সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গণধর্ষণের ঘটনায় দ্রুত কড়া শাস্তির পক্ষে সওয়াল করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অন্যদিকে তাঁরই লোকসভা কেন্দ্র বারাণসীতে এক ছাত্রীকে গণধর্ষণে অভিযুক্ত বিজেপির দুই নেতা মুক্তি পেয়ে গেলেন জামিনে। শুধু তাই নয়, গ্রেপ্তারের ৭ মাস পর জেল থেকে তাঁরা বের হতেই, ফুল-মালা দিয়ে রীতিমতো বরণ করে নেওয়া হল তাঁদের।
গত বছর বারাণসীর আইআইটি-বিএইচইউয়ের এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল বিজেপির আইটি সেলের একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধে। এই সদস্যদের একাধিক ছবি সোশাল মিডিয়ায় রীতিমতো ভাইরাল হয়। যেখানে দেখা যায়, নরেন্দ্র মোদি, যোগী আদিত্যনাথ, বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার মতো নেতাদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তাঁরা। যে তিন জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে তাঁরা হলেন কুণাল পাণ্ডে, অভিষেক চৌহান ও সক্ষম প্যাটেল। ঘটনার পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া তো দূর, তাঁদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় মধ্যপ্রদেশে ভোট প্রচারে। যদিও পরে প্রবল চাপের মুখে তাঁদের গ্রেপ্তার করতে বাধ্য হয় পুলিশ।
[আরও পড়ুন: ‘মানবতার লজ্জা’, আরজি কর কাণ্ডে আইনজীবী সিব্বলকে তোপ ধনকড়ের]
জানা যাচ্ছে, গত ২ জুলাই এলাহাবাদ হাইকোর্ট প্রথমে অভিষেক ও পরে কুণালকে জামিন দেয়। আদালতে সরকারি আইনজীবী তাঁদের বিরুদ্ধে তেমন কোনও তথ্যপ্রমাণ দিতে না পারায় হাই কোর্ট অভিযুক্তদের জামিন মঞ্জুর করে। এর পর অভিযুক্তদের জামিন খারিজের জন্য কোনও আইনি চেষ্টাই করেনি যোগী সরকার। ফলে ২৯ আগস্ট জেল থেকে মুক্তি পায় তাঁরা। গণধর্ষণে অভিযুক্তরা ছাড়া পেতেই জেলের বাইরে ফুল-মালায় তাঁদের অভ্যর্থনা জানাতে দেখা যায় বিজেপি নেতাদের। যা দেখে অতীতে বিলকিস বানোর মামলায় অপরাধীদের অভ্যর্থনার ছবির সঙ্গে মিল খুঁজে পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
[আরও পড়ুন: ‘আসনা’র প্রভাবে ব্যাপক বৃষ্টি অন্ধ্র-তেলেঙ্গানায়, মৃত অন্তত ২৪, বাতিল শতাধিক ট্রেন]
এদিকে ধর্ষণে অভিযুক্তের এমন রাজকীয় অভ্যর্থনার ঘটনায় সরব হয়েছে বিরোধী শিবির। মহিলাদের নিরাপত্তা ও সম্মানের প্রশ্নে নরেন্দ্র মোদি, যোগী আদিত্যনাথরা দ্বিচারিতা করছেন বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে। এই ঘটনায় কংগ্রেস নেতা অজয় রাই বলেন, 'অন্য ক্ষেত্রে যোগী সরকার অভিযুক্তদের বাড়িতে বুলডোজার চালায়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বিজেপি ধর্ষকদের ফুল-মালা দিয়ে স্বাগত জানিয়েছে।' পাশাপাশি সপা প্রধান অখিলেশ যাদব বলেন, 'আদালতে সরকারের তরফে যে দুর্বল সওয়াল করা হয়েছে, তার পিছনে কার চাপ ছিল? অভিযুক্তরা শুধু ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে তা-ই নয়, বিজেপি তাদের ফুল-মালায় স্বাগত জানাচ্ছে।' তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন বলেন, 'আরএসএস নিজের সংগঠনে মহিলাদের প্রবেশাধিকার দেয় না। বিজেপি-আরএসএস মহিলাদের সমস্যা কী বুঝবে? তাই ধর্ষকদের জামিন নিয়ে উল্লাস করছে।'