]
সিপিএমের সরকারি হিসাব বলছে, গোটা পার্টি কংগ্রেসে (Party Congress) খরচ হচ্ছে ৪ কোটি টাকা। প্রশ্ন উঠছে, সর্বহারার দলের পার্টি কংগ্রেসে এত আয়োজন? এত খরচ? যদিও নামে সর্বহারার দল হলেও আসলে সিপিএম কিন্তু বেশ বড়লোক দল। ২০১৯-২০ সালের হিসাব অনুযায়ী সিপিএমের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৪৯৬ কোটি ৫১ লক্ষ টাকা।