সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছোট থেকে স্বপ্ন ছিল আকাশে ওড়ার। ইচ্ছা ছিল আকাশে ভেসে কিছু করার। আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দেওয়া তো আর মুখের কথা নয়। তবে কথায় বলে, ইচ্ছাশক্তির কাছে সমস্ত বাধাই যেন তুচ্ছ। তাই আদিবাসী তরুণী হওয়া সত্ত্বেও স্বপ্ন সফল করে ককপিটে জায়গা করে নিল ওড়িশার মালকানগিরির অনুপ্রিয়া।
[আরও পড়ুন: ক্যারি ব্যাগের জন্য অতিরিক্ত মূল্য! বাটার পর জরিমানা বিগ বাজারকেও]
অনুপ্রিয়ার বাবা মরিনিবাস লাকরা। ওড়িশা রাজ্য পুলিশের কর্মী তিনি। তিন সন্তানকে নিয়েই সংসার তাঁর। মেয়েকে নিজের পায়ে দাঁড় করানোর জন্য বরাবর চেষ্টা করে গিয়েছেন অনুপ্রিয়ার বাবা। সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েকে ইংরাজি মাধ্যম স্কুলে পড়িয়েছেন তিনি। এরপর সেমিলিগুড়ায় ভরতি করে দেন অনুপ্রিয়াকে। বরাবরের মেধাবী ছাত্রী ভুবনেশ্বরে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে যান। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মন যে ছিল না মেয়ের। আকাশে ওড়ার হাতছানি এড়াতে পারেননি অনুপ্রিয়া। তাই তো মাঝপথেই ছেড়ে দেন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়াশোনা। ২০১২ সালে তিনি ভুবনেশ্বরের এক প্রতিষ্ঠানে বিমান চালানোর প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন।
কঠোর পরিশ্রমের পরই মিলল সুখবর। একটি বেসরকারি বিমান সংস্থায় বিমানচালক হিসাবে নিযুক্ত হয়েছেন অনুপ্রিয়া। এই খবরে বেজায় খুশি ওই তরুণী।
অনুপ্রিয়ার বাবা, মা, পরিজন, প্রতিবেশী সকলের মধ্যেই যেন উৎসবের মেজাজ। ঘরের মেয়ে সাফল্যে আপ্লুত তাঁরা। একগাল চওড়া হাসি মুখে অনুপ্রিয়ার বাবা মরিনিবাস বলেন, ‘‘মেয়ের জন্য আমি অত্যন্ত গর্বিত। ছোটবেলা থেকেই ও আকাশ ছুঁতে চাইত। আজ সেই লক্ষ্যে সফল হয়েছে। কঠোর পরিশ্রম এবং ওর মায়ের সমর্থন ছাড়া এটা সম্ভব হত না।’’
[আরও পড়ুন: উত্তপ্ত নিয়ন্ত্রণরেখায় পাক সেনার ঘাঁটি ধ্বংস করল ভারতীয় সেনা]
মেয়ের স্বপ্নপূরণের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করেছেন মা। কিন্তু ছাপোষা গৃহবধূ মা জিমাজ কোনওদিন বিমান দেখেননি। মেয়ের সাফল্যে কেঁদেই ফেলেছেন তিনি। ছলছলে চোখ নিয়ে বলেন, ‘‘আমাদের খুব অর্থকষ্টে ভুগতে হয়েছে। তবে তা বলে সন্তানদের পড়াশোনা কখনও বন্ধ রাখিনি। মেয়েকে লক্ষ্যপূরণের জন্য সবরকম সাহায্য করেছি।’’ আপাতত অভিনন্দনের জোয়ারে ভাসছেন স্বপ্নজয়ী অনুপ্রিয়া। সফল আদিবাসী তরুণীকে টুইটে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক।
The post আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্নপূরণ, প্রথম আদিবাসী মহিলা পাইলট অনুপ্রিয়া appeared first on Sangbad Pratidin.