সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সনাতন ধর্ম নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যে নিন্দামন্দ কম হয়নি, সুপ্রিম কোর্ট অবধি গড়িয়েছে মামলা। যদিও নিজের অবস্থান থেকে সরতে রাজি নন স্ট্যালিনপুত্র তামিলনাড়ুর উপমুখ্যমন্ত্রী উদয়নিধি। মঙ্গলবার তিনি জানিয়ে দিলেন, "আমি কলাইনারের (এম করুণানিধি) নাতি। ক্ষমা চাইব না।" তাঁর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন উদয়নিধি।
গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে উদয়নিধি স্ট্যালিন মন্তব্য করেছিলেন, "আমাদের প্রথম কাজ বিরোধিতা নয়, সনাতন ধর্মের আদর্শকে মুছে ফেলা। সনাতন প্রথা সামাজিক ন্যায় ও সাম্যের বিরোধী।" সোমবার উদয়নিধি জানান, তিনি পেরিয়ার, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিএন আন্নাদুরাই এবং এম করুণানিধির মতো দ্রাবিড় নেতাদের মতকেই নতুন করে তুলে ধরেছেন। বলেন, "নারী শিক্ষায় নিষেধাজ্ঞা, কার্যত তাঁদের গৃহবন্দি রাখা হয়। স্বামীর মৃত্যু হলে তাঁদেরকেও মরতে হবে। পেরিয়ার এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিলেন। আমি পেরিয়ার, আন্নাদুরাই, কলাইনারের প্রতিধ্বনি করেছি।"
গত সেপ্টেম্বরে সনাতন ধর্মের আদর্শকে মুছে ফেলা, সনাতন প্রথা সামাজিক ন্যায় ও সাম্যের বিরোধী বলার পাশাপাশি উদয়নিধি মন্তব্য করেন, করোনা, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গির বিরোধিতা নয়, তাদের নিশ্চিহ্ন করা দরকার, তেমনই সনাতন আদর্শকেও মুছে ফেলা দরকার। উদয়নিধির এই বক্তব্য নিয়েই তোলপাড় শুরু হয় গোটা দেশে। হিন্দুত্ববাদীদের বক্তব্য, পেরিয়ারের রাজনীতির সুরেই কথা বলে সনাতন ধর্মকে অপমান করেছেন উদয়নিধি।
বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেন খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সরাসরি ইন্ডিয়া-জোটকে হিন্দু-বিরোধী বলে দাগিয়ে দেন। নির্বাচনী প্রচারে সনাতন মন্তব্য নিয়ে তোপ দাগেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। একাধিক রাজ্যে উদয়নিধির বিরুদ্ধে মামলা হয়। তখনই ডিএমকে নেতা বলেছিলেন, "আমার কথার ইচ্ছাকৃত ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে। সনাতন প্রথার বিরুদ্ধে বলেছি মানে এই নয় যে, গণহত্যার কথা বলেছি। সনাতন প্রথা যুগ যুগ ধরে জাতপাত, ধর্মের বেড়াজালে রেখে দলিত ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণিকে পায়ের নিচে রেখেছে। একে নিশ্চিহ্ন না করলে মানুষের সার্বিক উন্নতি সম্ভব নয়। আমি আমার বক্তব্য থেকে সরছি না।"
সোমবার ফের উদয়নিধি জানিয়ে দিলেন, "আমার বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে। শুধু তামিলনাড়ুতে নয়, গোটা দেশে আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, আমাকে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে। কিন্তু এই বিষয়ে আমি অনড়। আমি কলাইনারের নাতি, ক্ষমা চাইব না।"