সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আর জি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে যৌন নির্যাতন ও খুনের ঘটনায় উত্তাল গোটা দেশ। জরুরি পরিষেবা প্রদান ছাড়া কর্মবিরতিতে নেমেছেন দেশের চিকিৎসকরা। এহেন পরিস্থিতির মাঝেই এবার চিকিৎসকদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তার আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (IMA)। প্রধানমন্ত্রীর কাছে একাধিক দাবি জানানো হয়েছে চিকিৎসকদের তরফে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, বিমানবন্দরের ধাঁচে নিরাপত্তা প্রদান করা হোক হাসপাতালগুলিতে।
আর জি কর কাণ্ডে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠিতে আইএমএ লিখেছে, 'গত ৯ আগস্ট কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে চেস্ট মেডিসিন বিভাগের এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এই নৃশংস ঘটনা চিকিৎসা জগতের পাশাপাশি গোটা দেশের আত্মাকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এর পর ১৫ আগস্ট রাতে বিশাল ভিড় হামলা চালায় হাসপাতালে। যেখানে চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়েছিল সেই জায়গার পাশাপাশি হাসপাতালের একাধিক জায়গায় ভাঙচুর চালানো হয়। পেশার দায়বদ্ধতার কারণে চিকিৎসকদের পাশাপাশি হামলার শিকার হচ্ছেন মহিলা চিকিৎসকরা। ফলে হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হোক।'
[আরও পড়ুন: ভোটের মুখে হেমন্তের সঙ্গ ছেড়ে বিজেপিতে চম্পাই! জল্পনার মধ্যেই মুখ খুললেন ঝাড়খণ্ডের ‘বাঘ’]
এই মর্মেই প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে দাবি জানানো হয়েছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের তরফে যেগুলি হল, ১. দেশের সব হাসপাতালের নিরাপত্তা বিমানবন্দরের ধাঁচে গড়ে তোলা হোক। ২. চিকিৎসকদের নিরাপত্তা অধিকারকে গুরুত্ব দিয়ে বাধ্যতামূলকভাবে হাসপাতালগুলিকে নিরাপদ অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলা হোক। হাসপাতালে সিসিটিভি ক্যামেরা, নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েনের পাশাপাশি সকলকে নিরাপত্তাবিধি মেনে চলার ব্যবস্থা করতে হবে। ৩. কোনও রকম অবসর ছাড়া টানা ৩৬ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করতে হয় চিকিৎসকদের। আবাসিক চিকিৎসকদের হাসপাতালে থাকার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থার করা হোক। ৪. কোনও অপরাধ ঘটলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তদন্তের মাধ্যমে ন্যায়বিচার দিতে হবে। ৫. নির্যাতিতার শোকাহত পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
[আরও পড়ুন: শিক্ষকের লালসার শিকার! চিকিৎসা চলাকালীন যোগীরাজ্যে মৃত ধর্ষিতা কিশোরী]
পাশাপাশি চিঠিতে আরও লেখা হয়েছে, এই বিষয়গুলিকে গুরুত্ব দিয়ে হাসপাতালে তা বাস্তবায়িত করলে মহিলা চিকিৎসকরা তাঁদের কর্মস্থলে আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবেন। কারণ সারা দেশে ৬০ শতাংশ চিকিৎসক মহিলা। দন্ত চিকিৎসায় ৬৮ শতাংশ, ফিজিও থেরাপিতে ৭৫ শতাংশ এবং নার্সিংয়ে ৮৫ শতাংশ মহিলা কর্মরত। স্বাস্থ্যপরিষেবায় যারা কর্মরত তাঁদের জন্য কর্মক্ষেত্রে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ এবং নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা একান্ত প্রয়োজন। আমাদের দাবি পূরণের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে আমরা আপনার হস্তক্ষেপের আবেদন জানাচ্ছি।