দেব গোস্বামী, বোলপুর: বীরভূমের (Birbhum) রাজনীতি থেকে সত্যিই কি তবে মুছে যাচ্ছেন অনুব্রত মণ্ডল? গত বছর গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের (CBI) হাতে গ্রেপ্তারের পরই সে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। এবার তা আরও জোরদার হল নানুরে অঞ্চল তৃণমূলের কার্যালয় থেকে অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal)নাম, ছবি মুছে ফেলার ঘটনায়। শুক্রবার নানুরের হোসেনপুর ন-নগর কড্ডা তৃণমূলের পার্টি অফিসে গিয়ে দেখা গেল, সেখান থেকে জেলা তৃণমূল সভাপতির নাম ও ছবি মুছে ফেলা হয়েছে।
একটা সময় বলা হতো, অনুব্রত মণ্ডলের নির্দেশ ছাড়া বীরভূমে একটা পাতাও গাছ থেকে পড়ে না। সেই অনুব্রতই প্রায় ১ বছর ধরে তিহার জেলে (Tihar jail) বিচারাধীন বন্দি হয়ে রয়েছেন। বোলপুরে (Bolpur) অনুব্রত যে বাড়িতে সকাল থেকে রাত, শুধুই ভিড় জনস্রোত নজরে আসত সেসব এখন উধাও। ধীরে ধীরে তাঁর ‘অনুরাগী’রা দূরত্ব বাড়িয়েছেন বীরভূম জেলা কার্যালয় থেকেও। বর্তমানে বীরভূম জেলা সভাধিপতি কাজল শেখের গড়ে অনুব্রত মণ্ডলের একের পর এক ছবি দলীয় কার্যালয় থেকে মুছে ফেলায় গুঞ্জন তৈরি হয়েছে। তবে কি তাঁকে ছেঁটে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু হল? প্রশ্ন উঠছে।
[আরও পড়ুন: বারবার তলবে অভিষেককে হেনস্তা! ইডির বিরুদ্ধে কি এবার পালটা আইনি পথের ভাবনা?]
নানুরের একাধিক অঞ্চলের দলীয় কার্যালয় থেকে হঠাৎই উধাও দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ছবি। বীরভূমের রাজনীতিতেও কি অনুব্রত আর আছেন? বিশেষ করে পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের জয়ের পরে? জেলবন্দি অনুব্রতকে ‘সচেতন’ ভাবে ‘মুছে’ ফেলতে চাইছে দল। এমন অভিযোগও করছেন অনুব্রত-ঘনিষ্ঠদের কয়েক জন। কারণ, একে তো পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের জয়। তারপরে দলের অনুষ্ঠানেও বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের। অনুব্রত প্রসঙ্গে চর্চাও ফের প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে জেলায়।
[আরও পড়ুন: Kunal Ghosh: স্পেনের পর আমেরিকা, ফের কুণাল ঘোষকে বিদেশ সফরের অনুমতি দিল হাই কোর্ট]
যদিও এ বিষয়ে নানুরের তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, ”বিষয়টি স্পষ্টভাবে আমার জানা নেই। তবে এমনও হতে পারে, পুজোর আগে আমাদের কথা আছে রং করে নতুন করে দলীয় কার্যালয় গুলি সাজানো। অবশ্যই বিষয়টি নিয়ে দলীয় স্তরে খোঁজখবর নেওয়া হবে।” অন্যদিকে, বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরার বক্তব্য, ”এতে অবাক হবার কিছুই নেই। অনুব্রত মণ্ডলের বিরোধী শিবিরই এখন বর্তমানে তৃণমূল চালাচ্ছেন, কাজল শেখের মতো লোকজনকে তিনি একসময় দমিয়ে রেখেছিলেন, কোণঠাসা করেছিলেন, উঠতে দেননি। তিনি এখন জেলে। স্বাভাবিকভাবেই জেলায় নিজেই ছবি হয়ে উঠেছেন।” অনুব্রত মণ্ডলের ভিটে নানুর। আর সেই নানুরের তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয় থেকে মুছে ফেলা হল অনুব্রত মণ্ডলের ছবি ও নাম! বিতর্ক তৈরি হয়েছে ইতিমধ্যে।