সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিমানের ককপিটে বসে প্রথমবার যখন স্বপ্নের উড়ান ভরেছিলেন তখন দেশে ব্রিটিশ শাসন। তারপর থেকে সময় পেরিয়ে গিয়েছে স্রোতের মতো। শত্রু বদলেছে, বদলেছে শাসক। তবে ককপিট, যন্ত্রের ঘড়ঘড়ানি ও শত্রু ঘাঁটিতে ঢুকে জবাব দেওয়ার প্রক্রিয়া বদলায়নি। এবার জীবন থেকে ছুটি নিলেন দেশের সবচেয়ে প্রবীণ পাইলট দালিপ সিং মাজিথিয়া (Dalip Singh Majithia)। মঙ্গলবার উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) রুদ্রপুরে নিজের বাড়িতে মৃত্যু হল মাজির। দেশের সবচেয়ে প্রবীণ স্কোয়াড্রেন লিডারের মৃত্যুর সঙ্গে শেষ হল একটি যুগ।
২৭ জুলাই ১৯২০ সালে সিমলায় জন্ম দালিপ সিং মাজিথিয়ার। বন্ধু মহলে মাজি নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন তিনি। অবিভক্ত পাকিস্তানের লাহোরে বায়ুসেনার ট্রেনিং নিয়েছিলেন মাজিথিয়া। বায়ুসেনার কেরিয়ারে প্রথম পুরস্কার পেয়েছিলেন সেখানেই। মিলেছিল বেস্ট পাইলট পুরস্কার। ৫ অগাস্ট ১৯৪০ সালে ব্রিটেনের দুই ট্রেনারের সঙ্গে প্রথমবার বিমানের ককপিটে বসেন তিনি। এর ঠিক ২ সপ্তাহ পর একা বিমান চালানোর ছাড়পত্র দেওয়া হয় মাজিকে। তখন তাঁর বয়স মাত্র ২০। এরপর থেকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি মাজিকে। সময়টা তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের। বিশ্বের বায়ুসেনার ইতিহাসে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং সময় ছিল এই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। সেখানেই মিলেছিল একের পর এক সাফল্য। শত্রু শিবিরে ঢুকে গুড়িয়ে দিয়েছেন একের পর এক শত্রু ঘাঁটি।
[আরও পড়ুন: মমতার উত্তরসূরি কি অভিষেক? মুখ খুললেন তৃণমূল সুপ্রিমো]
কাজের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতার জন্য গোটা কর্ম জীবনে পেয়েছিলেন অসংখ্য সম্মান পেয়েছেন স্কোয়াড্রেন লিডার মাজিথিয়া। নিজের কর্মজীবনে উড়িয়েছেন হ্যারিকেন, স্পাইট ফায়ারস-এর মতো অজস্র বিমান। জানা যায়, একের পর এক মিশনকে নেতৃত্ব দিয়ে ১৩ ধরনের বিমানে ১১০০ ঘন্টার বেশি বিমান উড়িয়েছেন এই পাইলট। ১৯৪৭ সালে দেশের স্বাধীনতার সঙ্গেই অবসর নেন মাজি। যদিও তাঁর বিমান ওড়ানোর প্রতি ভালোবাসা জারি ছিল ১৯ জানুয়ারি ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত।
[আরও পড়ুন: গোয়া নির্বাচনে ছিলেন আপের আর্থিক দায়িত্বে, লোকসভা ভোটের আগে ইডির হাতে গ্রেপ্তার সেই চনপ্রীত]
তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এক্স হ্যান্ডেলে তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, "স্কোয়াড্রন লিডার দালিপ সিং মাজিথিয়ার কর্মজীবন এবং বীরত্ব অনুকরণযোগ্য। তিনি দেশের সেবা ও দেশের প্রতি নিজেকে উৎসর্গের সর্বোচ্চ উদাহরণ। তাঁর মৃত্যু ভারতীয় বায়ুসেনার জন্য এক বিশাল ক্ষতি। তাঁর অবদান সর্বদা অনুপ্রেরণার হয়ে থাকবে। ওঁর পরিবার ও প্রিয়জনদের প্রতি সমবেদনা। তাঁর আত্মার শান্তি প্রার্থনা করি।"