দীপংকর মণ্ডল: ১৪ দিনের লাগাতার আমরণ অনশন। চাপের মুখে পড়ুয়াদের দাবি মেনে নিল মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজ কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত, আপাতত নতুন ভবনের দুটি তলায় থাকতে দেওয়া হবে পড়ুয়াদের। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলবে নতুন হস্টেল তৈরির কাজ। কাজ শেষ হলে সেই হস্টেলে পড়ুয়াদের স্থানান্তরিত করা হবে। শুধু তাই নয়, দখলদার মুক্ত করে সারানো হবে পুরনো হস্টেলটিও। এ বিষয়ে লিখিত বিবৃতি দেওয়ার পরই অনশন প্রত্যাহার করলেন পড়ুয়ারা। কলেজ চত্বরে আবির খেলায় মেতে ওঠেন আন্দোলনকারীরা। এদিকে সোমবার বিধানসভায় মেডিক্যালে অচলাবস্থা নিয়ে বিবৃতি দেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করেন কংগ্রেস ও বাম বিধায়করা। বিধানসভার বাইরে আম্বেদকরের মূর্তির নিচে চলে অবস্থান বিক্ষোভও।
[টানা বর্ষণে বিপর্যস্ত কলকাতা, বৈঠকখানা বাজারে বাড়ি ভেঙে মৃত ২]
যাদবপুরের পথে হেঁটেই দাবি আদায় করলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ারাও। হস্টেলের দাবিতে ১৪ দিন ধরে আমরণ অনশন করছিলেন ডাক্তারির পড়ুয়ারা। আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, এখন যে হস্টেলে তাঁরা থাকেন, সেই হস্টেলটির বেহাল দশা। নতুন ভবনে তাঁদের থাকতে দিতে হবে। কিন্তু, এমসিআই নিয়মের দোহাই হয়ে ডাক্তারির সিনিয়র পড়ুয়াদের নতুন ভবনে থাকতে দিতে রাজি হচ্ছিল না কলেজ কাউন্সিল। ফলে অচলাবস্থা তৈরি হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিরোধী দলের বিধায়ক, এমনকী, বুদ্ধিজীবীরাও। রবিবার মেডিক্যাল অচলাবস্থা কাটাতে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন বাম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী। সোমবার বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বের পর মেডিক্যাল পড়ুয়াদের অনশনের প্রসঙ্গ তোলেন কংগ্রেস ও বাম বিধায়করা। অধিবেশনে বিবৃতি দেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, এমসিআইয়ের নিয়মে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের আলাদা হস্টেলে রাখতে হয়। স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান হস্টেলের বিষয়ে কলেজ কাউন্সিলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। সরকারের এক্ষেত্রে কিছু করার নেই। তবে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য মেডিক্যাল কলেজে গিয়েছিলেন। পড়ুয়ারা প্রতীকী অনশন করছেন। মন্ত্রীর এই বিবৃতির পর উত্তাল হয়ে ওঠে বিধানসভা। অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করে বিধানসভার বাইরে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন পড়েন কংগ্রেস ও বাম বিধায়করা।
এদিকে বিধানসভায় যখন বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বিরোধীরা, তখন আন্দোলনকারীদের নিয়ে বৈঠকে বসেন মেডিক্যাল কলেজ কাউন্সিলের সদস্যরা। বৈঠকে তাঁদের দাবি মেনে নেওয়া হয়। কলেজ কাউন্সিল জানিয়েছে, আপাতত নতুন ভবনের দুটি তলায় থাকতে দেওয়া হবে পড়ুয়াদের। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলবে নতুন হস্টেল তৈরির কাজও। কাজ শেষ হলে সেই হস্টেলে পড়ুয়াদের স্থানান্তরিত করা হবে। শুধু তাই নয়, দখলদার মুক্ত করা সারানো হবে পুরনো হস্টেলটিও। লিখিত আশ্বাস পেয়ে অনশন প্রত্যাহার করে নেন মেডিক্যালের পড়ুয়ারা। শুরু হয়ে যায় আবির খেলা।
দেখুন ভিডিও:
[ কালীঘাট মন্দিরের সামনে ১০ টাকার বখরা নিয়ে রক্তারক্তি কাণ্ড, গুরুতর জখম বৃদ্ধা]