সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রেসিডেন্টের পর পার্লামেন্ট। মালদ্বীপে (Maldives) ফের জয়জয়কার চিনপন্থী মহম্মদ মুইজ্জুর। নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পরেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি ভারতের সঙ্গে দ্বীপরাষ্ট্রের সম্পর্কে আরও অবনতি হতে চলেছে? তাহলে কি মালদ্বীপকে কাজে লাগিয়ে ভারত মহাসাগরীয় এলাকায় ফের শক্তিশালী হয়ে উঠবে চিন? যাবতীয় সমস্যাকে উপেক্ষা করে মালদ্বীপের জনতা যেভাবে মুইজ্জুর দলকে ভোট দিয়েছেন, তাতে চিন্তার ভাঁজ পড়তে পারে নয়াদিল্লির কপালে।
মালদ্বীপ পার্লামেন্টের ৮৬টি আসনের মধ্যে ৬৬টিই গিয়েছে মুইজ্জুর দল পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেসের দখলে। মালদ্বীপের নিয়ম অনুযায়ী, দেশের প্রেসিডেন্ট একা কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। পার্লামেন্টের অনুমোদন নিতে হয় তাঁকে। তাই গত সেপ্টেম্বরে নির্বাচিত হওয়া প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু এবার থেকে নিজের সমস্ত সিদ্ধান্তেই পার্লামেন্টের সমর্থন পাবেন, সেকথা বলাই বাহুল্য। যদিও এতদিন পর্যন্ত মালদ্বীপের পার্লামেন্ট ছিল ভারতপন্থী ইব্রাহিম মহম্মদ সোলির দলের দখলে। তাদের চাপে একাধিক সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে পারেন না মুইজ্জু। বরং পার্লামেন্টের চাপে পড়ে তিন মন্ত্রীকে বরখাস্তও করতে হয়েছে তাঁকে।
[আরও পড়ুন: সিএএ কার্যকর হলে লঙ্ঘিত হবে ভারতীয় সংবিধান! চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট মার্কিন কংগ্রেসে]
কিন্তু পার্লামেন্টে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে 'পথের কাঁটা' উপড়ে ফেললেন মুইজ্জু। ফলে তাঁর ভারত বিরোধিতার পথ আরও প্রশস্ত হয়ে গেল বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের। মুইজ্জু প্রেসিডেন্ট পদে বসেই ভারতীয় সেনাকে ‘বিতাড়ন’ করার সিদ্ধান্ত নেন। পার্লামেন্টের বিরোধিতা সত্ত্বেও সেনা সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন তিনি। তবে ভারতের তরফে জানানো হয়, দীর্ঘ সময় ধরে সেদেশে মানবিক সহায়তা করে এসেছে সেনা। একাধিকবার ভারতীয় সেনার হেলিকপ্টার ব্যবহার করে দুর্গতদের উদ্ধার করা হয়েছে। তাই সেনা জওয়ানরা সরে গেলেও সমসংখ্যক প্রযুক্তিবিদদের সেদেশে পাঠাবে ভারত (India)। কিন্তু চিনপন্থী মুইজ্জু কি সেই প্রস্তাব এখনও কার্যকর রাখবেন? প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।
লাগাতার ভারত বিরোধিতার মধ্যেই চিনের দিকে আরও বেশি করে ঝুঁকেছেন মুইজ্জু। প্রেসিডেন্ট হয়েই চিন (China) সফরে গিয়েছিলেন। তার পরেই মালদ্বীপকে বিনামূল্যে সামরিক সহায়তা দেওয়ার চুক্তি সই করে চিন। দেশে পার্লামেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগেই দেশের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো গড়তে চিনা সংস্থাগুলোকে বরাত দেন মুইজ্জু। ফলে আগামী দিনে ভারত নয়, চিনের সঙ্গেই একজোট হবে মালদ্বীপ, সেই সম্ভাবনাই প্রবল। মালদ্বীপকে কাজে লাগিয়ে ভারত মহাসাগরীয় এলাকায় ড্রাগনের আস্ফালন বাড়তে পারে, এবং তার জেরে বিঘ্নিত হতে পারে আঞ্চলিক স্থিতাবস্থা। যদিও দিন কয়েক আগে ভারতকে 'ঘনিষ্ঠতম বন্ধু' বলে ঋণ মকুবের আর্জি জানিয়ছিলেন মুইজ্জু। কিন্তু ভারতকে আর বেশিদিন বন্ধু বলে ভাবতে পারবেন তিনি? রয়েছে প্রশ্ন।